
বাংলার খবর প্রতিনিধি, লাখাই (হবিগঞ্জ)
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার ৩ নম্বর মুড়িয়াউক ইউনিয়নের বাসিন্দা রুবিনা আক্তার ও তার স্বামী খাইরুল ইসলাম কর্তৃক করা একটি মামলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, গত ৭ জুলাই সোমবার তাদের ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন।
মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন—কামরুজ্জামান মইনুল (৫০), মোজাম্মেল মিয়া (৫৫, প্রবাসী), আহসানুল মিয়া (৪০), নাসির মিয়া (৫০), হাসিম মিয়া (৩০), মুস্তাকিম মিয়া (২৫), রহিম মিয়া (৩০), ফরিদ মিয়া (৫২), কাদির মিয়া (৩২), ছবির মিয়া (৫৫) এবং জাবির মিয়া (৩৪)। মোট ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে কামরুজ্জামান মইনুল, হাসিম মিয়া, মুস্তাকিম মিয়া, কাদির মিয়া ও জাবির মিয়া সেই দিন ঢাকায় অবস্থান করছিলেন বলে দাবি করেছেন। আহসানুল মিয়া ছিলেন ময়মনসিংহে। এমনকি প্রবাসী মোজাম্মেল মিয়াও জানান, তিনি বর্তমানে ছুটিতে দেশে আসলেও ওই দিন কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে তাদের পরিবারের ওপর প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়েছিল, যার প্রেক্ষিতে তারা একটি মামলা করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেই মামলার জবাবে প্রতিহিংসাবশত এই মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
মামলার ১ নম্বর আসামি কামরুজ্জামান মইনুল বলেন, “আমি ঢাকায় দীর্ঘদিন ধরে আছি। মোবাইল ট্র্যাকিং করলেই সত্যতা জানা যাবে। মিথ্যা মামলার মাধ্যমে আমাদের সামাজিকভাবে হেয় করা হচ্ছে।” প্রবাসী মোজাম্মেল মিয়া বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই। আগে আমাদের বাড়িঘরে হামলা হয়েছে। প্রতিশোধ নিতে এখন আমাদের নামে গায়েবি মামলা দিচ্ছে।”
পাশের বাড়ির বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, “আমি ৭ জুলাই সারা দিন গ্রামে ছিলাম। কোনো মারামারি বা ঝগড়ার ঘটনা ঘটেনি।” গ্রামের প্রবীণ মুরব্বি দারগ আলী হাজিও বলেন, “ঘটনার দিন কিছুই হয়নি, সব কিছু মিথ্যা সাজানো।” এলাকাবাসী দুলাল মিয়া, আলী মিয়া, সলিম মিয়া, শাহনুর মিয়া, জমসর আলী, ফরিদ মিয়াসহ অনেকেই জানিয়েছেন, ৭ জুলাই বা তার আশপাশের দিনগুলোতেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তারা মনে করেন, এটি সম্পূর্ণরূপে পরিকল্পিত হয়রানি করার জন্য করা একটি মিথ্যা মামলা।
এলাকাবাসী এই ঘটনায় যথাযথ তদন্ত করে নির্দোষদের রক্ষা এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই গায়েবি মামলার আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ হওয়া উচিত।