ঢাকা ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জামালপুরে ফুটবল লীগ আয়োজনে ডিএফএ ও ক্লাব প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত Logo ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: কয়েক দিনের সংঘাতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি, যুদ্ধবিরতিতে স্বস্তির নিশ্বাস Logo আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় গরু জবাই করে বিরিয়ানি খাওয়ালেন ইসলামি বক্তা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী Logo মাধবপুরে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করলেন ইউএনও জাহিদ বিন কাশেম Logo “সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ: নিরপেক্ষতা কি সম্ভব?” Logo পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার ও জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দিয়েছে ভারত Logo মাস্ক ও লুঙ্গি পরে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ Logo আগেও দুইবার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল Logo মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান Logo দেশের সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো একটানা ২১দিন বন্ধ থাকবে

মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য তীব্র দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার মুখে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে একটি ‘মানবিক করিডোর’ চালুর জাতিসংঘের প্রস্তাবে নীতিগত সম্মতি দিয়েছে ঢাকা। তবে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ‘ত্রাণ পরিবহন ও বিতরণের জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি হলে বাংলাদেশ মানবিক করিডোরের অনুমতি দেবে।’ তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সীমান্তের ওপারে সহায়ক পরিবেশ অনিবার্য, অন্যথায় ত্রাণ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘের ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোটা মিয়ানমারের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে রাখাইনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা, রাখাইন এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অধিকাংশ মানবিক সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, রাখাইনে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।

মানবিক করিডোরের জন্য বাংলাদেশের শর্ত

সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা: যুদ্ধবিরতি বা শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থার মাধ্যমে ত্রাণ পরিবহন ও বিতরণে বাধাহীন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এতে জাতিসংঘ পরিচালিত কার্যক্রমে কোনও ধরনের বিঘ্ন ঘটবে না।

বৈষম্যহীন ত্রাণ বিতরণ: রাখাইনে সব জনগোষ্ঠী আরাকানি, রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু যাতে সমানভাবে ত্রাণ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। শক্তিশালী গোষ্ঠীর কারণে দুর্বলদের যাতে বঞ্চিত হতে না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

শর্তহীন ত্রাণ সরবরাহ:
ত্রাণ বিতরণের সময় কোনও রাজনৈতিক বা অন্যান্য শর্ত আরোপ করা যাবে না। ত্রাণ সম্পূর্ণ মানবিক বিবেচনায় বিতরণ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাখাইনে খাদ্য সংকট যদি আরও তীব্র হয়, তাহলে নতুন করে শরণার্থী ঢলের আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য মানবিক করিডোরের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সহায়ক পরিবেশ ও বৈষম্যহীন ত্রাণ বিতরণ অপরিহার্য।’

জাতিসংঘের গত নভেম্বরে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলে রাখাইনে অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদন মাত্র ২০ শতাংশ জনগণের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। বীজ ও সার সংকট, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের কৃষিকাজে অক্ষমতার কারণে ধান উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। পাশাপাশি রাখাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহারের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে।

আপলোডকারীর তথ্য

Liton Bin Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুরে ফুটবল লীগ আয়োজনে ডিএফএ ও ক্লাব প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত

error:

মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার

আপডেট সময় ০৩:২৪:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য তীব্র দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার মুখে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে একটি ‘মানবিক করিডোর’ চালুর জাতিসংঘের প্রস্তাবে নীতিগত সম্মতি দিয়েছে ঢাকা। তবে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ‘ত্রাণ পরিবহন ও বিতরণের জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি হলে বাংলাদেশ মানবিক করিডোরের অনুমতি দেবে।’ তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সীমান্তের ওপারে সহায়ক পরিবেশ অনিবার্য, অন্যথায় ত্রাণ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘের ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোটা মিয়ানমারের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে রাখাইনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা, রাখাইন এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অধিকাংশ মানবিক সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, রাখাইনে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।

মানবিক করিডোরের জন্য বাংলাদেশের শর্ত

সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা: যুদ্ধবিরতি বা শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থার মাধ্যমে ত্রাণ পরিবহন ও বিতরণে বাধাহীন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এতে জাতিসংঘ পরিচালিত কার্যক্রমে কোনও ধরনের বিঘ্ন ঘটবে না।

বৈষম্যহীন ত্রাণ বিতরণ: রাখাইনে সব জনগোষ্ঠী আরাকানি, রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু যাতে সমানভাবে ত্রাণ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। শক্তিশালী গোষ্ঠীর কারণে দুর্বলদের যাতে বঞ্চিত হতে না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

শর্তহীন ত্রাণ সরবরাহ:
ত্রাণ বিতরণের সময় কোনও রাজনৈতিক বা অন্যান্য শর্ত আরোপ করা যাবে না। ত্রাণ সম্পূর্ণ মানবিক বিবেচনায় বিতরণ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাখাইনে খাদ্য সংকট যদি আরও তীব্র হয়, তাহলে নতুন করে শরণার্থী ঢলের আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য মানবিক করিডোরের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সহায়ক পরিবেশ ও বৈষম্যহীন ত্রাণ বিতরণ অপরিহার্য।’

জাতিসংঘের গত নভেম্বরে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলে রাখাইনে অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদন মাত্র ২০ শতাংশ জনগণের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। বীজ ও সার সংকট, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের কৃষিকাজে অক্ষমতার কারণে ধান উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। পাশাপাশি রাখাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহারের মুখোমুখি হয়ে পড়েছে।