
**বাংলার খবর ডেস্ক**
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার দুপুর ২টায় প্রথমবারের মতো একক জাতীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশ থেকেই দুটি বিষয়ে দলটি জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবে বলে জানা গেছে—এক, ২০২৪ সালের জুলাই গণহত্যার বিচার এবং দুই, পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি।
এটি জামায়াতের ইতিহাসে প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একক সমাবেশ। এর আগে বিভিন্ন জোটের অংশ হিসেবে কর্মসূচিতে অংশ নিলেও, দলীয়ভাবে কখনোই এমন উদ্যোগ নেয়নি দলটি।
জামায়াতের নেতারা জানিয়েছেন, সমাবেশটি হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জমায়েত। এতে উপস্থিত থাকবেন আমির ডা. শফিকুর রহমান, যিনি নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে রাজনৈতিক দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন। সমাবেশে আরও থাকবেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কর্মপরিষদ, শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের আমন্ত্রিত অতিথিরা।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঢাকা শহর ও আশপাশের জেলায় দৃষ্টিনন্দন তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। রয়েছে ছাউনি, মেডিকেল বুথ, বিশাল এলইডি মনিটর ও মঞ্চ। প্রায় ১৫ লাখ মানুষের উপস্থিতি আশা করছে দলটি। যানবাহনের জন্য ১০ হাজার বাস, কয়েকটি ট্রেন ও লঞ্চ ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
গতকাল শুক্রবারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, “১৫টি মেডিকেল বুথ, ৩৩টি এলইডি ডিসপ্লে, শতাধিক মাইক ও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও সফল সমাবেশে সবার সহযোগিতা চাই।”
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন উত্তেজনা বিরাজ করছে, তখন জামায়াত নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করতে চায় এই সমাবেশের মাধ্যমে। সাত দফা দাবি নিয়েই তারা এই বৃহৎ সমাবেশে অবতীর্ণ হয়েছে।
দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, নির্যাতন চলেছে। এখন সময় এসেছে রাজনীতির মাঠে আমাদের শক্তি জানান দেওয়ার।” তিনি আরও জানান, মঞ্চে একসঙ্গে ৩০০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দলের প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জামায়াতের সাত দফা দাবি হচ্ছে—
১. গণহত্যার বিচার
২. মৌলিক সংস্কার
৩. জুলাই সনদ বাস্তবায়ন
৪. শহীদ ও আহত পরিবার পুনর্বাসন
৫. পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন
৬. প্রবাসীদের ভোটাধিকার
৭. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত
আজকের এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন কোণঠাসা থাকা জামায়াত একটি নতুন অবস্থান নির্মাণ করতে চায়—যেখানে রাজনৈতিক, সাংগঠনিক এবং কৌশলগত দিক থেকে তারা নতুন চেহারায় হাজির হবে জনতার সামনে।