ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

মাধবপুরে এনজিও নিশান গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ছলচাতুরী

মাধবপুর( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ রোকেয়া বেগম প্রতি লাখে মাসে ২ হাজার টাকা মুনাফার খবর শুনে তেলিয়াপাড়া নিশান পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটিকে ১০  লাখ টাকা জমা করেছিলেন।টাকা জমা রাখার প্রমাণ হিসেবে তাকে ৩শ টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্টাম্প কর্জ দলিল সম্পাদন করে দেন নিশান।চুক্তিনামা অনুযায়ী মাসে মাসে মুনাফা পেতেন রোকেয়া। প্রতি লাখে ২ হাজার কারো বেলায় আড়াই হাজার টাকা লাভের খবর শুনে রোকেয়ার মত প্রায় ছোট বড় ৩ হাজার বিভিন্ন পেশার লোকজন  দেড়শত কোটি টাকার ওপড়ে জমা করেন।কিন্তু ডিসেম্বর মাস থেকে বিপত্তি দেখা দেয়।হঠাৎ করে নিশানে টাকার সংকট দেখা দেয়।নিশানে পালিয়ে যাচ্ছে খবর চাউর হলে হাজারো গ্রাহক টাকা ফেরত পেতে তেলিয়াপাড়া নিশান প্রধান কার্যালয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েন।তখন উপজেলা প্রশাসন নিয়ে নিশানের পরিচালকরা আমানতকারিদের আশ্বাস দিয়েছিল মার্চ এপ্রিল মাসে তারা গ্রাহকের জমা টাকা ফেরত দিবেন। কিন্তু এর মধ্যে নিশানের পরিচালক সায়েম,সালমান,আমেনা বেগম পালিয়ে গেছে।এখন শুধু নিশানের চেয়ারম্যান বেলাল মিয়া অফিসে আছেন।তবে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেনা।তাকে একা রেখে স্ত্রী সন্তান সবাই চলে গেছে।

নিশানের পরিচালক জালাল উদ্দিন বলেন,সারাদেশে তাদের ২৮ শাখা ছিল।প্রায় দেড় লাখ সমিতি সদস্য ছিল।কয়েক কোটি টাকা ঋন বিতরন করা হয়েছে।কিন্তু গত ডিসেম্বর মাস থেকে গোলযোগের কারনে সব গুলো শাখা সমিতি বন্ধ হয়ে  গেছে।মাঠে কয়েক কোটি টাকা সমিতির সদস্যরা ফেরত দিচ্ছেনা। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় নিশানের গাছ বাগান,   জমি, দালানকোঠা সহ অনেক সম্পদ রয়েছে। আমাদের ইচ্ছে ছিল তেলিয়াপাড়া নিশান কার্যালয় চালু থাকলে সম্পদ বিক্রি করে ধীরেধীরে মানুষের টাকা ফেরত দেব।কিন্তু বিশৃঙ্খলার কারনে এখন সহায় সম্পদ বিক্রি করা যাচ্ছেনা।তবু আমরা চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের টাকা ফেরত দেওয়া।টাকা পরিবর্তে নিশানের সম্পদ কেউ কেউ নিজেদের দখলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

এদিকে যতই দিন যাচ্ছে গ্রাহকরা টাকা জমা করে হতাশায ভুগছেন।অনেক গরীর মানুষ জমি ও সহায় সম্পদ বিক্রি টাকা জমা করেছিলেন। কিন্তু টাকা জমা করে এখন দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন।

আমানতকারিরা জানান,প্রায় বছর ধরে নিশান মানুষের কাছ থেকে টাকা জমা নিয়েছে।বিনিময়ে প্রতি মাসে মুনাফা দিয়ে আসছে।এই প্রলোভনে পড়ে ধনী গরীব সবাই নিশানে টাকা জমা করেছে।কিন্তু শেষ বেলা এমন পরিস্থিতি হবে জানলে আমরা নিশানে টাকা কখনো জমা রাখতাম না।আজ টাকা জমা করে বিপদ কিনে এনেছি।নুরুল ইসলাম নামে একজন আমানতকারি জানান,কোম্পানিতে জমি বিক্রি করে মুনাফার আশায় নিশানে টাকা জমা করেছিলেন।এখন তার মত শত শত লোক নিজের টাকা নিশানে জমা করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ বিন কাশেম বলেন,আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে আমানত কারিদের টাকা ফেরত দিতে নিশানকে নির্দেশ দিয়েছি।তারপরও তারা টাকা ফেরত না দিলে আমানতকারিরা নিশানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।যাতে তারা টাকা ফেরত পান।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Liton Bin Islam

মাধবপুরে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি আ.লীগ সেক্রেটারী মাসুদ খান আটক

মাধবপুরে এনজিও নিশান গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ছলচাতুরী

আপডেট সময় ০২:৫৪:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

মাধবপুর( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ রোকেয়া বেগম প্রতি লাখে মাসে ২ হাজার টাকা মুনাফার খবর শুনে তেলিয়াপাড়া নিশান পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটিকে ১০  লাখ টাকা জমা করেছিলেন।টাকা জমা রাখার প্রমাণ হিসেবে তাকে ৩শ টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্টাম্প কর্জ দলিল সম্পাদন করে দেন নিশান।চুক্তিনামা অনুযায়ী মাসে মাসে মুনাফা পেতেন রোকেয়া। প্রতি লাখে ২ হাজার কারো বেলায় আড়াই হাজার টাকা লাভের খবর শুনে রোকেয়ার মত প্রায় ছোট বড় ৩ হাজার বিভিন্ন পেশার লোকজন  দেড়শত কোটি টাকার ওপড়ে জমা করেন।কিন্তু ডিসেম্বর মাস থেকে বিপত্তি দেখা দেয়।হঠাৎ করে নিশানে টাকার সংকট দেখা দেয়।নিশানে পালিয়ে যাচ্ছে খবর চাউর হলে হাজারো গ্রাহক টাকা ফেরত পেতে তেলিয়াপাড়া নিশান প্রধান কার্যালয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েন।তখন উপজেলা প্রশাসন নিয়ে নিশানের পরিচালকরা আমানতকারিদের আশ্বাস দিয়েছিল মার্চ এপ্রিল মাসে তারা গ্রাহকের জমা টাকা ফেরত দিবেন। কিন্তু এর মধ্যে নিশানের পরিচালক সায়েম,সালমান,আমেনা বেগম পালিয়ে গেছে।এখন শুধু নিশানের চেয়ারম্যান বেলাল মিয়া অফিসে আছেন।তবে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেনা।তাকে একা রেখে স্ত্রী সন্তান সবাই চলে গেছে।

নিশানের পরিচালক জালাল উদ্দিন বলেন,সারাদেশে তাদের ২৮ শাখা ছিল।প্রায় দেড় লাখ সমিতি সদস্য ছিল।কয়েক কোটি টাকা ঋন বিতরন করা হয়েছে।কিন্তু গত ডিসেম্বর মাস থেকে গোলযোগের কারনে সব গুলো শাখা সমিতি বন্ধ হয়ে  গেছে।মাঠে কয়েক কোটি টাকা সমিতির সদস্যরা ফেরত দিচ্ছেনা। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় নিশানের গাছ বাগান,   জমি, দালানকোঠা সহ অনেক সম্পদ রয়েছে। আমাদের ইচ্ছে ছিল তেলিয়াপাড়া নিশান কার্যালয় চালু থাকলে সম্পদ বিক্রি করে ধীরেধীরে মানুষের টাকা ফেরত দেব।কিন্তু বিশৃঙ্খলার কারনে এখন সহায় সম্পদ বিক্রি করা যাচ্ছেনা।তবু আমরা চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের টাকা ফেরত দেওয়া।টাকা পরিবর্তে নিশানের সম্পদ কেউ কেউ নিজেদের দখলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

এদিকে যতই দিন যাচ্ছে গ্রাহকরা টাকা জমা করে হতাশায ভুগছেন।অনেক গরীর মানুষ জমি ও সহায় সম্পদ বিক্রি টাকা জমা করেছিলেন। কিন্তু টাকা জমা করে এখন দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন।

আমানতকারিরা জানান,প্রায় বছর ধরে নিশান মানুষের কাছ থেকে টাকা জমা নিয়েছে।বিনিময়ে প্রতি মাসে মুনাফা দিয়ে আসছে।এই প্রলোভনে পড়ে ধনী গরীব সবাই নিশানে টাকা জমা করেছে।কিন্তু শেষ বেলা এমন পরিস্থিতি হবে জানলে আমরা নিশানে টাকা কখনো জমা রাখতাম না।আজ টাকা জমা করে বিপদ কিনে এনেছি।নুরুল ইসলাম নামে একজন আমানতকারি জানান,কোম্পানিতে জমি বিক্রি করে মুনাফার আশায় নিশানে টাকা জমা করেছিলেন।এখন তার মত শত শত লোক নিজের টাকা নিশানে জমা করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ বিন কাশেম বলেন,আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে আমানত কারিদের টাকা ফেরত দিতে নিশানকে নির্দেশ দিয়েছি।তারপরও তারা টাকা ফেরত না দিলে আমানতকারিরা নিশানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।যাতে তারা টাকা ফেরত পান।