
প্রচণ্ড গরমে ক্লান্ত জনজীবনে এক টুকরো স্বস্তির পরশ হয়ে এসেছে কাঁঠালের মৌসুম। পাহাড়ি কাঁঠালের সুগন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে হবিগঞ্জের জনপদ। জেলার নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট, বাহুবল ও মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি বাগানগুলো থেকে প্রতিদিন শত শত কাঁঠাল আসছে স্থানীয় হাটে-বাজারে। ফলের রাজা কাঁঠাল যেন এ মৌসুমে রাজসিকভাবেই দখল করে নিয়েছে বাজার আর মানুষের মন।
হবিগঞ্জের পাহাড়ি টিলা ও সমতল এলাকায় এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকদের মুখে হাসি, কারণ ফলনের পাশাপাশি বাজারদরও বেশ সন্তোষজনক। জেলার বড় বড় পাইকারি বাজার—মুছাই ও চন্ডিছড়া থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ কাঁঠাল সরবরাহ হচ্ছে ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
মুছাই বাজারের এক আড়তদার জানালেন, বর্তমানে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। ছোট আকারের কাঁঠাল প্রতি শত ৭ থেকে সাড়ে ৯ হাজার এবং বড় আকারের কাঁঠাল প্রতি শত ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর হবিগঞ্জে প্রায় ৩ হাজার ১০০ একর জমিতে কাঁঠাল চাষ হয়েছে এবং প্রতি একরে গড়ে উৎপাদন হয়েছে ৫ থেকে ৬ মেট্রিক টন।
রশিদপুরের চাষি তোরাব আলী মোল্লা বলেন, “সহযোগী ফসল হিসেবে কাঁঠাল চাষ করি। এতে যত্ন কম লাগে, লাভ হয় বেশি। এ বছর ফলন যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি বাজারদরও হাতের নাগালে।”
প্রাকৃতিক সুগন্ধ আর মিষ্টি স্বাদের এই পাহাড়ি কাঁঠাল শুধু হবিগঞ্জের অর্থনীতিই সমৃদ্ধ করছে না, একে ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি প্রাণবন্ত মৌসুমি উৎসবের আবহ। গ্রীষ্মের খরতাপেও তাই কাঁঠালের সুবাস যেন এনে দিচ্ছে গ্রামবাংলার প্রাণে এক আনন্দময় পরশ।