ঢাকা ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo এনসিপি ছাড়লেন শহীদ সাংবাদিক তুরাবের ভাই Logo বিজিবির বিশেষ অভিযানে হবিগঞ্জ সীমান্তে ১০ লাখ টাকার চোরাচালানি পণ্য জব্দ Logo শেরপুরে বাস পুকুরে উল্টে ৩ মাসের শিশুর মৃত্যু, আহত ১৫ Logo জামায়াতকে ’৭১ সালের ভুল স্বীকার করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান শামসুজ্জামান দুদুর Logo আজ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ শুরু: সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা Logo ট্রাম্পের শুল্কের পর মোদি বললেন, ‘চড়া মূল্য দিলেও আপস করব না’ Logo তিন ইউনিয়ন অন্য আসনে, প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়ক অবরোধ Logo মাধবপুরে বাসচাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু Logo মাধবপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৪ Logo তারেক রহমানের নেতৃত্বে বড় বিজয়: বরিশালে সেলিমা রহমানের বক্তব্য

সম্প্রীতির শহরে প্রশংসিত বিএনপি

চোরাচালানে দলের আঞ্চলিক স্তরের নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে যাওয়া, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয় দেওয়া আর ছোটখাটো অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ছাড়া সিলেট বিএনপিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে এমন কোনো তৎপরতার খবর মেলেনি। জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নামেও আমলে নেওয়ার মতো অভিযোগ নেই।

লোগোর উপরে চাপ দিলেই চলে আসবেন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে,*

বরং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ জেলা শাখার শীর্ষ নেতাদের বেশিসংখ্যক ক্লিন ইমেজের অধিকারী হওয়ায় সিলেটে তাদের ওপর আস্থা ও স্বস্তি বেড়েছে। তারা আধ্যাত্মিক ও সম্প্রীতির নগরীর হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে মরিয়া। যেকোনো সংকটকালীন মুহূর্তে তারা নেমে পড়ছেন রাস্তায়। শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠ চষে বেড়ান। ঘুরে ঘুরে আশ্বস্ত করছেন নগরবাসীসহ পুরো সিলেটকে। তাছাড়া ফিলিস্তিন ইস্যুতে মাঠে সরব থাকায় ধর্মপ্রাণ সিলেটবাসীর মন অনেকটা জয় করতে সক্ষম হয়েছেন।

তবে অতীতে এমন তৎপরতা কোনো রাজনৈতিক দল দেখায়নি। বরং এ নিয়ে মাঠ ঘোলা করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা হয়েছে। সংকট আরও বাড়িয়ে তোলা হয়েছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নানা ইস্যুতে ত্রাতার ভূমিকায় নেমে সবর থাকা সিলেটে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। দলের ঘোর সমালোচকরাও বিএনপির পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসা ও রাখার ডায়নামিক নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন।

জেলা ও মহানগর নেতৃত্ব ছাড়াও সুনাম কুড়াচ্ছের বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খোন্দকার আব্দুল মুক্তাদির এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ইতিবাচক ভূমিকাও। সিলেটকে শান্ত ও নিরাপদ রাখতে তারাও গুরুত্বপূর্ণ এবং ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন। শীর্ষ নেতাদের প্রশংসিত ভূমিকায় সিলেট বিএনপির পালে বইছে সুবাতাস। ফুরফুরে মেজাজে আছেন দলের নেতাকর্মীরাও।

দৃশ্যমান পরিবর্তন শুরু সেই ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে। ওই দিন যখন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান, মুক্তি পায় গণতন্ত্র। সেদিন সারা দেশের মতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সিলেট শহরও। সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা ও কুচক্রী মহল সিলেটে লুটপাট ও অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। শান্ত-শিষ্ট সিলেট মুহূর্তে পরিণত হয় এক অচেনা শহরে। সন্ধ্যার পরে সেই উত্তপ্ত সিলেটকে শান্ত করতে, নগরবাসীর জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাস্তায় বেরিয়ে আসে বিএনপি।

কেন্দ্রীয় নেতা খোন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, আরিফুল হক চৌধুরী ও এনামুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সিলেট জেলা ও মহানগরের নেতারা খোলা ট্রাকে করে নেমে পড়েন উলটপালট হওয়া সিলেট শহরে। তারা সারা শহর ঘুরে মানুষকে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা এবং শান্ত থাকার আহবান জানান।

তারা জানিয়ে দেন, যে বা যারা লুটপাট ও বিশৃঙ্খলা করবে, দলের নেতাকর্মীরা তাদের ধরে আইনের আওতায় আনবে। দলের কারো নাম জড়ালে তাকে আজীবনের জন্য শাস্তির মুখে পড়তে হবে। আওয়ামী লীগ যখন পলাতক, বাকি দলগুলোর নেতারা যখন বুঝে উঠতে পারছিলেন না সেই মুহূর্তে তাদের কী ভূমিকা রাখতে হবে, তখন বিএনপির নেতাদের সাহসী ও সময়োপযোগী ভূমিকায় সিলেটের পরিস্থিতি মধ্যরাতের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। শান্ত হয়ে ওঠে। বিএনপির এই ভূমিকার কারণে সেদিন সিলেট গণলুটপাট ও অরাজকতা থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন।

আবার গেল ৭ এপ্রিল সোমবারও যখন উত্তপ্ত সিলেট। গাজাবাসীর প্রতি সহমর্মী হয়ে যখন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, তখন সিলেটের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালায় কেউ কেউ। এমনকি কোথাও কোথাও লুটপাটও করা হয়। ইউনিমার্ট, কেএফসি, বনফুল, বাটা, ফুলকলী, আলপাইনসহ কয়েকটি অভিজাত শপ ও রেস্তোরাঁয় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এসব কারণে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিলেট। সেই উত্তপ্ত মহানগরীকে শান্ত করতে অতীতের মতো মাইক হাতে, খোলা ট্রাকে করে রাস্তায় নেমে আসে বিএনপি।

সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপির নেতারা সন্ধ্যার পর বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক খোলা ট্রাকে করে সারা সিলেট নগর ঘুরে শহরবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

সন্ধ্যার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ফেসবুক লাইভে এসে শান্ত সিলেট শহরকে অশান্ত করার কারো দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নের ফাঁদে পা না দিতে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। সেদিনই বিএনপির এই ভূমিকা সিলেট নগরকে শান্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিএনপির এই তৎপরতাও সিলেটবাসী বেশ ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে বলে মনে করে সুশীল সমাজ।

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি মারমুখী ভূমিকায় না গিয়ে যে দায়িত্বশীলতা দেখিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। অতীতে সেই রেওয়াজ খুব একটা ছিল না, তার শহরের যেকোনো সংকটে রাস্তায় নেমে আসছে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার স্বার্থে। এটি রাজনীতির জন্য খুবই ইতিবাচক।

এদিকে ফিলিস্তিন পরিস্থিতিকে সামনে রেখে অন্যান্য দলের মতো সিলেট বিএনপিও জোর প্রতিবাদে নামে। গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে সারা দেশের সব মহানগরীতে গত ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনবাসীর প্রতি সংহতি র‌্যালি বের করে। তবে এই র‌্যালি যেকোনো রাজনৈতিক র‌্যালির থেকে আরও স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত ছিল।

সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, বিএনপি গণমানুষের দল। গত দেড় দশক ধরে দেশবাসীর মুক্তির আশায়, তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে থেকে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিএনপির কাণ্ডারি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ দেশবাসীর পাশে থাকার। সে জন্য ফ্যাসিস্টমুক্ত হওয়ার পর এখনো আমরা গণমানুষের পাশে আছি এবং যেকোনো প্রয়োজনে জীবন বাজি রেখে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাব। করছিও। তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল এখনো নানা রকম চেষ্টা অব্যাহত রেখে চলেছে। কিন্তু আমরা তা মোকাবিলা করে মানুষের পাশে রয়েছি। ইনশাল্লাহ এভাবেই থাকব।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, মানবসেবাকে আমরা ইবাদত হিসেবে দেখি। এই সিলেট আমাদের। এই সিলেটকে নিরাপদ ও শান্ত রাখা আমাদের দায়িত্ব। আবার দেশবাসীর আকাক্সক্ষা বুঝে তাদের প্রত্যাশার প্রতি একাত্মতা দেখানোও আমাদের রাজনৈতিক কর্তব্য। পাশাপাশি মানবিক দায়বদ্ধতা, বিশ্ব মানবতার প্রতি সহমর্মী ও সহগামী হওয়ার জন্যই আমরা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়েছি। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ফিলিস্তিনের প্রতি তার জীবন ও মেধা উৎসর্গ করেছিলেন। মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে বিএনপি সব সময়ই সোচ্চার।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

বাংলার খবর

এনসিপি ছাড়লেন শহীদ সাংবাদিক তুরাবের ভাই

error:

সম্প্রীতির শহরে প্রশংসিত বিএনপি

আপডেট সময় ১১:৫১:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

চোরাচালানে দলের আঞ্চলিক স্তরের নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে যাওয়া, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয় দেওয়া আর ছোটখাটো অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ছাড়া সিলেট বিএনপিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে এমন কোনো তৎপরতার খবর মেলেনি। জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নামেও আমলে নেওয়ার মতো অভিযোগ নেই।

লোগোর উপরে চাপ দিলেই চলে আসবেন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে,*

বরং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ জেলা শাখার শীর্ষ নেতাদের বেশিসংখ্যক ক্লিন ইমেজের অধিকারী হওয়ায় সিলেটে তাদের ওপর আস্থা ও স্বস্তি বেড়েছে। তারা আধ্যাত্মিক ও সম্প্রীতির নগরীর হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে মরিয়া। যেকোনো সংকটকালীন মুহূর্তে তারা নেমে পড়ছেন রাস্তায়। শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠ চষে বেড়ান। ঘুরে ঘুরে আশ্বস্ত করছেন নগরবাসীসহ পুরো সিলেটকে। তাছাড়া ফিলিস্তিন ইস্যুতে মাঠে সরব থাকায় ধর্মপ্রাণ সিলেটবাসীর মন অনেকটা জয় করতে সক্ষম হয়েছেন।

তবে অতীতে এমন তৎপরতা কোনো রাজনৈতিক দল দেখায়নি। বরং এ নিয়ে মাঠ ঘোলা করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা হয়েছে। সংকট আরও বাড়িয়ে তোলা হয়েছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নানা ইস্যুতে ত্রাতার ভূমিকায় নেমে সবর থাকা সিলেটে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। দলের ঘোর সমালোচকরাও বিএনপির পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসা ও রাখার ডায়নামিক নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন।

জেলা ও মহানগর নেতৃত্ব ছাড়াও সুনাম কুড়াচ্ছের বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খোন্দকার আব্দুল মুক্তাদির এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ইতিবাচক ভূমিকাও। সিলেটকে শান্ত ও নিরাপদ রাখতে তারাও গুরুত্বপূর্ণ এবং ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন। শীর্ষ নেতাদের প্রশংসিত ভূমিকায় সিলেট বিএনপির পালে বইছে সুবাতাস। ফুরফুরে মেজাজে আছেন দলের নেতাকর্মীরাও।

দৃশ্যমান পরিবর্তন শুরু সেই ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে। ওই দিন যখন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান, মুক্তি পায় গণতন্ত্র। সেদিন সারা দেশের মতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সিলেট শহরও। সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা ও কুচক্রী মহল সিলেটে লুটপাট ও অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। শান্ত-শিষ্ট সিলেট মুহূর্তে পরিণত হয় এক অচেনা শহরে। সন্ধ্যার পরে সেই উত্তপ্ত সিলেটকে শান্ত করতে, নগরবাসীর জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাস্তায় বেরিয়ে আসে বিএনপি।

কেন্দ্রীয় নেতা খোন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, আরিফুল হক চৌধুরী ও এনামুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সিলেট জেলা ও মহানগরের নেতারা খোলা ট্রাকে করে নেমে পড়েন উলটপালট হওয়া সিলেট শহরে। তারা সারা শহর ঘুরে মানুষকে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা এবং শান্ত থাকার আহবান জানান।

তারা জানিয়ে দেন, যে বা যারা লুটপাট ও বিশৃঙ্খলা করবে, দলের নেতাকর্মীরা তাদের ধরে আইনের আওতায় আনবে। দলের কারো নাম জড়ালে তাকে আজীবনের জন্য শাস্তির মুখে পড়তে হবে। আওয়ামী লীগ যখন পলাতক, বাকি দলগুলোর নেতারা যখন বুঝে উঠতে পারছিলেন না সেই মুহূর্তে তাদের কী ভূমিকা রাখতে হবে, তখন বিএনপির নেতাদের সাহসী ও সময়োপযোগী ভূমিকায় সিলেটের পরিস্থিতি মধ্যরাতের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। শান্ত হয়ে ওঠে। বিএনপির এই ভূমিকার কারণে সেদিন সিলেট গণলুটপাট ও অরাজকতা থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন।

আবার গেল ৭ এপ্রিল সোমবারও যখন উত্তপ্ত সিলেট। গাজাবাসীর প্রতি সহমর্মী হয়ে যখন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, তখন সিলেটের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালায় কেউ কেউ। এমনকি কোথাও কোথাও লুটপাটও করা হয়। ইউনিমার্ট, কেএফসি, বনফুল, বাটা, ফুলকলী, আলপাইনসহ কয়েকটি অভিজাত শপ ও রেস্তোরাঁয় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এসব কারণে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিলেট। সেই উত্তপ্ত মহানগরীকে শান্ত করতে অতীতের মতো মাইক হাতে, খোলা ট্রাকে করে রাস্তায় নেমে আসে বিএনপি।

সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপির নেতারা সন্ধ্যার পর বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক খোলা ট্রাকে করে সারা সিলেট নগর ঘুরে শহরবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

সন্ধ্যার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ফেসবুক লাইভে এসে শান্ত সিলেট শহরকে অশান্ত করার কারো দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নের ফাঁদে পা না দিতে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। সেদিনই বিএনপির এই ভূমিকা সিলেট নগরকে শান্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিএনপির এই তৎপরতাও সিলেটবাসী বেশ ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে বলে মনে করে সুশীল সমাজ।

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি মারমুখী ভূমিকায় না গিয়ে যে দায়িত্বশীলতা দেখিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। অতীতে সেই রেওয়াজ খুব একটা ছিল না, তার শহরের যেকোনো সংকটে রাস্তায় নেমে আসছে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার স্বার্থে। এটি রাজনীতির জন্য খুবই ইতিবাচক।

এদিকে ফিলিস্তিন পরিস্থিতিকে সামনে রেখে অন্যান্য দলের মতো সিলেট বিএনপিও জোর প্রতিবাদে নামে। গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে সারা দেশের সব মহানগরীতে গত ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনবাসীর প্রতি সংহতি র‌্যালি বের করে। তবে এই র‌্যালি যেকোনো রাজনৈতিক র‌্যালির থেকে আরও স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত ছিল।

সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, বিএনপি গণমানুষের দল। গত দেড় দশক ধরে দেশবাসীর মুক্তির আশায়, তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে থেকে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিএনপির কাণ্ডারি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ দেশবাসীর পাশে থাকার। সে জন্য ফ্যাসিস্টমুক্ত হওয়ার পর এখনো আমরা গণমানুষের পাশে আছি এবং যেকোনো প্রয়োজনে জীবন বাজি রেখে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাব। করছিও। তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল এখনো নানা রকম চেষ্টা অব্যাহত রেখে চলেছে। কিন্তু আমরা তা মোকাবিলা করে মানুষের পাশে রয়েছি। ইনশাল্লাহ এভাবেই থাকব।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, মানবসেবাকে আমরা ইবাদত হিসেবে দেখি। এই সিলেট আমাদের। এই সিলেটকে নিরাপদ ও শান্ত রাখা আমাদের দায়িত্ব। আবার দেশবাসীর আকাক্সক্ষা বুঝে তাদের প্রত্যাশার প্রতি একাত্মতা দেখানোও আমাদের রাজনৈতিক কর্তব্য। পাশাপাশি মানবিক দায়বদ্ধতা, বিশ্ব মানবতার প্রতি সহমর্মী ও সহগামী হওয়ার জন্যই আমরা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়েছি। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ফিলিস্তিনের প্রতি তার জীবন ও মেধা উৎসর্গ করেছিলেন। মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে বিএনপি সব সময়ই সোচ্চার।