
জামালপুরের মাদারগঞ্জে জামালপুর-১ গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খননের কাজ শেষে বাপেক্স পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন শুরু করেছে। ৩১ মে শনিবার দিনগত রাত নয়টার দিকে আগুন প্রজ্জ্বলন করে গ্যাস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাপেক্স কর্তৃপক্ষ।
বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, গ্যাসের মজুদ পর্যালোচনার জন্য ডিএসপি-১ পরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা শেষে এই কূপে কি পরিমাণ গ্যাস রয়েছে তা জানা যাবে।
১ জুন রবিবার বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) দুপুরে জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, রোববার দুপুর ১২ পর্যন্ত কূপটি থেকে ১ হাজার ৪৪১ মিটার মাটির গভীর থেকে ১১৫২ পিএসআই চাপে গ্যাস বের হচ্ছে। তার উপরে আরও একটি স্তর রয়েছে, সেখানেও গ্যাস রয়েছে। এছাড়াও তেল বা কোন পদার্থ রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা শেষে জানা যাবে।
বাপেক্স আরও জানায়, জামালপুর-১ গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খননের কাজ শেষে প্রাথমিক পরীক্ষায় গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। গত ২৪ জানুয়ারি এই কূপ খনন কাজ শুরু করে বাপেক্স। ২ হাজার ৬শ মিটার গভীরতার ৩টি স্তরে ডিএসটির (ড্রিল স্টেম স্টেট) মাধ্যমে সফলভাবে কূপ খনন শেষ হয় গত ১০ মে। শনিবার রাতে অগ্নি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্যাসের সন্ধান পায় বাপেক্স। কূপটিতে ৪০০ বিসিএফ গ্যাস রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। যদি কাংখিত গ্যাস পাওয়া যায় তাহলে এই কূপ থেকে প্রতিদিন ১০ এমএমসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে।
এক্সপ্রেশন ব্লক-৮ এর জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে ১৯৮৪ সালে সংগৃহীত সাইসমিক উপাত্ত থেকে সর্বপ্রথম লিড বা প্রোসপেক্টের ধারনা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ২০১৪-১৫ মাঠ মৌসুমে ওই এলাকায় দ্বিমাত্রিক সাইসমিক জরিপ এবং ২০১৫-১৬ সালে ক্লোজ-গ্রিড সাইসমিক সার্ভে সম্পন্ন করা হয়। ২০১৭ সালে গ্যাস অনুসন্ধান প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। সেই কাজটি পায় আজারবাইজানের প্রতিষ্ঠান সকার। তবে খনন কাজ শেষ না করেই চলে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এমতাবস্থায় দীর্ঘ সাত বছর পর ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি জামালপুর-১ নামে কূপটির খনন কাজ শুরু করে বাপেক্স। তিন মাস কূপ খনন শেষে পরিক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। গ্যাস পাওয়া গেলে আনুমানিক ২৫-৩০ বছর গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে।