ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জ-৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থী অলিউল্লাহ নোমান, জনমতে প্রশ্ন” কে এই অলিউল্লাহ নোমান?

বাংলার খবর ডেস্ক
হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর–চুনারুঘাট) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানকে ঘিরে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত থাকা নোমান ২০১২ সালের স্কাইপি কেলেঙ্কারি ফাঁসের পর দেশজুড়ে আলোচিত হন। ওই ঘটনায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়ে তিনি “মজলুম সাংবাদিক” হিসেবে একটি পরিচিতি লাভ করলেও, তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জনমতের প্রশ্ন আরও গভীর হয়েছে।

স্থানীয়দের মতামত —সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত হলেও রাজনৈতিকভাবে নোমান বরাবরই বিতর্কিত ছিলেন। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তার লেখনীতে বিএনপি-বিরোধী মনোভাব স্পষ্ট হয় এবং ধীরে ধীরে তিনি জামায়াতের ঘনিষ্ঠ অবস্থানে চলে আসেন। এতে অনেকে মনে করেন—তিনি কখনোই নিরপেক্ষ ছিলেন না; বরং দীর্ঘদিন ধরেই জামায়াতের আদর্শমুখী ছিলেন।

তবে ব্যক্তিগত পরিচিতি ও সম্মানের জায়গায় তার মরহুম পিতা প্রিন্সিপাল মাওলানা সানা উল্লাহর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ বেশি। মাধবপুর উপজেলার ইটাখোলা ফাজিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল সানা উল্লাহ ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের একজন সম্মানিত আলেম, যার মতাদর্শ জামায়াত ইসলামের রাজনৈতিক আকিদার সঙ্গে মেলে না। এলাকার মানুষের মতে, নোমানের গ্রহণযোগ্যতার বড় অংশই তার পরিবারের ওই মর্যাদা থেকে এসেছে।

এদিকে মাঠপর্যায়ের ভোটারদের বড় অংশের দাবি—অলিউল্লাহ নোমান কখনোই এলাকায় সক্রিয় ছিলেন না। লন্ডনপ্রবাসী জীবন, সাংবাদিকতা এবং ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে মাধবপুর–চুনারুঘাটের উন্নয়ন, মানুষজনের সমস্যা কিংবা সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাকে অতীতে দেখা যায়নি। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা নেই বলেই মত ভোটারদের একটি বড় অংশের।

অন্যদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সলকে ভোটাররা মাঠপর্যায়ের পরীক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে দেখছেন। শিক্ষা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সামাজিক উন্নয়ন, খেলাধুলা এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড—সব ক্ষেত্রেই তার দীর্ঘদিনের সক্রিয় উপস্থিতি ফয়সলকে এলাকাবাসীর কাছে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তৈরি করেছে।

জনমতের সার্বিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে—সাংবাদিক নোমান মানবিক শ্রদ্ধা পেলেও রাজনৈতিক নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়ে মানুষের প্রশ্ন রয়েছে। উন্নয়ন, সেবা, সংযোগ ও মাঠপর্যায়ের নেতৃত্ব—এসবের অভাব তার গ্রহণযোগ্যতাকে দুর্বল করে তুলছে বলেই মন্তব্য করছেন অনেকেই।

তবে অলিউল্লাহ নোমান নিজ বক্তব্যে দাবি করছেন, তিনি নেতা নন; বরং এলাকার মানুষের সেবক হতে এসেছেন। দুর্নীতি ও বৈষম্যমুক্ত আধুনিক মাধবপুর–চুনারুঘাট গড়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। এখন নির্বাচনী মাঠে সেই অঙ্গীকার কতটা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে পারে—তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন ভোটাররা।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

জনপ্রিয় সংবাদ
error:

হবিগঞ্জ-৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থী অলিউল্লাহ নোমান, জনমতে প্রশ্ন” কে এই অলিউল্লাহ নোমান?

আপডেট সময় ০৪:০৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলার খবর ডেস্ক
হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর–চুনারুঘাট) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানকে ঘিরে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত থাকা নোমান ২০১২ সালের স্কাইপি কেলেঙ্কারি ফাঁসের পর দেশজুড়ে আলোচিত হন। ওই ঘটনায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়ে তিনি “মজলুম সাংবাদিক” হিসেবে একটি পরিচিতি লাভ করলেও, তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জনমতের প্রশ্ন আরও গভীর হয়েছে।

স্থানীয়দের মতামত —সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত হলেও রাজনৈতিকভাবে নোমান বরাবরই বিতর্কিত ছিলেন। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তার লেখনীতে বিএনপি-বিরোধী মনোভাব স্পষ্ট হয় এবং ধীরে ধীরে তিনি জামায়াতের ঘনিষ্ঠ অবস্থানে চলে আসেন। এতে অনেকে মনে করেন—তিনি কখনোই নিরপেক্ষ ছিলেন না; বরং দীর্ঘদিন ধরেই জামায়াতের আদর্শমুখী ছিলেন।

তবে ব্যক্তিগত পরিচিতি ও সম্মানের জায়গায় তার মরহুম পিতা প্রিন্সিপাল মাওলানা সানা উল্লাহর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ বেশি। মাধবপুর উপজেলার ইটাখোলা ফাজিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল সানা উল্লাহ ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের একজন সম্মানিত আলেম, যার মতাদর্শ জামায়াত ইসলামের রাজনৈতিক আকিদার সঙ্গে মেলে না। এলাকার মানুষের মতে, নোমানের গ্রহণযোগ্যতার বড় অংশই তার পরিবারের ওই মর্যাদা থেকে এসেছে।

এদিকে মাঠপর্যায়ের ভোটারদের বড় অংশের দাবি—অলিউল্লাহ নোমান কখনোই এলাকায় সক্রিয় ছিলেন না। লন্ডনপ্রবাসী জীবন, সাংবাদিকতা এবং ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে মাধবপুর–চুনারুঘাটের উন্নয়ন, মানুষজনের সমস্যা কিংবা সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাকে অতীতে দেখা যায়নি। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা নেই বলেই মত ভোটারদের একটি বড় অংশের।

অন্যদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সলকে ভোটাররা মাঠপর্যায়ের পরীক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে দেখছেন। শিক্ষা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সামাজিক উন্নয়ন, খেলাধুলা এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড—সব ক্ষেত্রেই তার দীর্ঘদিনের সক্রিয় উপস্থিতি ফয়সলকে এলাকাবাসীর কাছে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তৈরি করেছে।

জনমতের সার্বিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে—সাংবাদিক নোমান মানবিক শ্রদ্ধা পেলেও রাজনৈতিক নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়ে মানুষের প্রশ্ন রয়েছে। উন্নয়ন, সেবা, সংযোগ ও মাঠপর্যায়ের নেতৃত্ব—এসবের অভাব তার গ্রহণযোগ্যতাকে দুর্বল করে তুলছে বলেই মন্তব্য করছেন অনেকেই।

তবে অলিউল্লাহ নোমান নিজ বক্তব্যে দাবি করছেন, তিনি নেতা নন; বরং এলাকার মানুষের সেবক হতে এসেছেন। দুর্নীতি ও বৈষম্যমুক্ত আধুনিক মাধবপুর–চুনারুঘাট গড়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। এখন নির্বাচনী মাঠে সেই অঙ্গীকার কতটা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে পারে—তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন ভোটাররা।