
পারভেজ হাসান,লাখাই প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জ-লাখাই সড়কের পাশে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে টিনশেড ঘর নির্মাণ এবং স্থাপনা বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে। বারবার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও লাখাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ স্থাপনার কারণে যানজট ও জলাবদ্ধতা এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লাখাই উপজেলার কালাউক বাজারের হবিগঞ্জ-লাখাই সড়কের পাশে সরকারি জমি দখল করে নতুন করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। ভাদিকারা গ্রামের বাচ্চু মিয়া ও তার স্ত্রী সমরাজ বেগম সড়ক সংলগ্ন সরকারি জমিতে একটি নতুন টিনশেড ঘর নির্মাণ করেছেন। শুধু তাই নয়, ভাদিকারা রাস্তার মুখে সম্প্রতি আবারও নতুন করে টিন দিয়ে আরেকটি দোকান তৈরি করেছেন আব্দুর রুফ নামের এক ব্যক্তি।
এছাড়া, বামৈ তিনপুল নামক স্থানে সরকারি খালের উপরও দোকান নির্মাণ করছেন এক ব্যক্তি। এসব অবৈধ স্থাপনার কারণে হবিগঞ্জ-লাখাই সড়কের বেকি টেকা ব্রিজ থেকে বামৈ তিনপুল পর্যন্ত যানজট এখন নিত্যদিনের চিত্র। বিশেষ করে ভাদিকারা যাওয়ার রাস্তার মুখে রিকশা, অটোরিকশা ও টমটমের মতো যানবাহনের কারণে যানজট চরমে পৌঁছেছে, যার ফলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দখলদাররা সরকারি খালের ওপর নির্মাণকাজ করায় বৃষ্টির সময় পানি নিষ্কাশনে চরম অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে এলাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা জনদুর্ভোগ আরও বাড়াচ্ছে।
এর আগেও অবৈধ স্থাপনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। লাখাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী শারমিন নেওয়াজ জানিয়েছিলেন যে তিনি ট্রেনিং থেকে ফিরে সরেজমিনে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপ কুমার দাস বলেছিলেন, “আমি সরজমিনে গিয়ে দেখব। যদি সরকারি জায়গায় হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তা ভেঙে ফেলা হবে।”
তবে, এই প্রতিশ্রুতির পরেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ায় বরং আরও নতুন নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরকারি জায়গা উদ্ধারে প্রশাসনের ‘ভূমিকা নেই বললেই চলে’ বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
**সর্বশেষ পদক্ষেপ ইউএনও’র নির্দেশে স্থগিতাদেশ**
বামৈ তিনপুল নামক স্থানে সরকারি খালের উপর দোকান নির্মাণ প্রসঙ্গে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপ সম্প্রতি জানিয়েছেন, “এ বিষয়টি আমি দেখব,” এবং তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ওই নির্মাণ কাজ স্থগিত করার নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, “সমরাজ বেগমের অবৈধ দোকান ২৪ ঘন্টার মধ্যে উচ্ছেদ করার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন তিনি নিজে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দোকান উচ্ছেদ না হওয়ায় আমি বিষয়টি দেখছি।”
স্থানীয় জনগণ এখন তাকিয়ে আছে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের দিকে। তারা আশা করছেন, দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গা পুনরুদ্ধার করা হবে এবং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলার খবর ডেস্ক : 

























