
অন্যের সম্পত্তি ভোগদখল এবং সরকারি চাকরিতে যোগদান করতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদে নিজ মা-বাবার নাম পরিবর্তন করার অভিযোগ উঠেছে মো. হুমায়ুন কবির (৩৭) নামের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির বর্তমানে এনবিআর কর অঞ্চল-২৪ এর ইন্সপেক্টর অব ট্যাক্স পদে কর্মরত। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শুভপুর ইউনিয়নের কাদঘর গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলা করেন তার চাচাতো ভাই শাহ আলম (৪৫)। মামলার বর্ণনায় তিনি উল্লেখ করেন, তার মা হাফেজা খাতুনের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর বাবা জয়নাল আবেদীন সাফিয়া খাতুন ওরফে সাকিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। সম্পর্কে হুমায়ুন কবির তার চাচাতো ভাই। তিনি নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রে তার (বাদী) মা ও বাবার নাম ব্যবহার করেছেন। উদ্দেশ্য ছিল তার পরিবারের সম্পত্তিতে ভাগ বসানো। এছাড়া নিজ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদেও নাম পরিবর্তন করেছেন এনবিআর কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন, হুমায়ুন কবির আমার সৎমা সাফিয়া খাতুন ওরফে সাকিয়া বেগমের কাছ থেকে জালিয়াতি করে ২০১৫ সালের ১৪ জুন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে ৬ শতক ভূমি হেবানামা (দানপত্র) দলিল করে নেন। ওই দলিলে হুমায়ুন কবির চাচা জয়নাল আবেদীনকে নিজের বাবা এবং শাহ আলমের সৎমা সাফিয়া খাতুনকে নিজের মা উল্লেখ করেন। একই বছরের ২২ জুন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে হুমায়ুন কবির তার আপন ভাই জালাল আহম্মদকে হেবাকৃত ৬ শতক জায়গাসহ মোট ৯ শতক জায়গা পুনরায় হেবানামা দলিল করে দেন। কিন্তু ওই দলিলে হুমায়ুন কবির তার বাবার নাম উল্লেখ করেন আমির হোসেন এবং মা সালেহা বেগম।
বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ বিভাগ (সিআইডি) কুমিল্লাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী শাহ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘হুমায়ুন কবির আমার আপন চাচাতো ভাই। তিনি আমার বাবার সম্পত্তি ভোগদখল করতে এবং সরকারি চাকরিতে যোগদানের জন্য পরিকল্পিতভাবে আমার বাবা ও সৎমায়ের নাম ব্যবহার করেছেন। বিষয়টি জানার পর তার বিরুদ্ধে মামলা করলে তিনি আমাকে হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে এনবিআর কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কলা করা হয়। তবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। একপর্যায়ে সংযোগ কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা (সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক) হুমায়ুন কবির বলেন, দীর্ঘ তদন্তে হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।