
মাধবপুর প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জর মাধবপুরে গত ৬ মাস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৩১টি সিলিং ফ্যানসহ ল্যাপটপ, প্রজেক্টরের মতো মূল্যাবান শিক্ষা উপকরন চুরি হয়েছে। উপজেলার ১৪৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যো ১৭টি বিদ্যালয় চোরদের কবলে পড়ে।
চুরির ঘটনায় থানায় অভিযাগ ও সাধারন ডায়রি করা হলেও রোধ হচ্ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চুরের উপদ্রব। বিদ্যালয়ের শিক্ষা উপকরনসহ বিদুৎয়ের সরঞ্জামাদি চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় শিক্ষাদান কার্যক্রম ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। চুরি সংঘঠিত হওয়া বিভিন স্কুল এলাকায় সরজমিনে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে গত বছরের ২৩ অক্টাবর উপজেলার জগদীশপুর মির্জাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার্থীদর খুলনা ও পরিস্কার সামগ্রী নিয়ে যায়।
পশ্চিম বাঘাসুরা স্কুলে গত ৩রা নভম্বর প্রজেক্টর, সিলিং ফ্যানসহ স্পিকার চুরি হয়। এ সংক্রান্ত অভিযাগ থানায় দাখিল করা হয়েছিল। ওই মাসের ৭ তারিখ আদিউড়া ইউনিয়নর কুটানিয়া স্কুল থেকে ৬টি পাখা, পানির মটরসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যায়। ডিসেম্বর মাসের ১১ তারিখ দক্ষিণ বেজুড়া স্কুলের দরজার তালা ভেঙ্গে স্পীকার, লাইট, ফুটবল, ১৮ তারিখ ঘোনাপাড়া এ এস এস নাসিম সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের পানির মটর চুরি হয়। ওই বছরর ২২ ডিসেম্বর নারায়নপুর এবং ২৩ ডিসেম্বর এস এম ফয়সল স্কুলের ল্যাপটপ, প্রজেক্টটর,স্নি, মডম, ঘটা, চাবি নিয়ে গেছে। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারীতে দক্ষিণ হরিশ্যামা স্কুলের স্পীকার,২০ জানুয়ারীতে মৌজপুর স্কুলের ৮টি সিলিং ফ্যান, ইন্ডাকশন, চুলা মাইক, মটর ও টিউবওয়ল নিয়ে যায়। ২৭ জানুয়ারী ছাতিয়াইন ইউনিয়নের পিয়াইম স্কুলের ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও ২টি স্পিকার নিয়ে যায়। ফেব্রুয়ারী মাসে মাধবপুর পৌরসভার মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুরাদপুর, সুলতানপুর উত্তর এবং মঙ্গলপুর মনমোহনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিলিং ফ্যানসহ বিভিন্ন সামগ্রী চুরি হয়। এ ঘটনায় থানায় চুর ধরে সোপর্দ করা হয়েছিল এবং লিখিত অভিযাগ দেওয়া আছ বলে মাধবপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক পরিচালনা কমিটির সভাপতি আকবর হোসনের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
চলতি বছরের মার্চ মাস আফজলপুর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়, ছাতিয়াইন পূর্বগ্রাম জাহেদ স্মৃতি এবং ঘোনাপাড়া এ. এস. এম নাসিম স্কুল থেকে ১২টি সিলিং ফ্যান, ইন্ডাকশন, বাদ্যযন্ত্র সহ ইলট্রনিক্স সরঞ্জাম চুরি হয়। চোরদের কবল পড়া কয়েকটি বিদ্যালয় নৈশ প্রহরী না থাকলেও অধিকাংশ বিদ্যালয়ই নৈশ প্রহরী নিয়োগ আছে।
ঘোনাপাড়া এ.এস.এস নাসিম সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাঃ আব্দুর রহিম জানান ওনার স্কুলে নাইটগার্ড নাই। সম্প্রতি দুই বার চুরি সংঘঠিত হওয়ায় কথা স্বীকার করে তিনি জানান, স্কুল আশেপাশের লোকজন নিয়ে সভা করা হয়েছে।
আগামী মঙ্গলবার পুনরায় স্থানীয় জনগন নিয়ে বিদ্যালয় চুরি রোধ সভা হবে।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বিদ্যালয়ের মালামাল চুরির ঘটনায় জিডি ও অভিযাগ পাওয়া যাচ্ছে। নিযুক্ত অফিসার দিয়ে তদন্ত চলমান আছে। আর সুলতানপুর স্কুলে চুরির ঘটনায় আটক ব্যক্তিকে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে জিম্মায় দেওয়া হয়েছিল।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা এস এম জাকিরুল হাসান প্রাথমিক বিদ্যালয় চুরির ঘটনা স্বীকার করে বলেন, যে বিদ্যালয় গুলাতে নৈশ প্রহরী আছে তাদের সঠিক দ্বায়িত্ব পালনে আরোও কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে চুরির ঘটনা গুলা উত্থাপন করা হয়েছে। নৈশ প্রহরী বিহীন বিদ্যালয়ের আশেপাশের লোকজনের সাথে আলাচনা করে চুরি ঠেকাতে প্রদক্ষেক নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কমিটির সভাপতি মাঃ জাহিদ বিন কাশেম জানান, চুরির ঘটনায় থানায় জিডি ও অভিযাগ দায়ের হচ্ছে। সই সাথে নাইটগার্ড বিহীন বিদ্যালয়গুলাতে দ্রুত নাইটগাড নিয়াগ দেওয়ার প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমান গ্রাম পুলিশদের নিজ নিজ এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে রাতের বেলায় দেখভাল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।