ঢাকা ১১:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মোস্তাফিজকে রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে নিলো কলকাতা Logo তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে বিএনপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা Logo মাধবপুরে স্পোর্টস মিনি নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন Logo ওরসের পবিত্রতা বনাম জুয়ার কালো থাবা — লাখাইয়ের শান্তির পথে কাঁটা Logo বানিয়াচং সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত, আহত ২ Logo মাধবপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ৫৪তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo হবিগঞ্জে ৫৫ বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ কোটি টাকার ভারতীয় চোরাচালানি পণ্য জব্দ Logo মাধবপুরে ব্যানার–পোস্টার অপসারণ: পৌরশহর ও ১১ ইউনিয়নে ফিরছে পরিচ্ছন্নতা Logo ৪০ পিস ইয়াবাসহ লাখাইয়ে আটক ১: মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে পুলিশ Logo মাধবপুরে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি

ওরসের পবিত্রতা বনাম জুয়ার কালো থাবা — লাখাইয়ের শান্তির পথে কাঁটা

পারভেজ হাসান লাখাই প্রতিনিধি:

লাখাই উপজেলা ঐতিহ্য ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের এক পরিচিত জনপদ। অলি-আউলিয়ার ওরস উপলক্ষে এ অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে আধ্যাত্মিক আলোচনা ও দোয়ার আয়োজন হয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অসাধু চক্রের কারণে এসব পবিত্র আয়োজন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। ওরসের নামে আয়োজিত মেলাগুলো ক্রমেই প্রকাশ্য জুয়া ও সামাজিক বিশৃঙ্খলার কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ওরসকে ঘিরে আয়োজিত বাউল গান, সার্কাস ও লটারির আড়ালে সংঘবদ্ধ জুয়া পরিচালিত হয়। এসব কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রায়ই গ্রামে গ্রামে মারামারি ও হানাহানির ঘটনা ঘটে। গত ১০ ডিসেম্বর মনতৈল কোনাবাড়ির ওরস উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় দিন-রাত জুয়া চলার অভিযোগ ওঠায় এলাকায় নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মীয় আয়োজন মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল।

সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো, ওরসের নামে আয়োজিত মেলাগুলোতে নারী-পুরুষের অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত রাতভর চলাচল সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর আড়ালে গড়ে উঠছে অবৈধ ব্যবসা ও নানা অনৈতিক কার্যক্রম, যা দ্রুত যুব সমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি, ওরসের নামে এ ধরনের মেলা বন্ধ করে বিশুদ্ধ ধর্মীয় পরিবেশে ওয়াজ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা উচিত। এতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় থাকবে এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলাও কমবে।

প্রশাসনের কাছে তাদের সুস্পষ্ট আবেদন—ভবিষ্যতে কোনো মেলা বা ওরসের অনুমোদন দেওয়ার আগে এলাকার অতীতের বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে কঠোর শর্ত আরোপ করতে হবে। জুয়া বা অনৈতিকতার ন্যূনতম সুযোগ রয়েছে এমন আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া উচিত নয়। যারা ওরসের নামে ধর্মীয় পরিবেশকে কলুষিত করে জুয়া ও অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

সচেতন মহলের মতে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নাগরিকদের নিয়ে নজরদারি কমিটি গঠন করে তদারকি জোরদার করা হলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। লাখাইয়ের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ওরসের নামে মেলার অপসংস্কৃতি বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় ভবিষ্যতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় শুধু আয়োজকদের নয়, প্রশাসনিক নজরদারির ঘাটতিকেও বহন করতে হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

জনপ্রিয় সংবাদ

মোস্তাফিজকে রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে নিলো কলকাতা

error:

ওরসের পবিত্রতা বনাম জুয়ার কালো থাবা — লাখাইয়ের শান্তির পথে কাঁটা

আপডেট সময় ০৮:১৯:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

পারভেজ হাসান লাখাই প্রতিনিধি:

লাখাই উপজেলা ঐতিহ্য ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের এক পরিচিত জনপদ। অলি-আউলিয়ার ওরস উপলক্ষে এ অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে আধ্যাত্মিক আলোচনা ও দোয়ার আয়োজন হয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অসাধু চক্রের কারণে এসব পবিত্র আয়োজন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। ওরসের নামে আয়োজিত মেলাগুলো ক্রমেই প্রকাশ্য জুয়া ও সামাজিক বিশৃঙ্খলার কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ওরসকে ঘিরে আয়োজিত বাউল গান, সার্কাস ও লটারির আড়ালে সংঘবদ্ধ জুয়া পরিচালিত হয়। এসব কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রায়ই গ্রামে গ্রামে মারামারি ও হানাহানির ঘটনা ঘটে। গত ১০ ডিসেম্বর মনতৈল কোনাবাড়ির ওরস উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় দিন-রাত জুয়া চলার অভিযোগ ওঠায় এলাকায় নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মীয় আয়োজন মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল।

সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো, ওরসের নামে আয়োজিত মেলাগুলোতে নারী-পুরুষের অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত রাতভর চলাচল সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর আড়ালে গড়ে উঠছে অবৈধ ব্যবসা ও নানা অনৈতিক কার্যক্রম, যা দ্রুত যুব সমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি, ওরসের নামে এ ধরনের মেলা বন্ধ করে বিশুদ্ধ ধর্মীয় পরিবেশে ওয়াজ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা উচিত। এতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় থাকবে এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলাও কমবে।

প্রশাসনের কাছে তাদের সুস্পষ্ট আবেদন—ভবিষ্যতে কোনো মেলা বা ওরসের অনুমোদন দেওয়ার আগে এলাকার অতীতের বিশৃঙ্খলা ও সংঘাতের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে কঠোর শর্ত আরোপ করতে হবে। জুয়া বা অনৈতিকতার ন্যূনতম সুযোগ রয়েছে এমন আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া উচিত নয়। যারা ওরসের নামে ধর্মীয় পরিবেশকে কলুষিত করে জুয়া ও অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

সচেতন মহলের মতে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নাগরিকদের নিয়ে নজরদারি কমিটি গঠন করে তদারকি জোরদার করা হলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। লাখাইয়ের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ওরসের নামে মেলার অপসংস্কৃতি বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় ভবিষ্যতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় শুধু আয়োজকদের নয়, প্রশাসনিক নজরদারির ঘাটতিকেও বহন করতে হবে।