ঢাকা ১০:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জামালপুরে ফুটবল লীগ আয়োজনে ডিএফএ ও ক্লাব প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত Logo ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: কয়েক দিনের সংঘাতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি, যুদ্ধবিরতিতে স্বস্তির নিশ্বাস Logo আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় গরু জবাই করে বিরিয়ানি খাওয়ালেন ইসলামি বক্তা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী Logo মাধবপুরে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করলেন ইউএনও জাহিদ বিন কাশেম Logo “সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ: নিরপেক্ষতা কি সম্ভব?” Logo পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার ও জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দিয়েছে ভারত Logo মাস্ক ও লুঙ্গি পরে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ Logo আগেও দুইবার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল Logo মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান Logo দেশের সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো একটানা ২১দিন বন্ধ থাকবে

১৫ লাখ টন আম নিতে চায় চীন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কেন্দুয়া ঘাসুড়া এলাকার একটি রপ্তানিযোগ্য আমবাগান পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন চীনে আম রপ্তানি প্রসঙ্গে বলেছেন, ইতোমধ্যে দুদেশের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া চীনে যেকোনো খাদ্যপণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে দেশটির জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে অব কাস্টম অব চায়না (জিএসিসি) থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। জিএসিসি গত বছরের জুলাইয়ে আম রপ্তানির নিবন্ধন দিয়েছে।

তিনি বলেছেন, এখন চীনের আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানির বিভিন্ন পর্যায় যাচাই-বাছাই চলছে। হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট কেলিব্রেশন বা সঠিকতা, প্যাকেজিংসহ অনেক কিছুই যাচাই করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে চীন মে মাসের মধ্যভাগ থেকে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম নেবে।

চীন বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিযোগ্য কমপক্ষে ১৫ লাখ টন টন আম নিতে আগ্রহী জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আম রপ্তানি নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে তাদের দেশের সফল আলোচনা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানগুলো দেখতে এসেছি। আমগুলো কতটা রপ্তানিযোগ্য তা যাচাই করতে এখানে চীনের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা এসেছি। বাংলাদেশের উৎপাদিত সুস্বাদু মিষ্টি ফ্রেশ আম বাংলাদেশের জন্য খোলা চায়নার বাজারে। তাছাড়া অন্যান্য দেশের চাইতে বাংলাদেশের আম চাষীদের চীনে আম রপ্তানিতে খরচও কম। চীনের আগ্রহ থাকায় আম সংরক্ষণ ও সংরক্ষণাগার নির্মাণে চীন সহযোগিতা করবে।

এ সময় তিনি তার সাথে থাকা একজন রপ্তানিকারককে ইঙ্গিত করে বলেন, এ ব্যক্তি চীনে আম রপ্তানিতে আগ্রহী। এর আগে গত সপ্তাহে জেলার কয়েকটি আমবাগান এবং আম গ্রেডিং, শর্টিং ও শোধনকেন্দ্র পরিদর্শন করেন চীনের আমদানিকারকদের প্রতিনিধি। পরিদর্শন শেষে তারাও আম আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। এতে খুশি বাগান মালিক ও উদ্যোক্তারা। আম রপ্তানি দেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দেবে। আগামী জুন থেকেই আশা করা যায় চীনে আম রপ্তানি শুরু হতে পারে।

আমের বাগান ঘুরে দেখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়নার রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি উত্তম কৃষি চর্চার (গ্যাপ) মাধ্যমে চাষ করা আম দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের এ উদ্যোগকে তারা প্রশংসা করেছেন। এসব আম তাদের দেশে রপ্তানির ব্যাপারে আগ্রহও প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আম্রপালি, বারি-৪, কাটিমনসহ বিভিন্ন জাতের আমগাছগুলো ঘুরে দেখেন। আমের চাষ পদ্ধতি সর্ম্পকেও খোঁজ খবর নেন তিনি। এসময় রাষ্ট্রদূতের সাথে তার স্ত্রীসহ কয়েকজন আমদানিকারক উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী, নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসার সলেহ্ আকরাম, নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকার, সহকারী কমিশনার ভূমি সুলতানা রাজিয়া, থানার ওসি মনিরুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রায়হানুল ইসলামসহ কৃষি অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সেখানকার বাগান মালিক রফিকুল ইসলাম, মানিক, বাবুসহ কয়েকজন কৃষক তাদের বাগানের বিভিন্ন জাতের আম সম্পর্কে ধারণা দেন । সেইসাথে চীনের আমদানি করা ফ্রুট ব্যাগগুলো দিয়ে আমগুলো মুড়িয়ে রাখার কারণ অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত ও তার সফরসঙ্গীদের।

কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্তত ৩৮টি দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হয়ে থাকে। যার বেশিরভাগ আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রপ্তানি হয়। তবে এ বছরই প্রথম চীনের বাজারে দেশের আম রপ্তা‌নির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পশ্চিমা দেশে ও মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য দেশে পরিবহন খরচ ৪৮০-৫২০ টাকা হলেও চীনে এ খরচ মাত্র ৮০/৯০ টাকা। এতে করে আমরা আমচাষীরা অনেক লাভবান হবে।

অপর চাষী মানিক বলেন, বাংলাদেশ থেকে আম কিনতে আগ্রহী চীন। এটা উদ্যোক্তাদের জন্য খুশির খবর। কোনো তৃতীয়পক্ষ ছাড়া সরাসরি বাগান থেকে চীনে আম রপ্তানি করতে পারলে আমাদের মতো চাষীদের নিশ্চিত হবে ন্যায্যমূল্য।

এদিকে চীনের রাষ্ট্রদূতের আম কেনার আগ্রহে রপ্তা‌নির পরিমাণ বাড়াতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস কৃষি বিভাগের উপস্থিত কর্মকর্তাদের।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা সলেহ্ আকরাম বলেন, কৃষকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আম রপ্তা‌নিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। উত্তম কৃষিচর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আমের উৎপাদন কার্যক্রম ঢাকায় নিযুক্ত চায়না রাষ্ট্রদূত নাচোলের কেন্দুয়াতে রফিকুলের আমবাগানটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি আম বাগানটি পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হয়েছেন। চায়না রাষ্ট্রদূত নাচোলের আম কিনতে সম্মতির কথা জানিয়েছেন। আম রপ্তানি বাড়াতে নাচোলের রপ্তানিযোগ্য আমবাগান গুলো রাষ্ট্রদূতকে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে যে ধরনের বাধা-বিঘ্ন রয়েছে, সেগুলো দূর করে রপ্তানি বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সুস্বাদু ও সম্ভাবনাময় আম রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে উত্তম কৃষিচর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আমের উৎপাদন কার্যক্রম ঢাকায় নিযুক্ত চায়না রাষ্ট্রদূতের কাছে তুলে ধরতে আমবাগান পরিদর্শনের এই আয়োজন। চায়না এবছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম কিনতে আগ্রহী প্রকাশ করেছেন।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমির আম বাগান থেকে ৩ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আমের বাম্পার উৎপাদন ও রপ্তানিতে এ বছর রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার ৩৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। অন্যদিকে দেশ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানির আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

আপলোডকারীর তথ্য

Liton Bin Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুরে ফুটবল লীগ আয়োজনে ডিএফএ ও ক্লাব প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত

error:

১৫ লাখ টন আম নিতে চায় চীন

আপডেট সময় ১১:৪২:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কেন্দুয়া ঘাসুড়া এলাকার একটি রপ্তানিযোগ্য আমবাগান পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন চীনে আম রপ্তানি প্রসঙ্গে বলেছেন, ইতোমধ্যে দুদেশের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া চীনে যেকোনো খাদ্যপণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে দেশটির জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে অব কাস্টম অব চায়না (জিএসিসি) থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। জিএসিসি গত বছরের জুলাইয়ে আম রপ্তানির নিবন্ধন দিয়েছে।

তিনি বলেছেন, এখন চীনের আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানির বিভিন্ন পর্যায় যাচাই-বাছাই চলছে। হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট কেলিব্রেশন বা সঠিকতা, প্যাকেজিংসহ অনেক কিছুই যাচাই করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে চীন মে মাসের মধ্যভাগ থেকে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম নেবে।

চীন বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিযোগ্য কমপক্ষে ১৫ লাখ টন টন আম নিতে আগ্রহী জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আম রপ্তানি নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে তাদের দেশের সফল আলোচনা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানগুলো দেখতে এসেছি। আমগুলো কতটা রপ্তানিযোগ্য তা যাচাই করতে এখানে চীনের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা এসেছি। বাংলাদেশের উৎপাদিত সুস্বাদু মিষ্টি ফ্রেশ আম বাংলাদেশের জন্য খোলা চায়নার বাজারে। তাছাড়া অন্যান্য দেশের চাইতে বাংলাদেশের আম চাষীদের চীনে আম রপ্তানিতে খরচও কম। চীনের আগ্রহ থাকায় আম সংরক্ষণ ও সংরক্ষণাগার নির্মাণে চীন সহযোগিতা করবে।

এ সময় তিনি তার সাথে থাকা একজন রপ্তানিকারককে ইঙ্গিত করে বলেন, এ ব্যক্তি চীনে আম রপ্তানিতে আগ্রহী। এর আগে গত সপ্তাহে জেলার কয়েকটি আমবাগান এবং আম গ্রেডিং, শর্টিং ও শোধনকেন্দ্র পরিদর্শন করেন চীনের আমদানিকারকদের প্রতিনিধি। পরিদর্শন শেষে তারাও আম আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। এতে খুশি বাগান মালিক ও উদ্যোক্তারা। আম রপ্তানি দেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দেবে। আগামী জুন থেকেই আশা করা যায় চীনে আম রপ্তানি শুরু হতে পারে।

আমের বাগান ঘুরে দেখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়নার রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি উত্তম কৃষি চর্চার (গ্যাপ) মাধ্যমে চাষ করা আম দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের এ উদ্যোগকে তারা প্রশংসা করেছেন। এসব আম তাদের দেশে রপ্তানির ব্যাপারে আগ্রহও প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আম্রপালি, বারি-৪, কাটিমনসহ বিভিন্ন জাতের আমগাছগুলো ঘুরে দেখেন। আমের চাষ পদ্ধতি সর্ম্পকেও খোঁজ খবর নেন তিনি। এসময় রাষ্ট্রদূতের সাথে তার স্ত্রীসহ কয়েকজন আমদানিকারক উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী, নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসার সলেহ্ আকরাম, নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকার, সহকারী কমিশনার ভূমি সুলতানা রাজিয়া, থানার ওসি মনিরুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রায়হানুল ইসলামসহ কৃষি অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সেখানকার বাগান মালিক রফিকুল ইসলাম, মানিক, বাবুসহ কয়েকজন কৃষক তাদের বাগানের বিভিন্ন জাতের আম সম্পর্কে ধারণা দেন । সেইসাথে চীনের আমদানি করা ফ্রুট ব্যাগগুলো দিয়ে আমগুলো মুড়িয়ে রাখার কারণ অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত ও তার সফরসঙ্গীদের।

কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্তত ৩৮টি দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হয়ে থাকে। যার বেশিরভাগ আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রপ্তানি হয়। তবে এ বছরই প্রথম চীনের বাজারে দেশের আম রপ্তা‌নির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পশ্চিমা দেশে ও মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য দেশে পরিবহন খরচ ৪৮০-৫২০ টাকা হলেও চীনে এ খরচ মাত্র ৮০/৯০ টাকা। এতে করে আমরা আমচাষীরা অনেক লাভবান হবে।

অপর চাষী মানিক বলেন, বাংলাদেশ থেকে আম কিনতে আগ্রহী চীন। এটা উদ্যোক্তাদের জন্য খুশির খবর। কোনো তৃতীয়পক্ষ ছাড়া সরাসরি বাগান থেকে চীনে আম রপ্তানি করতে পারলে আমাদের মতো চাষীদের নিশ্চিত হবে ন্যায্যমূল্য।

এদিকে চীনের রাষ্ট্রদূতের আম কেনার আগ্রহে রপ্তা‌নির পরিমাণ বাড়াতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস কৃষি বিভাগের উপস্থিত কর্মকর্তাদের।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা সলেহ্ আকরাম বলেন, কৃষকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আম রপ্তা‌নিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। উত্তম কৃষিচর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আমের উৎপাদন কার্যক্রম ঢাকায় নিযুক্ত চায়না রাষ্ট্রদূত নাচোলের কেন্দুয়াতে রফিকুলের আমবাগানটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি আম বাগানটি পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হয়েছেন। চায়না রাষ্ট্রদূত নাচোলের আম কিনতে সম্মতির কথা জানিয়েছেন। আম রপ্তানি বাড়াতে নাচোলের রপ্তানিযোগ্য আমবাগান গুলো রাষ্ট্রদূতকে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে যে ধরনের বাধা-বিঘ্ন রয়েছে, সেগুলো দূর করে রপ্তানি বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সুস্বাদু ও সম্ভাবনাময় আম রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে উত্তম কৃষিচর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আমের উৎপাদন কার্যক্রম ঢাকায় নিযুক্ত চায়না রাষ্ট্রদূতের কাছে তুলে ধরতে আমবাগান পরিদর্শনের এই আয়োজন। চায়না এবছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম কিনতে আগ্রহী প্রকাশ করেছেন।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমির আম বাগান থেকে ৩ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আমের বাম্পার উৎপাদন ও রপ্তানিতে এ বছর রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার ৩৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। অন্যদিকে দেশ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানির আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।