
বাংলার খবর ডেস্ক বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে ঘিরে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, সেটির পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের স্বাক্ষর শেষে মঙ্গলবার এই রায় প্রকাশ পায়।
২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর দেওয়া এই রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল এবং গণভোটের বিধান পুনর্বহালসহ পঞ্চদশ সংশোধনীর কয়েকটি ধারা অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
গণতন্ত্রের মৌল কাঠামো পুনর্বহাল করতে নির্দেশ
হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে বলেছে, গণতন্ত্র সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয় না। দলীয় সরকারের অধীনে বিগত নির্বাচনে গণআস্থা ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও রায়ে উল্লেখ রয়েছে।
রায়ে আরও বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সংবিধানে যুক্ত হয়েছিল, যা গণতান্ত্রিক কাঠামোর সুরক্ষা হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।
সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও পক্ষে যুক্তরা এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপি, জামায়াত, ইনসানিয়াত বিপ্লবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষের হয়ে শুনানি করেন খ্যাতনামা আইনজীবীরা।
কোন কোন ধারা বাতিল হলো? হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ অনুচ্ছেদকে সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে ঘোষণা করে বাতিল করেছে। সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ এবং ৪৪(২) ধারা বাতিল ঘোষণা করে বলা হয়েছে, এসব ধারা গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
গণভোট ফেরানোর নির্দেশ
রায়ে বলা হয়েছে, গণভোট সংক্রান্ত বিধান সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে ছিল, যা পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাতিল করা হয়। হাইকোর্ট সেই ধারা পুনর্বহাল করেছে এবং বলেছে, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী সংসদ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।