
সাগর আহমেদ, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
চার দিনের টানা উত্তেজনার পর অবশেষে নবীগঞ্জে সংঘর্ষে জড়ায় কয়েক হাজার মানুষ। এতে একজন নিহত এবং অন্তত কয়েক শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় শহরের শতাধিক দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কয়েক কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত সোমবার বিকালে আনমনু ও তিমিরপুর গ্রামের দুই পক্ষ পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সংঘর্ষে জড়ায়। উভয় পক্ষের শত শত নারী-পুরুষ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় অংশ নেয়। এতে পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের ফারুক মিয়া (৪২) নামে একজন নিহত হন।
সংঘর্ষের সময় শহরের মধ্যবাজার, হাসপাতাল রোড, মাছ বাজার, ইউনাইটেড হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বাজারে অন্তত ৫০টির বেশি দোকানে লুটপাট ও আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চোরাগুপ্তা হামলা এবং সুযোগসন্ধানী একটি চক্রের পরিকল্পিত লুটপাটে ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে শুরু হওয়া উত্তেজনা শনিবার থেকে রূপ নেয় সহিংসতায়। রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে, দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করে একটি মহল, বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ, আনমনু এলাকা মৎস্যজীবী এবং তিমিরপুর অমৎস্যজীবী অধ্যুষিত হওয়ায় দ্বন্দ্ব আরও গভীর হয়।
একপর্যায়ে সোমবার দুপুরে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ টিম অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এদিকে, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের দুই রাজনৈতিক নেতার মধ্যে সংঘর্ষ থেকে। এরপর পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি ঘটতে থাকে।
নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে এবং শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে।”