
বাংলার খবর ডেস্ক : চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সুন্নি ও কওমি আকিদার লোকজনের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০৭ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ২০ জনকে জরুরি ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া উত্তেজনা রাতের দিকে ভয়াবহ আকার ধারণ করলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন ১৪৪ ধারা জারি করেন। রাত ১১টার দিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব যৌথভাবে টহল শুরু করে।
ছবি পোস্টকে কেন্দ্র করে শুরু
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফটিকছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুবক আরিয়ান ইব্রাহিম (২০) হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে অবমাননাকর ভঙ্গিতে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে কওমি মহলে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এর জেরে সন্ধ্যায় হাটহাজারীতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। বিক্ষোভকারীরা এ সময় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপে বহু লোক আহত হন।
আটক ইব্রাহিমের স্বীকারোক্তি
ঘটনার পর ফটিকছড়ি থানা পুলিশ ইব্রাহিমকে আটক করে। পরে তিনি ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চান। যদিও ফেসবুক আইডিতে নিজেকে পৌর ছাত্রদল নেতা দাবি করলেও, ফটিকছড়ি পৌরসভা ছাত্রদলের সভাপতি একরাম উল্লাহ চৌধুরী জানান, “সে ছাত্রদলের কেউ নয়।” তিনি প্রশাসনের কাছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
আহতদের চিকিৎসা
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তাপস কান্তি মজুমদার জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের সবাইকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। তবে আহতদের মধ্যে কেউ আশঙ্কাজনক নন।
১৪৪ ধারা জারি
সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে ১৪৪ ধারা জারি করে। এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার রাত ১০টা থেকে রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন এবং উপজেলা গেট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পর্যন্ত এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ ও পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, “আটক যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”