ঢাকা ০৫:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা Logo হবিগঞ্জে ইজিবাইক নিয়ে সংঘর্ষ, পুলিশসহ ৩০ জন আহত Logo ‘মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যায় সহযোগীদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে’ Logo জামালপুরে ফুটবল লীগ আয়োজনে ডিএফএ ও ক্লাব প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত Logo ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: কয়েক দিনের সংঘাতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি, যুদ্ধবিরতিতে স্বস্তির নিশ্বাস Logo আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় গরু জবাই করে বিরিয়ানি খাওয়ালেন ইসলামি বক্তা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী Logo মাধবপুরে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করলেন ইউএনও জাহিদ বিন কাশেম Logo “সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ: নিরপেক্ষতা কি সম্ভব?” Logo পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার ও জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দিয়েছে ভারত Logo মাস্ক ও লুঙ্গি পরে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

সংরক্ষণের অভাবে পচনের শঙ্কায় শত শত বস্তা আলু

রাজশাহীতে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে আলু। অগ্রিম বুকিং দিয়েও হিমাগারে রাখতে না পারায় আলু পচে নষ্ট হওয়াতে রাস্তার পাশে ফেলে দিচ্ছেন চাষিরা। ছবি- সংগৃহীত

বাম্পার ফলন হলেও আলু রাখার জায়গা নেই। মাঠপর্যায়ের চাষিরা অগ্রিম বুকিং দিয়ে হিমাগারে রাখতে পারেননি আলু। বস্তায় বাঁশঝাড়ে, আমবাগানে রাখা আলু পচে নষ্ট হচ্ছে। পচা আলুর ভালো অংশ কেটে কেউ কেউ বিক্রি করছেন দুই টাকা কেজি দরে। তুলনামূলক ভালো আলুর কেজি ১২ টাকা। এ অবস্থায় চাষিরা বস্তায় বাড়িতে আলু সংরক্ষণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তারা বলছেন, এখন দাম কম। সংরক্ষণ করতে পারলে লাভের মুখ দেখতেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী জেলায় ৩৮টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা ৪ লাখ ৫৭ হাজার টন। কিন্তু ফলন হয়েছে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৫১৭ টন। প্রভাবশালী চাষি ও ব্যবসায়ীরা রাখতে পারলেও প্রান্তিক চাষিরা অগ্রিম বুকিং দিয়ে হিমাগারে আলু রাখতে পারেননি। দাম কম হওয়ায় চাষিরা বস্তায় ভরে আলু রেখেছিলেন বাঁশঝাড় ও আমবাগানের ছায়ায়। ভেবেছিলেন শীতল স্থানে আলু ভালো থাকবে। কিন্তু কিছুদিন যেতেই পচন ধরেছে।

তানোরের কাশিমবাজারের রাকিবুল ইসলাম বলেন, ২০০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। ১২ হাজার বস্তা আলু হয়েছে। এর মধ্যে হিমাগারে রাখতে পেরেছি দুই হাজার বস্তা। ১০ হাজার বস্তা আলু বাসায় রাখা আছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০০ বস্তা আলু পচে গেছে। এভাবে প্রতিদিনই পচছে। এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে খরচ ৮০ হাজার টাকা; দাম পাচ্ছি মাত্র ২৫ হাজার টাকা। ২০০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে প্রায় এক কোটি টাকা লোকসান হবে।

একই উপজেলার কাশিমবাজারের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, হিমাগারে জায়গা পাইনি। সংরক্ষণ করতে না পারায় প্রচুর আলু পচে গেছে। বাজারে ১০-১২ টাকা কেজি। কিন্তু উৎপাদন করতেই খরচ হয়েছে ২০-২২ টাকা। হিমাগারে রাখতে পারলে ১০ লাখ টাকা লাভ হতো। তানোরে আরও তিন-চারটি হিমাগার থাকলে এ দশা হতো না।

চাষি নওশাদ আলী এবার ৭২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। আড়াই হাজার বস্তা আলু হিমাগারে রাখতে পেরেছেন। আরও ৯০০ বস্তা আলু বাড়ির বাঁশঝাড়ে রেখে বিক্রি করছিলেন। এর মধ্যে ১৩৪ বস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। আলু চাষি বিপ্লব হোসেন টুটুল বলেন, এবার আলু চাষে বিঘায় লোকসান ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ঋণ করে চাষ করেছি। এখন কীভাবে পরিশোধ করব?

হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, চাষিরা বিপুল পরিমাণ আলু রাখার জন্য চাপ দিলেও বাড়তি আলু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। জায়গা নেই। তানোরের এম কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থাপক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, হিমাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। চাষিরা এসে আলু রাখার জন্য চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু তারা জায়গা দিতে পারছেন না।

রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক শাহানা আখতার জাহান জানান, এবার উৎপাদন বেশি হওয়ায় চাষিরা দাম কম পাচ্ছেন। হিমাগারগুলো ভরা। প্রাকৃতিকভাবে আলু সংরক্ষণে রাজশাহীতে কৃষি বিপণনের ৫৯টি ঘর আছে। এগুলোতে প্রায় ১১ লাখ টন আলু রাখা সম্ভব। কৃষকরা চাইলে সেখানে রাখতে পারেন। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা কেউ অনুদানের আবেদন করলে ব্যবস্থা নেব।

আপলোডকারীর তথ্য

Liton Bin Islam

লিটন বিন ইসলাম। বার্তা সম্পাদক- বাংলার খবর২৪ সবার আগে সব খবর পেতে বাংলার খবরের সাথেই থাকুন।।
জনপ্রিয় সংবাদ

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা

সংরক্ষণের অভাবে পচনের শঙ্কায় শত শত বস্তা আলু

আপডেট সময় ০৯:০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

বাম্পার ফলন হলেও আলু রাখার জায়গা নেই। মাঠপর্যায়ের চাষিরা অগ্রিম বুকিং দিয়ে হিমাগারে রাখতে পারেননি আলু। বস্তায় বাঁশঝাড়ে, আমবাগানে রাখা আলু পচে নষ্ট হচ্ছে। পচা আলুর ভালো অংশ কেটে কেউ কেউ বিক্রি করছেন দুই টাকা কেজি দরে। তুলনামূলক ভালো আলুর কেজি ১২ টাকা। এ অবস্থায় চাষিরা বস্তায় বাড়িতে আলু সংরক্ষণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তারা বলছেন, এখন দাম কম। সংরক্ষণ করতে পারলে লাভের মুখ দেখতেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী জেলায় ৩৮টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা ৪ লাখ ৫৭ হাজার টন। কিন্তু ফলন হয়েছে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৫১৭ টন। প্রভাবশালী চাষি ও ব্যবসায়ীরা রাখতে পারলেও প্রান্তিক চাষিরা অগ্রিম বুকিং দিয়ে হিমাগারে আলু রাখতে পারেননি। দাম কম হওয়ায় চাষিরা বস্তায় ভরে আলু রেখেছিলেন বাঁশঝাড় ও আমবাগানের ছায়ায়। ভেবেছিলেন শীতল স্থানে আলু ভালো থাকবে। কিন্তু কিছুদিন যেতেই পচন ধরেছে।

তানোরের কাশিমবাজারের রাকিবুল ইসলাম বলেন, ২০০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। ১২ হাজার বস্তা আলু হয়েছে। এর মধ্যে হিমাগারে রাখতে পেরেছি দুই হাজার বস্তা। ১০ হাজার বস্তা আলু বাসায় রাখা আছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০০ বস্তা আলু পচে গেছে। এভাবে প্রতিদিনই পচছে। এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে খরচ ৮০ হাজার টাকা; দাম পাচ্ছি মাত্র ২৫ হাজার টাকা। ২০০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে প্রায় এক কোটি টাকা লোকসান হবে।

একই উপজেলার কাশিমবাজারের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, হিমাগারে জায়গা পাইনি। সংরক্ষণ করতে না পারায় প্রচুর আলু পচে গেছে। বাজারে ১০-১২ টাকা কেজি। কিন্তু উৎপাদন করতেই খরচ হয়েছে ২০-২২ টাকা। হিমাগারে রাখতে পারলে ১০ লাখ টাকা লাভ হতো। তানোরে আরও তিন-চারটি হিমাগার থাকলে এ দশা হতো না।

চাষি নওশাদ আলী এবার ৭২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। আড়াই হাজার বস্তা আলু হিমাগারে রাখতে পেরেছেন। আরও ৯০০ বস্তা আলু বাড়ির বাঁশঝাড়ে রেখে বিক্রি করছিলেন। এর মধ্যে ১৩৪ বস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। আলু চাষি বিপ্লব হোসেন টুটুল বলেন, এবার আলু চাষে বিঘায় লোকসান ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ঋণ করে চাষ করেছি। এখন কীভাবে পরিশোধ করব?

হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, চাষিরা বিপুল পরিমাণ আলু রাখার জন্য চাপ দিলেও বাড়তি আলু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। জায়গা নেই। তানোরের এম কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থাপক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, হিমাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। চাষিরা এসে আলু রাখার জন্য চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু তারা জায়গা দিতে পারছেন না।

রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক শাহানা আখতার জাহান জানান, এবার উৎপাদন বেশি হওয়ায় চাষিরা দাম কম পাচ্ছেন। হিমাগারগুলো ভরা। প্রাকৃতিকভাবে আলু সংরক্ষণে রাজশাহীতে কৃষি বিপণনের ৫৯টি ঘর আছে। এগুলোতে প্রায় ১১ লাখ টন আলু রাখা সম্ভব। কৃষকরা চাইলে সেখানে রাখতে পারেন। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা কেউ অনুদানের আবেদন করলে ব্যবস্থা নেব।