
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নালুয়া চা-বাগান থেকে একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছেন বন বিভাগের লোকজন। আজ শনিবার দুপুরে ওই বাগানের একজন চা-শ্রমিকের বাড়ি থেকে বানরটি উদ্ধার করা হয়।
সাতছড়ি বন্য প্রাণী রেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নালুয়া চা-বাগানের একজন শ্রমিক আজ সকালে একটি লজ্জাবতী বানর দেখতে পান। বানরটি পথ হারিয়ে বন থেকে নালুয়া চা-বাগানে ঢুকে পড়ে। পরে ওই শ্রমিক কৌশলে বানরটি ধরে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসেন। হবিগঞ্জ বন প্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাতছড়ি রেঞ্জ অফিসে এ খবর পৌঁছে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সাতছড়ি বন কর্মকর্তারা নালুয়া চা-বাগানে ওই শ্রমিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে লজ্জাবতী বানরটি উদ্ধার করেন।
উদ্ধার করা বানরটির বয়স ৬ থেকে ৭ বছর হবে। একে একটি পূর্ণবয়স্ক বানর হিসেবে ধরা যায়। বন্য প্রাণী গবেষকদের সূত্রে জানা গেছে, প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন লজ্জাবতী বানরকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। লজ্জাবতী বানর লাজুক বানর নামেও পরিচিত। এটি দেশের ক্ষুদ্রতম বানর-জাতীয় প্রাণী। ইংরেজিতে এটিকে বেঙ্গল স্লো লরিস বা নর্থান স্লো লরিস বলে। বৈজ্ঞানিক নাম Nycticebus bengalensis। নিশাচর এই প্রাণী বাংলাদেশে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনের বাসিন্দা।
সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ও তেল মাসুরা বিট কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, লজ্জাবতী বানর বাংলাদেশে সংখ্যায় খুবই কম দেখা যায়। প্রাণীটি দেখতে অত্যন্ত সুন্দর এবং বিরল প্রজাতির নিশাচর প্রাণী। লজ্জাবতী বানর সাধারণত বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় এবং গাছের কষ খেয়ে বেঁচে থাকে। প্রজাপতি বানর সাতছড়ি বনে মাঝেমধ্যে দেখা যায়, এ ছাড়া রাঙামাটি ও বান্দরবান এলাকায় মাঝেমধ্যে দেখা যায় এ বানর। বন কর্মকর্তা বলেন, বানরটি তাঁরা বনে ছেড়ে দেবেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জে জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, লজ্জাবতী বানর পরিবেশবান্ধব প্রাণী। এটি খাঁচায় বন্দী করে রাখার প্রাণী নয়। কেউ এ কাজ করলে তা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনবিরোধী। এ প্রাণী উন্মুক্ত বনে রাখা উচিত।