ঢাকা ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুতাং নদী ভাঙনে বিলীন বুল্লার স্বপ্ন, সরকারি বাঁধের দাবিতে বাসিন্দারা

পারভেজ হাসান, বাংলার খবর লাখাই প্রতিনিধি একসময় শান্ত আর নিরীহ সুতাং নদী এখন লাখাই উপজেলার পশ্চিম বুল্লা গ্রামের বহু পরিবারের জন্য এক দুঃস্বপ্নের নাম। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা নদীভাঙনে বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন মো. দোলাই মিয়া, খেলু মিয়া, এলমেস মিয়া, দরবেশ মিয়া, হিরাজ মিয়াসহ অসংখ্য পরিবার। তাদের স্বপ্নের বাড়িঘর এখন নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে।

ভিটেমাটি হারানো পরিবারগুলো গ্রামের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে জায়গা কিনে আশ্রয় নিয়েছে। তবুও হারানো পৈতৃক ভিটার বেদনা তাদের মনে আজও গভীর ক্ষত হয়ে আছে। অনেকেই মাঝেমধ্যেই নদীর ধারে গিয়ে হারানো বাড়ির স্থানটির দিকে তাকিয়ে থাকেন— যেখানে আজ শুধু বয়ে চলেছে নদীর স্রোত।

ভাঙনের শিকার হয়েছে গ্রামের কবরস্থানও। কবরস্থানের বড় একটি অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে অবশিষ্ট পরিবারগুলোকেও তাদের ভিটেমাটি ছাড়তে হবে। আলী মিয়া, বাবুল মিয়ার মতো অনেকের বাড়িঘর ইতিমধ্যেই ঝুঁকিতে আছে।

গ্রামবাসীর দাবি, নদীভাঙন শুধু কিছু পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁইই কেড়ে নেয়নি, বরং একটি প্রজন্মের স্বপ্নকেও ধ্বংস করেছে। তারা সরকারের কাছে দ্রুত নদীর তীরে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে বাকি পরিবারগুলো অন্তত নিজেদের ভিটায় থাকতে পারে।

একসময় গোসল, সাঁতার আর মাছ ধরার জন্য প্রাণবন্ত সুতাং নদী এখন হারিয়েছে স্বাভাবিক প্রবাহ। শিল্প ও রাসায়নিক বর্জ্যের কারণে নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়েছে, মাছও প্রায় বিলুপ্ত। নদীটির প্রস্থ ও গভীরতা কমে গিয়ে আজ এটি এক বিষণ্ণ, নীরব সাক্ষী হয়ে আছে— যার বুকে জমা আছে হারিয়ে যাওয়া শত শত স্বপ্ন ও এক করুণ ইতিহাস।

বুল্লা বাজারের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত পশ্চিম বুল্লা গ্রাম এখন শুধুই ভাঙনের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ না হলে আরও বহু পরিবার তাদের চিরচেনা ভিটেমাটি হারাবে।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

জনপ্রিয় সংবাদ
error:

সুতাং নদী ভাঙনে বিলীন বুল্লার স্বপ্ন, সরকারি বাঁধের দাবিতে বাসিন্দারা

আপডেট সময় ০১:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

পারভেজ হাসান, বাংলার খবর লাখাই প্রতিনিধি একসময় শান্ত আর নিরীহ সুতাং নদী এখন লাখাই উপজেলার পশ্চিম বুল্লা গ্রামের বহু পরিবারের জন্য এক দুঃস্বপ্নের নাম। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা নদীভাঙনে বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন মো. দোলাই মিয়া, খেলু মিয়া, এলমেস মিয়া, দরবেশ মিয়া, হিরাজ মিয়াসহ অসংখ্য পরিবার। তাদের স্বপ্নের বাড়িঘর এখন নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে।

ভিটেমাটি হারানো পরিবারগুলো গ্রামের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে জায়গা কিনে আশ্রয় নিয়েছে। তবুও হারানো পৈতৃক ভিটার বেদনা তাদের মনে আজও গভীর ক্ষত হয়ে আছে। অনেকেই মাঝেমধ্যেই নদীর ধারে গিয়ে হারানো বাড়ির স্থানটির দিকে তাকিয়ে থাকেন— যেখানে আজ শুধু বয়ে চলেছে নদীর স্রোত।

ভাঙনের শিকার হয়েছে গ্রামের কবরস্থানও। কবরস্থানের বড় একটি অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে অবশিষ্ট পরিবারগুলোকেও তাদের ভিটেমাটি ছাড়তে হবে। আলী মিয়া, বাবুল মিয়ার মতো অনেকের বাড়িঘর ইতিমধ্যেই ঝুঁকিতে আছে।

গ্রামবাসীর দাবি, নদীভাঙন শুধু কিছু পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁইই কেড়ে নেয়নি, বরং একটি প্রজন্মের স্বপ্নকেও ধ্বংস করেছে। তারা সরকারের কাছে দ্রুত নদীর তীরে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে বাকি পরিবারগুলো অন্তত নিজেদের ভিটায় থাকতে পারে।

একসময় গোসল, সাঁতার আর মাছ ধরার জন্য প্রাণবন্ত সুতাং নদী এখন হারিয়েছে স্বাভাবিক প্রবাহ। শিল্প ও রাসায়নিক বর্জ্যের কারণে নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়েছে, মাছও প্রায় বিলুপ্ত। নদীটির প্রস্থ ও গভীরতা কমে গিয়ে আজ এটি এক বিষণ্ণ, নীরব সাক্ষী হয়ে আছে— যার বুকে জমা আছে হারিয়ে যাওয়া শত শত স্বপ্ন ও এক করুণ ইতিহাস।

বুল্লা বাজারের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত পশ্চিম বুল্লা গ্রাম এখন শুধুই ভাঙনের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ না হলে আরও বহু পরিবার তাদের চিরচেনা ভিটেমাটি হারাবে।