ঢাকা ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মোস্তাফিজকে রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে নিলো কলকাতা Logo তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে বিএনপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা Logo মাধবপুরে স্পোর্টস মিনি নাইট ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন Logo ওরসের পবিত্রতা বনাম জুয়ার কালো থাবা — লাখাইয়ের শান্তির পথে কাঁটা Logo বানিয়াচং সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত, আহত ২ Logo মাধবপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ৫৪তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo হবিগঞ্জে ৫৫ বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৩ কোটি টাকার ভারতীয় চোরাচালানি পণ্য জব্দ Logo মাধবপুরে ব্যানার–পোস্টার অপসারণ: পৌরশহর ও ১১ ইউনিয়নে ফিরছে পরিচ্ছন্নতা Logo ৪০ পিস ইয়াবাসহ লাখাইয়ে আটক ১: মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে পুলিশ Logo মাধবপুরে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি

হবিগঞ্জের লাখাইয়ে করাব ইউনিয়ন: সেবায় চরম অব্যবস্থা, জন্ম নিবন্ধন ও ওয়ারিশ সনদে অতিরিক্ত ফি আদায়

পারভেজ হাসান,লাখাই প্রতিনিধি:

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার ৫নং করাব ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘদিন ধরে সেবার মান নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ডিজিটাল সরঞ্জামাদির অভাব, উদ্যোক্তা সংকট, সরকারি ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং বিভিন্ন সরকারি তালিকায় চরম বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।

**ডিজিটাল সেবায় স্থবিরতা: অকেজো সরঞ্জাম, অনুপস্থিত নারী উদ্যোক্তা**

ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারীর কক্ষে কম্পিউটার, স্ক্যানার, প্রিন্টার ও ল্যাপটপের মতো প্রয়োজনীয় ডিজিটাল সরঞ্জামাদি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস দাবি করেন, এক বছর আগে সরঞ্জাম কেনা হলেও সরেজমিনে সেগুলোর ব্যবহার বা কার্যকারিতা দেখা যায়নি। এছাড়া, হিসাব সহকারীর রুমে নেই ওয়াইফাই সংযোগ, যা দাপ্তরিক কাজে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।

ইউনিয়ন পরিষদে দুইজন উদ্যোক্তা কাজ করার কথা থাকলেও, বর্তমানে মাত্র একজন পুরুষ উদ্যোক্তা কাজ করছেন। নারী উদ্যোক্তা অনুপস্থিত থাকায় অনেক সেবাগ্রহীতা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস এ বিষয়ে বলেন, “কাগজে-কলমে আমাদের দুইজন উদ্যোক্তা আছে, কিন্তু পুরুষ উদ্যোক্তাই কাজ করছেন। নারী উদ্যোক্তা কখনোই কাজ করেননি। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পরে সে কখনোই আমার পরিষদে আসেনি। আমি তার নামও জানি না।”

**অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ**

নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগও উঠেছে করাব ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে। সরকারি ফি ৫০ টাকা হলেও জন্ম নিবন্ধনের জন্য উদ্যোক্তা নিচ্ছেন ১২০ টাকা।
ওয়ারিশান সার্টিফিকেটের জন্য নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় বেশি।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো, এই অর্থ নেওয়া হলেও রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। ভুক্তভোগীদের দাবি, “রশিদ ছাড়া টাকা নেওয়া হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ বেআইনি।”

চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “জন্ম নিবন্ধনের অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি, তিনি অবগত আছেন।” ওয়ারিশান সনদের বিষয়ে বলেন, “আমার ইউনিয়নে ৩০০ টাকা নিচ্ছি, অন্য ইউনিয়নে ৫০০ টাকাও নেয়।” তবে রশিদ না দেওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেননি।

**সরকারি তালিকায় বৈষম্য**

সরকারি বিভিন্ন সেবার তালিকায়ও ব্যাপক বৈষম্যের চিত্র দেখা গেছে। টিসিবির মাস্টার রোলে কোনো ওয়ার্ডে মাত্র ৬-৮ জন, আবার কোনো ওয়ার্ডে ২০-২৬ জন পর্যন্ত কার্ডধারী রয়েছেন।
একইভাবে গর্ভবতী ভাতার ক্ষেত্রেও এ বৈষম্য রয়েছে, যা দরিদ্র জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

এসব বিষয়ে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপম দাস অনুপ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে ইউনিয়ন পরিষদকে দুর্নীতিমুক্ত করে সেবার মান নিশ্চিত করা যায়।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

জনপ্রিয় সংবাদ

মোস্তাফিজকে রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে নিলো কলকাতা

error:

হবিগঞ্জের লাখাইয়ে করাব ইউনিয়ন: সেবায় চরম অব্যবস্থা, জন্ম নিবন্ধন ও ওয়ারিশ সনদে অতিরিক্ত ফি আদায়

আপডেট সময় ০৬:১৫:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

পারভেজ হাসান,লাখাই প্রতিনিধি:

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার ৫নং করাব ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘদিন ধরে সেবার মান নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ডিজিটাল সরঞ্জামাদির অভাব, উদ্যোক্তা সংকট, সরকারি ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং বিভিন্ন সরকারি তালিকায় চরম বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।

**ডিজিটাল সেবায় স্থবিরতা: অকেজো সরঞ্জাম, অনুপস্থিত নারী উদ্যোক্তা**

ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারীর কক্ষে কম্পিউটার, স্ক্যানার, প্রিন্টার ও ল্যাপটপের মতো প্রয়োজনীয় ডিজিটাল সরঞ্জামাদি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস দাবি করেন, এক বছর আগে সরঞ্জাম কেনা হলেও সরেজমিনে সেগুলোর ব্যবহার বা কার্যকারিতা দেখা যায়নি। এছাড়া, হিসাব সহকারীর রুমে নেই ওয়াইফাই সংযোগ, যা দাপ্তরিক কাজে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।

ইউনিয়ন পরিষদে দুইজন উদ্যোক্তা কাজ করার কথা থাকলেও, বর্তমানে মাত্র একজন পুরুষ উদ্যোক্তা কাজ করছেন। নারী উদ্যোক্তা অনুপস্থিত থাকায় অনেক সেবাগ্রহীতা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস এ বিষয়ে বলেন, “কাগজে-কলমে আমাদের দুইজন উদ্যোক্তা আছে, কিন্তু পুরুষ উদ্যোক্তাই কাজ করছেন। নারী উদ্যোক্তা কখনোই কাজ করেননি। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পরে সে কখনোই আমার পরিষদে আসেনি। আমি তার নামও জানি না।”

**অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ**

নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগও উঠেছে করাব ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে। সরকারি ফি ৫০ টাকা হলেও জন্ম নিবন্ধনের জন্য উদ্যোক্তা নিচ্ছেন ১২০ টাকা।
ওয়ারিশান সার্টিফিকেটের জন্য নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় বেশি।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো, এই অর্থ নেওয়া হলেও রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। ভুক্তভোগীদের দাবি, “রশিদ ছাড়া টাকা নেওয়া হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ বেআইনি।”

চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “জন্ম নিবন্ধনের অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি, তিনি অবগত আছেন।” ওয়ারিশান সনদের বিষয়ে বলেন, “আমার ইউনিয়নে ৩০০ টাকা নিচ্ছি, অন্য ইউনিয়নে ৫০০ টাকাও নেয়।” তবে রশিদ না দেওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেননি।

**সরকারি তালিকায় বৈষম্য**

সরকারি বিভিন্ন সেবার তালিকায়ও ব্যাপক বৈষম্যের চিত্র দেখা গেছে। টিসিবির মাস্টার রোলে কোনো ওয়ার্ডে মাত্র ৬-৮ জন, আবার কোনো ওয়ার্ডে ২০-২৬ জন পর্যন্ত কার্ডধারী রয়েছেন।
একইভাবে গর্ভবতী ভাতার ক্ষেত্রেও এ বৈষম্য রয়েছে, যা দরিদ্র জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

এসব বিষয়ে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপম দাস অনুপ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে ইউনিয়ন পরিষদকে দুর্নীতিমুক্ত করে সেবার মান নিশ্চিত করা যায়।