ঢাকা ০১:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মাধবপুরে অজ্ঞাতনামা যুবকের হত্যার পর্দা উন্মোচন, গ্রেফতার আবুল কালাম Logo সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক Logo নবীগঞ্জে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হলো ৪৫টি ছাগল, সর্বস্ব হারিয়ে বাকরুদ্ধ কৃষক Logo বাবাকে অচেতন করে ছুরি মেরে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার Logo জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কের উপর সন্ত্রাসী হামলা Logo কার ফোন কল পেয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে এয়াপোর্টে ছেড়ে দেওয়া হল ? Logo নবীগঞ্জে গলায় ফাঁস লাগিয়ে এক গৃহবধূর আত্মহত্যা! Logo স্বাধীনতার ঘোষণা’ দিয়েছে বেলুচিস্তান Logo ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি কমিটি অনুমোদন ইঞ্জিনিয়ার খালেদ মাহবুব শ্যামলকে সভাপতি ও সিরাজুল ইসলাম সিরাজ সম্পাদক Logo বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি না, সেটা তো বিএনপির বক্তব্যের বিষয় নয়

সেনাবাহিনীকে হামলার ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিলেন মোদি

কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সশস্ত্র বাহিনীকে হামলার জবাবে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে সেনাবাহিনী এখন নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদি উচ্চপর্যায়ের এক জরুরি বৈঠকে এ ঘোষণা দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অনিল চৌহানসহ অন্যরা।

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, সন্ত্রাসবাদকে চূর্ণ করার জন্য আমাদের জাতীয় সংকল্প অটুট। আমি আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখি।

উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ওই হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। বিশ্লেষকরা এ হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে আখ্যায়িত করছেন। সরকারি সূত্র বলছে, পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সহায়ক সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবত তার বাসভবনে পৌঁছান। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকে দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।

ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে। পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, শুধু পাকিস্তানি হিন্দু এবং দীর্ঘমেয়াদি অনুমোদিত বাসিন্দাদের কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে অবস্থানরত প্রায় ১,০০০ পাকিস্তানি নাগরিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

অতিরিক্তভাবে, ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্দু পানি চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এ চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান যে পানির ৮৫ শতাংশ পেত, তার প্রবাহ এখন ভারতের নিয়ন্ত্রণে। পাকিস্তান এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ বলে মন্তব্য করেছে এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ একাধিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করেছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ পাকিস্তানি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পরবর্তী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদি একাধিক বক্তব্যে বলেন, সন্ত্রাসবাদের মদতদাতাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না। ১৪০ কোটির ভারতের জনগণের ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে। তিনি আরও বলেন, এবার সময় এসেছে সন্ত্রাসের ঘাঁটি চিরতরে ধ্বংস করার। ভারত আর আতঙ্কে ভয় পায় না—আমরা প্রতিটি ষড়যন্ত্রকারীকে খুঁজে বের করব এবং জবাব দেব।

এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা তুঙ্গে। ভারতের কড়া অবস্থান এবং প্রধানমন্ত্রীর সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দেওয়ার বার্তা গোটা অঞ্চলে সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আপলোডকারীর তথ্য

Liton Bin Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

মাধবপুরে অজ্ঞাতনামা যুবকের হত্যার পর্দা উন্মোচন, গ্রেফতার আবুল কালাম

Don`t copy text!

সেনাবাহিনীকে হামলার ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিলেন মোদি

আপডেট সময় ১০:৪৩:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সশস্ত্র বাহিনীকে হামলার জবাবে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে সেনাবাহিনী এখন নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদি উচ্চপর্যায়ের এক জরুরি বৈঠকে এ ঘোষণা দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অনিল চৌহানসহ অন্যরা।

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, সন্ত্রাসবাদকে চূর্ণ করার জন্য আমাদের জাতীয় সংকল্প অটুট। আমি আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখি।

উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ওই হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। বিশ্লেষকরা এ হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে আখ্যায়িত করছেন। সরকারি সূত্র বলছে, পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সহায়ক সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবত তার বাসভবনে পৌঁছান। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকে দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।

ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে। পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, শুধু পাকিস্তানি হিন্দু এবং দীর্ঘমেয়াদি অনুমোদিত বাসিন্দাদের কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে অবস্থানরত প্রায় ১,০০০ পাকিস্তানি নাগরিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

অতিরিক্তভাবে, ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্দু পানি চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এ চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান যে পানির ৮৫ শতাংশ পেত, তার প্রবাহ এখন ভারতের নিয়ন্ত্রণে। পাকিস্তান এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ বলে মন্তব্য করেছে এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ একাধিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করেছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ পাকিস্তানি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পরবর্তী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদি একাধিক বক্তব্যে বলেন, সন্ত্রাসবাদের মদতদাতাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না। ১৪০ কোটির ভারতের জনগণের ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে। তিনি আরও বলেন, এবার সময় এসেছে সন্ত্রাসের ঘাঁটি চিরতরে ধ্বংস করার। ভারত আর আতঙ্কে ভয় পায় না—আমরা প্রতিটি ষড়যন্ত্রকারীকে খুঁজে বের করব এবং জবাব দেব।

এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা তুঙ্গে। ভারতের কড়া অবস্থান এবং প্রধানমন্ত্রীর সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দেওয়ার বার্তা গোটা অঞ্চলে সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।