
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের রাজনীতি জটিল সমীকরণে রূপ নিচ্ছে, যেখানে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে নির্বাচনের সময় নিয়ে সন্তোষজনক সিদ্ধান্তের পর থেকেই। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে, যার ফলে ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ধরে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে মাঠে নেমেছে। ইসলামপন্থি দলগুলো একক জোট গঠনের চেষ্টা করলেও আকিদাগত মতবিরোধ তাদের ঐক্যে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন আলাদা অবস্থানে রয়েছে। এবি পার্টি ও এনসিপির মধ্যে জোট গঠনের সম্ভাবনা থাকলেও এখনো আনুষ্ঠানিক কিছু হয়নি, যদিও মতাদর্শিক মিল থাকলে বিএনপির সঙ্গেও সমঝোতা হতে পারে। বাম দলগুলোর মধ্যেও ঐক্য গড়ার ইঙ্গিত রয়েছে, আর বিএনপি নিজেদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের সঙ্গীদের নিয়ে জোট গঠনের সম্ভাবনায় এগোচ্ছে, যেখানে খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি ইসলামি দলও থাকতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপির ভোট ব্যাংক অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী, কারণ দোদুল্যমান ভোটারদের একটি বড় অংশ ঐতিহ্যগতভাবে ‘ধানের শীষ’ ও ‘নৌকা’ প্রতীকে ভোট দিয়ে থাকেন, ফলে আওয়ামী লীগ অনুপস্থিত থাকলে এসব ভোট বিএনপির দিকেই যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ইসলামপন্থি দলগুলোর ভোট সাধারণত নির্দিষ্ট হলেও জোটের মাধ্যমে তারাও কিছু আসনে সুবিধা পেতে পারে। সব দল এখন অপেক্ষা করছে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার, বিশেষ করে ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই জোট এবং একক প্রার্থী নির্ধারণের কৌশল স্পষ্ট হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এ নির্বাচনে নাটকীয় সমীকরণ হতে পারে বিরোধী দল নির্ধারণ নিয়েও, কারণ ভোটারদের মনস্তত্ত্ব, অঞ্চলভিত্তিক প্রভাব ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আগমনে ভোটের ফলাফল নানা দিকে মোড় নিতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মত দিয়েছেন।