ঢাকা ০২:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আরজু: দেশপ্রেম ও মানবতার এক উজ্জ্বল প্রতীক

বাংলার খবর ডেস্ক

দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে যারা জীবন বাজি রেখে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের একজন ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম আরজু। হবিগঞ্জের সুরমা গ্রামের এই মহান সন্তান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশকে স্বাধীন করতে রেখেছেন অসামান্য ভূমিকা। তাঁর সাহস, ত্যাগ ও দেশপ্রেম আজও প্রেরণার উৎস হয়ে আছে প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে।

স্বাধীনতার পর তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেন জাতি গঠনের মহৎ কাজে— শিক্ষকতা পেশায়। শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলাই ছিল তাঁর জীবনের লক্ষ্য। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে তিনি ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, শৃঙ্খলাবান ও আদর্শবান শিক্ষক। তাঁর পাঠদান কেবল পাঠ্যপুস্তকেই সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং তিনি শিক্ষার্থীদের শেখাতেন মানবতা, সততা ও দেশপ্রেমের মূল্যবোধ।

ব্যক্তিজীবনে শফিকুল ইসলাম আরজু ছিলেন এক সফল ও স্নেহশীল পিতা। তাঁর সন্তানরাও সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পিতার আদর্শ অনুসরণ করে চলেছেন। বড় ছেলে আশরাফুজ্জামান আশিক বর্তমানে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে কর্মরত আছেন, ছোট ছেলে তারেকুজ্জামান একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে মানুষের সেবায় নিবেদিত। তাঁর মেয়েরাও নিজেদের কর্মক্ষেত্রে সফলভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।

তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল দেশ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। শিক্ষাক্ষেত্রে যেমন তিনি ছিলেন আলোর দিশারি, তেমনি পারিবারিক জীবনে ছিলেন অনুকরণীয় এক পিতা। সহকর্মী, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ও এলাকার মানুষ আজও তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে করোনাকালীন সময়ে তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর মৃত্যুতে শিক্ষা পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা সমাজ ও এলাকাবাসী গভীরভাবে শোকাহত হয়। তবে তাঁর কর্ম, আদর্শ ও দেশপ্রেম আজও বেঁচে আছে তাঁর গড়ে তোলা প্রজন্মের হৃদয়ে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আরজু ছিলেন একাধারে শিক্ষক, দেশপ্রেমিক ও মানবতার সৈনিক। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় প্রমাণ করে— সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা কেবল যুদ্ধক্ষেত্রেই নয়, সমাজ গঠনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশকে ভালোবাসেন এবং জাতির জন্য রেখে যান অনন্ত প্রেরণার দৃষ্টান্ত।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

জনপ্রিয় সংবাদ
error:

বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আরজু: দেশপ্রেম ও মানবতার এক উজ্জ্বল প্রতীক

আপডেট সময় ০২:০৫:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

বাংলার খবর ডেস্ক

দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে যারা জীবন বাজি রেখে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের একজন ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম আরজু। হবিগঞ্জের সুরমা গ্রামের এই মহান সন্তান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশকে স্বাধীন করতে রেখেছেন অসামান্য ভূমিকা। তাঁর সাহস, ত্যাগ ও দেশপ্রেম আজও প্রেরণার উৎস হয়ে আছে প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে।

স্বাধীনতার পর তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেন জাতি গঠনের মহৎ কাজে— শিক্ষকতা পেশায়। শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলাই ছিল তাঁর জীবনের লক্ষ্য। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে তিনি ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, শৃঙ্খলাবান ও আদর্শবান শিক্ষক। তাঁর পাঠদান কেবল পাঠ্যপুস্তকেই সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং তিনি শিক্ষার্থীদের শেখাতেন মানবতা, সততা ও দেশপ্রেমের মূল্যবোধ।

ব্যক্তিজীবনে শফিকুল ইসলাম আরজু ছিলেন এক সফল ও স্নেহশীল পিতা। তাঁর সন্তানরাও সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পিতার আদর্শ অনুসরণ করে চলেছেন। বড় ছেলে আশরাফুজ্জামান আশিক বর্তমানে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে কর্মরত আছেন, ছোট ছেলে তারেকুজ্জামান একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে মানুষের সেবায় নিবেদিত। তাঁর মেয়েরাও নিজেদের কর্মক্ষেত্রে সফলভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।

তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল দেশ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। শিক্ষাক্ষেত্রে যেমন তিনি ছিলেন আলোর দিশারি, তেমনি পারিবারিক জীবনে ছিলেন অনুকরণীয় এক পিতা। সহকর্মী, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ও এলাকার মানুষ আজও তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে করোনাকালীন সময়ে তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর মৃত্যুতে শিক্ষা পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা সমাজ ও এলাকাবাসী গভীরভাবে শোকাহত হয়। তবে তাঁর কর্ম, আদর্শ ও দেশপ্রেম আজও বেঁচে আছে তাঁর গড়ে তোলা প্রজন্মের হৃদয়ে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আরজু ছিলেন একাধারে শিক্ষক, দেশপ্রেমিক ও মানবতার সৈনিক। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় প্রমাণ করে— সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা কেবল যুদ্ধক্ষেত্রেই নয়, সমাজ গঠনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশকে ভালোবাসেন এবং জাতির জন্য রেখে যান অনন্ত প্রেরণার দৃষ্টান্ত।