
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, চুরি করে পালাতে বাধা দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
বুধবার ঝালকাঠির নলছিটি এলাকা থেকে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আয়েশা নরসিংদী সদর থানার সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে। সাভারের হেমায়েতপুর পূর্বহাটিতে স্বামী রাব্বি সিকদারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।
তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘটনার পর থেকেই একাধিক টিম সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। প্রথমে তার বর্তমান বাসা শনাক্ত করা হয়, পরে পরিবারের সদস্যদের তথ্য নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আয়েশা নলছিটিতে দাদা শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছে। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বামী রাব্বিকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানায়—এক দিন আগে বাসা থেকে কিছু মালামাল চুরি হয়েছিল। পরদিন সে বের হতে গেলে গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজ তাকে বলেন, ‘তোমাকে চেক করবো, পুলিশ ডাকব।’ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আয়েশা এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে লায়লা আফরোজকে হত্যা করে। এরপর মেয়ে নাফিসা এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে। পরে বাসা থেকে দুটি ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই ল্যাপটপের একটি বিক্রি করেছে আয়েশা, অন্যটি উদ্ধার করা হয়েছে। মোবাইলটি সে পানিতে ফেলে দেয়। ঘটনার পেছনে আরও কোনো কারণ আছে কি না, তদন্তে তা বের করা হবে।
গত সোমবার শাহজাহান রোডের একটি বাসার সপ্তম তলায় মা-মেয়েকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। লায়লা আফরোজকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ, আর গুরুতর আহত নাফিসাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আ. জ. ম. আজিজুল ইসলাম গৃহকর্মী আয়েশার নামে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। সুরতহাল প্রতিবেদনে লায়লার দেহে অন্তত ৩০টি এবং নাফিসার দেহে ৬টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বাংলার খবর ডেস্ক : 
























