ঢাকা ০৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওসির উদ্যোগে ধরা পড়ছে দাগী অপরাধী ও মাদকসেবী, জনমনে ফিরেছে স্বস্তি

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার হওয়ায় অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলায় এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার এবং দাগী মাদকসেবী ও কারবারি গ্রেপ্তারের মাধ্যমে পুলিশ জনআস্থার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফলে এক সময় মাদক আতঙ্কে থাকা সাধারণ মানুষ এখন শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন।

হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমানের দিকনির্দেশনায় মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সহিদ উল্যা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। উপজেলার সীমান্তঘেঁষা তিন ইউনিয়ন—ধর্মঘর, চৌমুহনী ও শাহজাহানপুর—দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এসব এলাকার চা বাগান ও পাহাড়ি পথ দিয়ে ভারত থেকে মাদক প্রবেশ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ত।

কিন্তু গত আগস্ট থেকে চিত্র পাল্টে গেছে। ওসি সহিদ উল্যার নেতৃত্বে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত টিমের অভিযানে প্রতিদিনই উদ্ধার হচ্ছে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা ও দেশীয় মদ। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন পলাতক থাকা বহু আসামিও এখন পুলিশের জালে ধরা পড়ছে।

তেলিয়াপাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য মাহফুজ মিয়া বলেন, “এক সময় মাদকচক্র এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। এখন প্রতিদিন পুলিশ টহল দিচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।”

চৌমুহনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ বলেন, “সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে পুলিশ, বিজিবি ও জনপ্রতিনিধিরা একসঙ্গে কাজ করছে। আগের তুলনায় অপরাধ অনেক কমেছে।”

নোয়াপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আতাউল মোস্তফা সোহেল বলেন, “ওসি সহিদ উল্যা যেকোনো অভিযোগে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। জনগণ এখন পুলিশকে অভিভাবক মনে করছে।”

বুল্লা ইউনিয়নের আনিছুর রহমান বলেন, “আগে রাতে আন্দিউড়া-বুল্লা সড়কে চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এখন পুলিশের নিয়মিত টহলের কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।”

আন্দিউড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “দাগী অপরাধীরা একে একে ধরা পড়ছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা আগের চেয়ে অনেক ভালো।”

ওসি মোহাম্মদ সহিদ উল্যা বলেন, “মাদক ও অপরাধ দমন আমাদের অগ্রাধিকার। মাদক সমাজকে ধ্বংস করে—তাই আমরা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি। জনগণের সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভব নয়।”

হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান বলেন, “মাধবপুরসহ জেলার সব থানায় মাদক ও অপরাধ দমনে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কেউই আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।”

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

জনপ্রিয় সংবাদ
error:

ওসির উদ্যোগে ধরা পড়ছে দাগী অপরাধী ও মাদকসেবী, জনমনে ফিরেছে স্বস্তি

আপডেট সময় ০৯:১৮:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার হওয়ায় অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলায় এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার এবং দাগী মাদকসেবী ও কারবারি গ্রেপ্তারের মাধ্যমে পুলিশ জনআস্থার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফলে এক সময় মাদক আতঙ্কে থাকা সাধারণ মানুষ এখন শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন।

হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমানের দিকনির্দেশনায় মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সহিদ উল্যা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। উপজেলার সীমান্তঘেঁষা তিন ইউনিয়ন—ধর্মঘর, চৌমুহনী ও শাহজাহানপুর—দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এসব এলাকার চা বাগান ও পাহাড়ি পথ দিয়ে ভারত থেকে মাদক প্রবেশ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ত।

কিন্তু গত আগস্ট থেকে চিত্র পাল্টে গেছে। ওসি সহিদ উল্যার নেতৃত্বে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত টিমের অভিযানে প্রতিদিনই উদ্ধার হচ্ছে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা ও দেশীয় মদ। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন পলাতক থাকা বহু আসামিও এখন পুলিশের জালে ধরা পড়ছে।

তেলিয়াপাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য মাহফুজ মিয়া বলেন, “এক সময় মাদকচক্র এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। এখন প্রতিদিন পুলিশ টহল দিচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।”

চৌমুহনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ বলেন, “সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে পুলিশ, বিজিবি ও জনপ্রতিনিধিরা একসঙ্গে কাজ করছে। আগের তুলনায় অপরাধ অনেক কমেছে।”

নোয়াপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আতাউল মোস্তফা সোহেল বলেন, “ওসি সহিদ উল্যা যেকোনো অভিযোগে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। জনগণ এখন পুলিশকে অভিভাবক মনে করছে।”

বুল্লা ইউনিয়নের আনিছুর রহমান বলেন, “আগে রাতে আন্দিউড়া-বুল্লা সড়কে চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এখন পুলিশের নিয়মিত টহলের কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।”

আন্দিউড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “দাগী অপরাধীরা একে একে ধরা পড়ছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা আগের চেয়ে অনেক ভালো।”

ওসি মোহাম্মদ সহিদ উল্যা বলেন, “মাদক ও অপরাধ দমন আমাদের অগ্রাধিকার। মাদক সমাজকে ধ্বংস করে—তাই আমরা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি। জনগণের সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভব নয়।”

হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান বলেন, “মাধবপুরসহ জেলার সব থানায় মাদক ও অপরাধ দমনে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কেউই আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।”