ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শেরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বন্যহাতির মৃত্যু Logo মাধবপুরে তেলিয়াপাড়া চা বাগানে নতুন ব্যবস্থাপক, শ্রমিকদের মাঝে স্বস্তির হাওয়া Logo আ.লীগ নেতার ছেলের বিয়ে, চিটাগাং ক্লাবে বিক্ষোভে উত্তাল ছাত্র আন্দোলন Logo মাধবপুরে ১০৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার Logo হবিগঞ্জে আন্তঃ উপজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টে বাহুবল উপজেলা চ্যাম্পিয়ন Logo মাধবপুরে মসজিদের উন্নয়ন কাজে স্বচ্ছতা গ্রুপের অর্থ সহায়তা Logo ১ বছর পর টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলেন সাইফউদ্দিন Logo নুর-রাশেদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার নির্দেশ Logo প্রেস সচিবের তীব্র প্রতিক্রিয়া: “মিথ্যাচারের উৎস হয়ে উঠেছেন গোলাম মাওলা রনি” Logo রেজা কিবরিয়া: ‘আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আওয়ামী লীগকে চিনবেই না’
ভিড় সামলাতে হিমশিম

৪ বছরের শিশুর ঝাড়ফুঁকে ‘মুক্তি মিলছে’ জটিল রোগের, দাবি স্থানীয়দের

‘শিশু কবিরাজের’ ঝাড়ফুঁক নিতে লম্বা লাইন/ছবি-সংগৃহীত

শেরপুরে চার বছরের এক শিশুর ঝাড়ফুঁক নিতে ভিড় করছে মানুষ। শিশুটির স্বজনসহ স্থানীয়দের দাবি, শিশুটির তেল ও পানি পড়া ব্যবহার করে তারা জটিল রোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। তবে বিষয়টি ‘সম্পূর্ণ কুসংস্কার’ বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।

ঝাড়ফুঁক দেওয়া এই শিশুর নাম লাবীব। সে স্থানীয় পোশাক ব্যবসায়ী মো. আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে। এরইমধ্যে ‘শিশু কবিরাজ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে শিশুটি। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ভাটি লঙ্গরপাড়া এলাকায়।

প্রথমে শিশুটির পরিবারের সদস্যদের রোগমুক্তি, পরে তার আত্মীয়-স্বজনের রোগমুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজারও মানুষ ভিড় করছেন। মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন শিশুটির পরিবারের সদস্যরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে এক এক করে পানি ও তেলের বোতল এগিয়ে শিশুটির মুখের কাছে ধরছেন। আবার কখনো শিশুটি তার বাবার কোলে বসে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের বোতল ভর্তি পানি, তেলের শিশিতে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা এবং বিকেল ৫টায় দুই ধাপে চলে এই ঝাড়ফুঁক। আগত রোগীর মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি।

স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব হাবিবুর রহমান বলেন, ‌‘দ্বিতীয়বারের মতো স্ট্রোক হওয়ার পর একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারতাম না। এই শিশু কবিরাজের চিকিৎসায় আমি এখন সুস্থ। আমি এখন লাঠি ছাড়া দ্রুত হাঁটতে পারি।’

শিশুটির বাবা আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘আমার ছেলে শত শত মানুষের রোগ ভালো করেছে বলে রোগীরা আমাদের জানিয়েছেন। তার এই ক্ষমতা আল্লাহ প্রদত্ত। প্রথমে সে তার মাকে চিকিৎসা করে ভালো করেছে। পরে সুস্থ করেন এলাকার আঘাতপ্রাপ্ত স্থানীয় কয়েকজন ফুটবল খেলোয়াড়দের। এরপর থেকে জানাজানি শুরু হলে মানুষের ভিড় জমে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে আমার ছেলে ফুঁ দিয়ে দিলে অনেকেই সুস্থ হয়ে যায়। এজন্য হাজারও মানুষ আসে। তবে এসবের জন্য আমার ছেলে আজ পর্যন্ত একটি টাকা কারও কাছে নেয়নি।’

তবে ঘটনাটি ‘সম্পূর্ণ কুসংস্কার’ বলে জানান শেরপুর সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ শাহীন। তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই পদ্ধতিতে রোগমুক্তির কোনো ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, ‘ঘটনাটি অবৈজ্ঞানিক ও কুসংস্কার। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ঠিকানাসহ অভিযোগ পেলে উপজেলা প্রশাসন যথাযথ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

বাংলার খবর

শেরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বন্যহাতির মৃত্যু

error:

ভিড় সামলাতে হিমশিম

৪ বছরের শিশুর ঝাড়ফুঁকে ‘মুক্তি মিলছে’ জটিল রোগের, দাবি স্থানীয়দের

আপডেট সময় ০৯:১৪:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

শেরপুরে চার বছরের এক শিশুর ঝাড়ফুঁক নিতে ভিড় করছে মানুষ। শিশুটির স্বজনসহ স্থানীয়দের দাবি, শিশুটির তেল ও পানি পড়া ব্যবহার করে তারা জটিল রোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। তবে বিষয়টি ‘সম্পূর্ণ কুসংস্কার’ বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।

ঝাড়ফুঁক দেওয়া এই শিশুর নাম লাবীব। সে স্থানীয় পোশাক ব্যবসায়ী মো. আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে। এরইমধ্যে ‘শিশু কবিরাজ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে শিশুটি। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ভাটি লঙ্গরপাড়া এলাকায়।

প্রথমে শিশুটির পরিবারের সদস্যদের রোগমুক্তি, পরে তার আত্মীয়-স্বজনের রোগমুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজারও মানুষ ভিড় করছেন। মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন শিশুটির পরিবারের সদস্যরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে এক এক করে পানি ও তেলের বোতল এগিয়ে শিশুটির মুখের কাছে ধরছেন। আবার কখনো শিশুটি তার বাবার কোলে বসে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের বোতল ভর্তি পানি, তেলের শিশিতে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা এবং বিকেল ৫টায় দুই ধাপে চলে এই ঝাড়ফুঁক। আগত রোগীর মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি।

স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব হাবিবুর রহমান বলেন, ‌‘দ্বিতীয়বারের মতো স্ট্রোক হওয়ার পর একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারতাম না। এই শিশু কবিরাজের চিকিৎসায় আমি এখন সুস্থ। আমি এখন লাঠি ছাড়া দ্রুত হাঁটতে পারি।’

শিশুটির বাবা আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘আমার ছেলে শত শত মানুষের রোগ ভালো করেছে বলে রোগীরা আমাদের জানিয়েছেন। তার এই ক্ষমতা আল্লাহ প্রদত্ত। প্রথমে সে তার মাকে চিকিৎসা করে ভালো করেছে। পরে সুস্থ করেন এলাকার আঘাতপ্রাপ্ত স্থানীয় কয়েকজন ফুটবল খেলোয়াড়দের। এরপর থেকে জানাজানি শুরু হলে মানুষের ভিড় জমে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে আমার ছেলে ফুঁ দিয়ে দিলে অনেকেই সুস্থ হয়ে যায়। এজন্য হাজারও মানুষ আসে। তবে এসবের জন্য আমার ছেলে আজ পর্যন্ত একটি টাকা কারও কাছে নেয়নি।’

তবে ঘটনাটি ‘সম্পূর্ণ কুসংস্কার’ বলে জানান শেরপুর সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ শাহীন। তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই পদ্ধতিতে রোগমুক্তির কোনো ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, ‘ঘটনাটি অবৈজ্ঞানিক ও কুসংস্কার। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ঠিকানাসহ অভিযোগ পেলে উপজেলা প্রশাসন যথাযথ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’