
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড থেকে হবিগঞ্জের মাধবপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা শুক্রবার ভোর থেকে সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়ে। রাত ২টা থেকে শুরু হওয়া তীব্র যানজট সকাল ৯টা পর্যন্তও স্বাভাবিক হয়নি। ঘন কুয়াশা, শীত আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাজারো যাত্রী।
আটকে থাকা যাত্রী আসিফ ইসলাম বলেন, “গাড়িতে শিশু আর বৃদ্ধ বাবা—সবাই ক্লান্ত। পানি নেই, খাবার নেই। ভোর চারটা থেকে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। এমন ভোগান্তি কখনও দেখিনি।” আরেক যাত্রী আশফাক জানান, কুয়াশা ও যানজট মিলিয়ে পুরো মহাসড়ক অচল হয়ে যায়। অনেক যাত্রী পায়ে হেঁটে এগোতে চাইলেও কিছুদূর গিয়ে আবারও একই যানজটে আটকে পড়েন।
স্থানীয়দের দাবি, গত পাঁচ–ছয় মাস ধরে নিয়মিতভাবে এ সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে গাড়ি থেমে থাকে। চলমান সংস্কারকাজ দ্রুত শেষের নির্দেশ দেওয়া হলেও দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি; বরং যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। অনেকেই বিকল্প হিসেবে ট্রেনে ভ্রমণের পরামর্শ দিলেও অতিরিক্ত ট্রেন বরাদ্দ এখনো দেওয়া হয়নি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে। শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, “রাতে খবর পেয়ে পুলিশ মাঠে নামে। অনেক চালকের বেপরোয়া ওভারটেকিং দুই লেনই বন্ধ করে দেয়। সকাল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, বিশ্বরোড–শিমরাইলকান্দি–মাধবপুর অংশে চলমান সংস্কারকাজে লেন সংকুচিত থাকে, আর কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কমলে চাপ বাড়লেই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
এদিকে দীর্ঘ যানজটে পণ্যবাহী ট্রাকচালকরা বিপাকে পড়েছেন। ট্রাকচালক বেনু মিয়া জানান, “৮–১০ ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় অনেকে আটকে আছেন। এতে নিত্যপণ্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।” পণ্য নষ্ট হয়ে গেলে পরিবহন ও ব্যবসায়ী উভয়েই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন চালকরা।
মাধবপুর থানার ওসি মাহবুব মুর্শেদ খান বলেন, দুপুরের পর যানবাহনের চাপ কিছুটা কমে এসেছে। “শুক্রবারে সবসময়ই মহাসড়কে চাপ বেশি থাকে। তবুও মহাসড়ক স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে।”
বাংলার খবর ডেস্ক : 
























