
পারভেজ হাসান লাখাই প্রতিনিধি:
লাখাই উপজেলা ঐতিহ্য ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের এক পরিচিত জনপদ। অলি-আউলিয়ার ওরস উপলক্ষে এ অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে আধ্যাত্মিক আলোচনা ও দোয়ার আয়োজন হয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অসাধু চক্রের কারণে এসব পবিত্র আয়োজন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। ওরসের নামে আয়োজিত মেলাগুলো ক্রমেই প্রকাশ্য জুয়া ও সামাজিক বিশৃঙ্খলার কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ওরসকে ঘিরে আয়োজিত বাউল গান, সার্কাস ও লটারির আড়ালে সংঘবদ্ধ জুয়া পরিচালিত হয়। এসব কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রায়ই গ্রামে গ্রামে মারামারি ও হানাহানির ঘটনা ঘটে। গত ১০ ডিসেম্বর মনতৈল কোনাবাড়ির ওরস উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় দিন-রাত জুয়া চলার অভিযোগ ওঠায় এলাকায় নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মীয় আয়োজন মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল।
সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো, ওরসের নামে আয়োজিত মেলাগুলোতে নারী-পুরুষের অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত রাতভর চলাচল সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর আড়ালে গড়ে উঠছে অবৈধ ব্যবসা ও নানা অনৈতিক কার্যক্রম, যা দ্রুত যুব সমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি, ওরসের নামে এ ধরনের মেলা বন্ধ করে বিশুদ্ধ ধর্মীয় পরিবেশে ওয়াজ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা উচিত। এতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় থাকবে এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলাও কমবে।
প্রশাসনের কাছে তাদের সুস্পষ্ট আবেদন—ভবিষ্যতে কোনো মেলা বা ওরসের অনুমোদন দেওয়ার আগে এলাকার অতীতের বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে কঠোর শর্ত আরোপ করতে হবে। জুয়া বা অনৈতিকতার ন্যূনতম সুযোগ রয়েছে এমন আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া উচিত নয়। যারা ওরসের নামে ধর্মীয় পরিবেশকে কলুষিত করে জুয়া ও অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
সচেতন মহলের মতে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নাগরিকদের নিয়ে নজরদারি কমিটি গঠন করে তদারকি জোরদার করা হলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। লাখাইয়ের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ওরসের নামে মেলার অপসংস্কৃতি বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় ভবিষ্যতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় শুধু আয়োজকদের নয়, প্রশাসনিক নজরদারির ঘাটতিকেও বহন করতে হবে।
বাংলার খবর ডেস্ক : 























