
একজন সাংবাদিক যদি রাজনীতিবিদ হন, অথবা একজন রাজনীতিবিদ যদি সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হন, তবে তাদের সংবাদ বা প্রতিবেদনগুলো কখনোই পুরোপুরি নিরপেক্ষ হতে পারে না। এমনকি একজন সাংবাদিক যদি রাজনৈতিক প্রভাব থেকে নিজেকে সেভাবে বিচ্ছিন্ন রাখতে চান, তাও তাঁর লেখা বা প্রতিবেদন অন্যদের কাছে প্রভাবিত হতে পারে।
কেন নিরপেক্ষতা সম্ভব নয়?
*রাজনৈতিক পক্ষ নেওয়া:*
রাজনীতিবিদরা তাদের দলীয় ভাবনাচিন্তা ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে কাজ করেন। তাদের লক্ষ্য থাকে দলের সাফল্য অর্জন এবং বিরোধীদের দুর্বলতা তুলে ধরা। যদি একজন রাজনীতিবিদ সাংবাদিকতার পেশায় যুক্ত হন, তবে তার রচনাগুলো এভাবেই প্রভাবিত হতে পারে, যা সংবাদটির নিরপেক্ষতা নষ্ট করে।
সাংবাদিকের রাজনৈতিক পরিচয়:
একদিকে যেমন একজন সাংবাদিকের কাজ হল সমাজের প্রতিটি দিক থেকে তথ্য তুলে ধরা, অন্যদিকে রাজনীতিবিদরা দলের আদর্শ, লক্ষ্য ও মতবাদকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করেন। ফলে যখন সাংবাদিকতা ও রাজনীতি একসাথে মিশে যায়, তখন রিপোর্টিং-এর স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ে।
জনগণের বিশ্বাস:
সংবাদ মাধ্যমের মূল কাজ হলো জনগণকে সঠিক তথ্য প্রদান করা, যাতে তারা তাদের মতামত গঠন করতে পারে। কিন্তু যখন সাংবাদিকরা রাজনীতির সাথে যুক্ত হন, তখন জনগণের কাছে সংবাদ মাধ্যমের প্রতি বিশ্বাস কমে যেতে পারে, কারণ তারা মনে করতে পারে যে প্রতিবেদনের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
বিচারবোধের অভাব:
রাজনীতিবিদদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন রাজনীতিবিদ সাংবাদিক হন, তখন তাদের শত্রু পক্ষের প্রতি এক ধরনের অগ্রিম ধারণা থাকতে পারে। যার ফলে, তাদের প্রতিবেদনগুলো হয়ত বিচারবুদ্ধি ও সঠিক তথ্য থেকে বিচ্যুত হতে পারে।
সর্বশেষ কথা
সাংবাদিকতা ও রাজনীতি দুটি আলাদা বিষয়। সাংবাদিকতার উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্য প্রতিষ্ঠা এবং জনগণকে অবহিত করা, যেখানে কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব বা পক্ষ নির্বাচন শোভন নয়। যখন সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদ একসাথে মিশে যান, তখন সংবাদে পেশাদারিত্ব এবং নিরপেক্ষতার অভাব দেখা দেয়। তাই একে অপর থেকে আলাদা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে জনগণ সঠিক ও নিরপেক্ষ তথ্য পেতে পারেন।
এটা আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সাংবাদিকতার উদ্দেশ্য হ’ল সবার জন্য সঠিক, প্রামাণিক তথ্য উপস্থাপন করা, যার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়।