ঢাকা ০৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo পুলিশের জরুরি ঘোষণা Logo মাধবপুরে সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু Logo সাতছড়ির গাছপাচার ধামাচাপা দিতেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা! Logo নবীগঞ্জে নিহত সাব্বিরের পরিবারকে পুলিশ সুপারের উপহার সামগ্রী বিতরণ Logo ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে মাধবপুরে জশনে জুলুস পালিত Logo শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এমপি প্রার্থী হতে পারবেন না Logo মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান Logo হবিগঞ্জে ৫৫ বিজিবির অভিযানে প্রায় ৭৪ লক্ষ টাকার মাদক ও চোরাচালানী পণ্য জব্দ Logo মাধবপুরে দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা Logo মাধবপুরে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আটক

সাতছড়ির গাছপাচার ধামাচাপা দিতেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে কোটি টাকার সেগুন গাছ পাচারের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে এবার উল্টো চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ। সাতছড়ি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) চুনারুঘাট থানায় মামলাটি রেকর্ড করেন।

গত শনিবার দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক ও ওয়াইল্ডলাইফ এক্টিভিস্ট মুজাহিদ মসি এবং বাংলা টাইমসের প্রতিনিধি ত্রিপুরারী দেবনাথ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতছড়ি উদ্যানে গিয়ে সেগুন গাছ পাচারের প্রমাণ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় বন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে তারা হামলার শিকার হন। পরে সাংবাদিকরা থানায় মামলা করেন। ঘটনাটি তদন্তে নেমে বন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক গাছ কাটার সত্যতা পান এবং সাংবাদিকদের অভিনন্দন জানান।

কিন্তু এর পরেও বুধবার সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে নতুন মামলা দায়ের করা হয়।

বিতর্কিত এ মামলার খবরে হবিগঞ্জের বিভিন্ন প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাদের মতে, গাছ পাচারের খবর প্রকাশ করায় পুরস্কৃত হওয়ার বদলে সাংবাদিককে হয়রানি করা হচ্ছে।

সাংবাদিক মুজাহিদ মসি বলেন, “সেগুন গাছ পাচারের তথ্য ধামাচাপা দিতে তারা এই মামলা করেছে। আমার কাছে তাদের অপকর্মের আরও প্রমাণ আছে। সাংবাদিকের কলমের কাছে এই মিথ্যে অভিযোগ টিকবে না।”

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের নেতা ও আইনজীবী শাহ ফখরুজ্জামান বলেন, “মুজাহিদ মসি বন্যপ্রাণী সুরক্ষার পাশাপাশি সত্য তুলে ধরছেন। অথচ তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশ ও বন বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা ক্ষুণ্ণ হবে।”

অভিযুক্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, “ডিএফও স্যারের নির্দেশে মামলা দিয়েছি। সীমিত জনবল দিয়ে বিশাল বন রক্ষা করা কঠিন। কিছু সেগুন গাছ চুরি হলে তা আমাদের অজান্তেও হতে পারে।”

অন্যদিকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, “রেঞ্জ কর্মকর্তা আমার সাথে আলোচনা না করেই মামলা দিয়েছেন। সাংবাদিকদের উপর হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এর আইনি প্রক্রিয়া চলছে।”

চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম বলেন, “চাঁদাবাজির মামলাটি তদন্তাধীন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও বিষয়টি জানেন।” তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি পরবর্তীতে ফোন কেটে দেন।

উল্লেখ্য, রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলার প্রধান আসামি। একই সঙ্গে বনজ সম্পদ পাচার, বন্যপ্রাণী বেচাকেনা ও নানা অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবুও তিনি নিজে বাদী হয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করায় ঘটনাটি আরও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

বাংলার খবর
জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের জরুরি ঘোষণা

error:

সাতছড়ির গাছপাচার ধামাচাপা দিতেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা!

আপডেট সময় ১২:০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে কোটি টাকার সেগুন গাছ পাচারের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে এবার উল্টো চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ। সাতছড়ি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) চুনারুঘাট থানায় মামলাটি রেকর্ড করেন।

গত শনিবার দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক ও ওয়াইল্ডলাইফ এক্টিভিস্ট মুজাহিদ মসি এবং বাংলা টাইমসের প্রতিনিধি ত্রিপুরারী দেবনাথ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতছড়ি উদ্যানে গিয়ে সেগুন গাছ পাচারের প্রমাণ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় বন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে তারা হামলার শিকার হন। পরে সাংবাদিকরা থানায় মামলা করেন। ঘটনাটি তদন্তে নেমে বন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক গাছ কাটার সত্যতা পান এবং সাংবাদিকদের অভিনন্দন জানান।

কিন্তু এর পরেও বুধবার সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে নতুন মামলা দায়ের করা হয়।

বিতর্কিত এ মামলার খবরে হবিগঞ্জের বিভিন্ন প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাদের মতে, গাছ পাচারের খবর প্রকাশ করায় পুরস্কৃত হওয়ার বদলে সাংবাদিককে হয়রানি করা হচ্ছে।

সাংবাদিক মুজাহিদ মসি বলেন, “সেগুন গাছ পাচারের তথ্য ধামাচাপা দিতে তারা এই মামলা করেছে। আমার কাছে তাদের অপকর্মের আরও প্রমাণ আছে। সাংবাদিকের কলমের কাছে এই মিথ্যে অভিযোগ টিকবে না।”

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের নেতা ও আইনজীবী শাহ ফখরুজ্জামান বলেন, “মুজাহিদ মসি বন্যপ্রাণী সুরক্ষার পাশাপাশি সত্য তুলে ধরছেন। অথচ তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশ ও বন বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা ক্ষুণ্ণ হবে।”

অভিযুক্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, “ডিএফও স্যারের নির্দেশে মামলা দিয়েছি। সীমিত জনবল দিয়ে বিশাল বন রক্ষা করা কঠিন। কিছু সেগুন গাছ চুরি হলে তা আমাদের অজান্তেও হতে পারে।”

অন্যদিকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, “রেঞ্জ কর্মকর্তা আমার সাথে আলোচনা না করেই মামলা দিয়েছেন। সাংবাদিকদের উপর হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এর আইনি প্রক্রিয়া চলছে।”

চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম বলেন, “চাঁদাবাজির মামলাটি তদন্তাধীন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও বিষয়টি জানেন।” তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি পরবর্তীতে ফোন কেটে দেন।

উল্লেখ্য, রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলার প্রধান আসামি। একই সঙ্গে বনজ সম্পদ পাচার, বন্যপ্রাণী বেচাকেনা ও নানা অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবুও তিনি নিজে বাদী হয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করায় ঘটনাটি আরও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।