ঢাকা ০৩:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo এনসিপি ছাড়লেন শহীদ সাংবাদিক তুরাবের ভাই Logo বিজিবির বিশেষ অভিযানে হবিগঞ্জ সীমান্তে ১০ লাখ টাকার চোরাচালানি পণ্য জব্দ Logo শেরপুরে বাস পুকুরে উল্টে ৩ মাসের শিশুর মৃত্যু, আহত ১৫ Logo জামায়াতকে ’৭১ সালের ভুল স্বীকার করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান শামসুজ্জামান দুদুর Logo আজ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ শুরু: সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা Logo ট্রাম্পের শুল্কের পর মোদি বললেন, ‘চড়া মূল্য দিলেও আপস করব না’ Logo তিন ইউনিয়ন অন্য আসনে, প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়ক অবরোধ Logo মাধবপুরে বাসচাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু Logo মাধবপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৪ Logo তারেক রহমানের নেতৃত্বে বড় বিজয়: বরিশালে সেলিমা রহমানের বক্তব্য

সাংবাদিকতায় যুক্ত হলাম যেভাবে

Oplus_131072

লেখক: হামিদুর রহমান।।
২০১১ সাল। তখন আমি স্নাতক (বিএসএস) ফাইনাল ইয়ারে পড়ি, মাধবপুরের সৈয়দ সঈদ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। গ্রামের বাড়ি ভারতের সীমান্তঘেঁষা চৌমুহনী ইউনিয়নের শাহজালালপুর গ্রামে। একসময় এলাকার ঐতিহ্যবাহী চৌমুহনী বাজার ছিল সবজিবাজার হিসেবে প্রসিদ্ধ।

লোগোর উপরে চাপ দিলেই চলে আসবেন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে,*

সেই সময়টায় বই-পত্রিকা পড়ার প্রতি ছিল প্রবল আকর্ষণ। বন্ধু সেননের ফার্মেসি ও আলাবক্সপুর মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার পাঠাগার ছিল আমার প্রিয় আড্ডাস্থল। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়তাম দৈনিক মানবজমিন, নয়া দিগন্ত ও আমার দেশ। এই নিয়মিত পত্রিকা পাঠই আমার মধ্যে সাংবাদিকতার বীজ বপন করে।

এই আগ্রহ থেকেই পরিচয় হয় আত্মীয়, প্রবীণ সাংবাদিক ও প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতা আলাউদ্দিন কাকার সঙ্গে। তিনি তখন সাপ্তাহিক তথ্য বিচিত্রা’র বার্তা সম্পাদক। তার সম্পাদিত পত্রিকায় আমার নামে কয়েকটি রিপোর্ট ছাপা হলে এক অনন্য অনুভূতি জাগে—প্রথমবার নিজের নাম ছাপা হওয়ার অনুভূতি। যদিও পত্রিকাটি অনিয়মিত ছিল, তবে সেই অভিজ্ঞতা আমাকে আরও উৎসাহিত করে।

এরপর ডিগ্রি পাস করলাম। এ সময় জানতে পারি হবিগঞ্জ থেকে নতুন একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে—দৈনিক বিজয়ের প্রতিধ্বনি। বার্তা সম্পাদক ছিলেন মাধবপুরের সৎ সাংবাদিক জিয়া উদ্দিন দুলাল ভাই, যিনি আমাদের পরিবারের আত্মীয়ও।

আমার আগ্রহ দেখে বড় ভাই ফরিদুর রহমান ও ছায়েদ চাচা দুলাল ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে একটি প্রকাশনা-সম্পর্কিত মিটিংয়ে অংশ নিই। সেখানেই পরিচয় হয় সম্পাদক আনিছুর রহমান আদিল ভাই, এটিএন বাংলার আঃ হালিম ভাইসহ অনেক গুণী সাংবাদিকের সঙ্গে।

মিটিং শেষে আদিল ভাই আমাকে অফিস ঘুরিয়ে দেখিয়ে বলেন, আপাতত অনলাইনে নিউজ পাঠাতে। আমি নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতে থাকি, আর তা ছাপাও হতে থাকে। এখান থেকেই মূলত আমার পেশাগত সাংবাদিকতার যাত্রা শুরু।

পরবর্তীতে আমরা অনেকে বিজয়ের প্রতিধ্বনি ছেড়ে দিই। আমি যোগ দিই দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার-এ মাধবপুর প্রতিনিধি হিসেবে। স্থানীয় সিনিয়র সাংবাদিকদের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে এক আত্মবিশ্বাস জন্মায়। তখনই মনে হলো, সময় এসেছে জাতীয় পত্রিকায় লেখার।

নবীগঞ্জের সাংবাদিক মতিউর রহমান মুন্না ও হবিগঞ্জের টিভি প্রতিনিধি মিলন রশিদ ভাইয়ের সহায়তায় যুক্ত হই জাতীয় দৈনিক নবচেতনা-তে। এরপর ইংরেজি দৈনিক The Bangladesh Today-তে কাজ শুরু করি।

আমার যাত্রা থেমে থাকেনি। পরিচয় হয় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খানের সঙ্গে। তিনি সম্পাদিত প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ দেন। এরপর কথাসাহিত্যিক রাহাত খান স্যারের অধীনে আমি এখনও এই পত্রিকায় প্রতিনিধিত্ব করছি।

প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কাজ করার আগ্রহ জন্মায়। আমার এলাকার বড় ভাই সাখাওয়াত হাসান পলাশ (এনটিভির সাউন্ড এডিটর ও কণ্ঠশিল্পী) বাংলা টিভির সিনিয়র ক্যামেরাম্যান হাসান ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তার মাধ্যমেই পরিচয় হয় মীর শিহাব রাসেল, ইউসুফ ও সালাহউদ্দিন বাদল ভাইয়ের সঙ্গে।

১০ জুন ২০১৮—এই তারিখটি আমার সাংবাদিকতা জীবনে এক মাইলফলক। সেদিন আমি বাংলা টিভি-র মাধবপুর প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাই এবং এখনো এই দায়িত্বে আছি।

এছাড়া The Asian Age ইংরেজি দৈনিকেও আমি নিয়মিত রিপোর্টিং করে যাচ্ছি, সাব এডিটর সুজন ভাইয়ের উৎসাহে।

বহু চড়াই-উতরাই পার করে আজও আমি একজন মাঠ পর্যায়ের সংবাদকর্মী। যে আগ্রহ আর ভালোবাসা নিয়ে শুরু করেছিলাম—তা কখনো কমেনি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা। পেশা হিসেবে নয়, সাংবাদিকতা আমার কাছে দায়িত্ব, সমাজ ও দেশের প্রতি এক গভীর দায়বদ্ধতা।

লেখক: হামিদুর রহমান,মাধবপুর প্রতিনিধি,বাংলা টিভি এবং সদস্য মাধবপুর প্রেসক্লাব।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

এনসিপি ছাড়লেন শহীদ সাংবাদিক তুরাবের ভাই

error:

সাংবাদিকতায় যুক্ত হলাম যেভাবে

আপডেট সময় ০৬:২৪:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

লেখক: হামিদুর রহমান।।
২০১১ সাল। তখন আমি স্নাতক (বিএসএস) ফাইনাল ইয়ারে পড়ি, মাধবপুরের সৈয়দ সঈদ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। গ্রামের বাড়ি ভারতের সীমান্তঘেঁষা চৌমুহনী ইউনিয়নের শাহজালালপুর গ্রামে। একসময় এলাকার ঐতিহ্যবাহী চৌমুহনী বাজার ছিল সবজিবাজার হিসেবে প্রসিদ্ধ।

লোগোর উপরে চাপ দিলেই চলে আসবেন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে,*

সেই সময়টায় বই-পত্রিকা পড়ার প্রতি ছিল প্রবল আকর্ষণ। বন্ধু সেননের ফার্মেসি ও আলাবক্সপুর মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার পাঠাগার ছিল আমার প্রিয় আড্ডাস্থল। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়তাম দৈনিক মানবজমিন, নয়া দিগন্ত ও আমার দেশ। এই নিয়মিত পত্রিকা পাঠই আমার মধ্যে সাংবাদিকতার বীজ বপন করে।

এই আগ্রহ থেকেই পরিচয় হয় আত্মীয়, প্রবীণ সাংবাদিক ও প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতা আলাউদ্দিন কাকার সঙ্গে। তিনি তখন সাপ্তাহিক তথ্য বিচিত্রা’র বার্তা সম্পাদক। তার সম্পাদিত পত্রিকায় আমার নামে কয়েকটি রিপোর্ট ছাপা হলে এক অনন্য অনুভূতি জাগে—প্রথমবার নিজের নাম ছাপা হওয়ার অনুভূতি। যদিও পত্রিকাটি অনিয়মিত ছিল, তবে সেই অভিজ্ঞতা আমাকে আরও উৎসাহিত করে।

এরপর ডিগ্রি পাস করলাম। এ সময় জানতে পারি হবিগঞ্জ থেকে নতুন একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে—দৈনিক বিজয়ের প্রতিধ্বনি। বার্তা সম্পাদক ছিলেন মাধবপুরের সৎ সাংবাদিক জিয়া উদ্দিন দুলাল ভাই, যিনি আমাদের পরিবারের আত্মীয়ও।

আমার আগ্রহ দেখে বড় ভাই ফরিদুর রহমান ও ছায়েদ চাচা দুলাল ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে একটি প্রকাশনা-সম্পর্কিত মিটিংয়ে অংশ নিই। সেখানেই পরিচয় হয় সম্পাদক আনিছুর রহমান আদিল ভাই, এটিএন বাংলার আঃ হালিম ভাইসহ অনেক গুণী সাংবাদিকের সঙ্গে।

মিটিং শেষে আদিল ভাই আমাকে অফিস ঘুরিয়ে দেখিয়ে বলেন, আপাতত অনলাইনে নিউজ পাঠাতে। আমি নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতে থাকি, আর তা ছাপাও হতে থাকে। এখান থেকেই মূলত আমার পেশাগত সাংবাদিকতার যাত্রা শুরু।

পরবর্তীতে আমরা অনেকে বিজয়ের প্রতিধ্বনি ছেড়ে দিই। আমি যোগ দিই দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার-এ মাধবপুর প্রতিনিধি হিসেবে। স্থানীয় সিনিয়র সাংবাদিকদের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে এক আত্মবিশ্বাস জন্মায়। তখনই মনে হলো, সময় এসেছে জাতীয় পত্রিকায় লেখার।

নবীগঞ্জের সাংবাদিক মতিউর রহমান মুন্না ও হবিগঞ্জের টিভি প্রতিনিধি মিলন রশিদ ভাইয়ের সহায়তায় যুক্ত হই জাতীয় দৈনিক নবচেতনা-তে। এরপর ইংরেজি দৈনিক The Bangladesh Today-তে কাজ শুরু করি।

আমার যাত্রা থেমে থাকেনি। পরিচয় হয় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খানের সঙ্গে। তিনি সম্পাদিত প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ দেন। এরপর কথাসাহিত্যিক রাহাত খান স্যারের অধীনে আমি এখনও এই পত্রিকায় প্রতিনিধিত্ব করছি।

প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কাজ করার আগ্রহ জন্মায়। আমার এলাকার বড় ভাই সাখাওয়াত হাসান পলাশ (এনটিভির সাউন্ড এডিটর ও কণ্ঠশিল্পী) বাংলা টিভির সিনিয়র ক্যামেরাম্যান হাসান ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তার মাধ্যমেই পরিচয় হয় মীর শিহাব রাসেল, ইউসুফ ও সালাহউদ্দিন বাদল ভাইয়ের সঙ্গে।

১০ জুন ২০১৮—এই তারিখটি আমার সাংবাদিকতা জীবনে এক মাইলফলক। সেদিন আমি বাংলা টিভি-র মাধবপুর প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাই এবং এখনো এই দায়িত্বে আছি।

এছাড়া The Asian Age ইংরেজি দৈনিকেও আমি নিয়মিত রিপোর্টিং করে যাচ্ছি, সাব এডিটর সুজন ভাইয়ের উৎসাহে।

বহু চড়াই-উতরাই পার করে আজও আমি একজন মাঠ পর্যায়ের সংবাদকর্মী। যে আগ্রহ আর ভালোবাসা নিয়ে শুরু করেছিলাম—তা কখনো কমেনি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা। পেশা হিসেবে নয়, সাংবাদিকতা আমার কাছে দায়িত্ব, সমাজ ও দেশের প্রতি এক গভীর দায়বদ্ধতা।

লেখক: হামিদুর রহমান,মাধবপুর প্রতিনিধি,বাংলা টিভি এবং সদস্য মাধবপুর প্রেসক্লাব।