ঢাকা ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিনটি সন্তান জন্মের পর দিশেহারা এক মা, সাহায্যের অপেক্ষায় অসহায় পরিবার

বাংলার খবর প্রতিনিধি, শেরপুর:
‘সবাই বলে দুইটা বাচ্চা দিয়ে দে, কিন্তু মা হয়ে সন্তান বিক্রি করা কি সম্ভব?’—এই প্রশ্ন করে চোখের জল মুছছিলেন মাত্র ২০ বছর বয়সী নাছিমা আক্তার। সদ্য তিন সন্তানের জন্ম দেওয়া এই মা আজ অসহায়ত্বের চরম সীমায়।

গত ১৪ জুন শেরপুর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম দেন দুই ছেলে ও এক মেয়েসন্তান। নাছিমার স্বামী ঢাকায় রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। সন্তান আসার আগে মাত্র ৫ হাজার টাকা সঞ্চয় করতে পেরেছিলেন। কিন্তু গর্ভে এক নয়, তিন সন্তান থাকার খবর পেয়ে পরিবারে ছড়িয়ে পড়ে উৎকণ্ঠা। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে ধারদেনা করে ৪০ হাজার টাকায় অপারেশন করান তারা। এখন ঋণ আর অনিশ্চয়তায় ভরা জীবনে তিন নবজাতক যেন ভারী হয়ে উঠেছে।

সন্তানদের খাবার, চিকিৎসা ও যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য নেই পরিবারটির। নাছিমা এখন আশ্রয় নিয়েছেন স্বামীর বড় ভাইয়ের ভাঙা ঘরে। নবজাতকদের দাদি খোরশেদা বেগম বলেন, ‘নাতিদের দুধ বা ওষুধ কিছুই জোটে না। মা নিজেই পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহ আলম জানান, ‘একসঙ্গে তিন সন্তান পাওয়াটা যেন এই দরিদ্র পরিবারটির জন্য আশীর্বাদ নয়, বরং অভিশাপ হয়ে উঠেছে। শিশুদের জীবন হুমকিতে পড়তে পারে যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।’

শেরপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, ‘পরিবার চাইলে সরকারি সহায়তায় শেল্টার হোম বা বিকল্প ব্যবস্থার আওতায় আনা সম্ভব। আপনারা বিষয়টি জানালেন, আবেদন পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এই অসহায় মা ও তিন শিশুর পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবান, মানবিক ও সহানুভূতিশীল মানুষদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে এলাকাবাসী। একটু সহযোগিতা পেলে বেঁচে যেতে পারে তিনটি নিষ্পাপ প্রাণ, আবার হাসতে পারে এক মায়ের মুখ।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

error:

তিনটি সন্তান জন্মের পর দিশেহারা এক মা, সাহায্যের অপেক্ষায় অসহায় পরিবার

আপডেট সময় ০৭:৪০:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

বাংলার খবর প্রতিনিধি, শেরপুর:
‘সবাই বলে দুইটা বাচ্চা দিয়ে দে, কিন্তু মা হয়ে সন্তান বিক্রি করা কি সম্ভব?’—এই প্রশ্ন করে চোখের জল মুছছিলেন মাত্র ২০ বছর বয়সী নাছিমা আক্তার। সদ্য তিন সন্তানের জন্ম দেওয়া এই মা আজ অসহায়ত্বের চরম সীমায়।

গত ১৪ জুন শেরপুর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম দেন দুই ছেলে ও এক মেয়েসন্তান। নাছিমার স্বামী ঢাকায় রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। সন্তান আসার আগে মাত্র ৫ হাজার টাকা সঞ্চয় করতে পেরেছিলেন। কিন্তু গর্ভে এক নয়, তিন সন্তান থাকার খবর পেয়ে পরিবারে ছড়িয়ে পড়ে উৎকণ্ঠা। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে ধারদেনা করে ৪০ হাজার টাকায় অপারেশন করান তারা। এখন ঋণ আর অনিশ্চয়তায় ভরা জীবনে তিন নবজাতক যেন ভারী হয়ে উঠেছে।

সন্তানদের খাবার, চিকিৎসা ও যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য নেই পরিবারটির। নাছিমা এখন আশ্রয় নিয়েছেন স্বামীর বড় ভাইয়ের ভাঙা ঘরে। নবজাতকদের দাদি খোরশেদা বেগম বলেন, ‘নাতিদের দুধ বা ওষুধ কিছুই জোটে না। মা নিজেই পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহ আলম জানান, ‘একসঙ্গে তিন সন্তান পাওয়াটা যেন এই দরিদ্র পরিবারটির জন্য আশীর্বাদ নয়, বরং অভিশাপ হয়ে উঠেছে। শিশুদের জীবন হুমকিতে পড়তে পারে যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।’

শেরপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, ‘পরিবার চাইলে সরকারি সহায়তায় শেল্টার হোম বা বিকল্প ব্যবস্থার আওতায় আনা সম্ভব। আপনারা বিষয়টি জানালেন, আবেদন পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এই অসহায় মা ও তিন শিশুর পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবান, মানবিক ও সহানুভূতিশীল মানুষদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে এলাকাবাসী। একটু সহযোগিতা পেলে বেঁচে যেতে পারে তিনটি নিষ্পাপ প্রাণ, আবার হাসতে পারে এক মায়ের মুখ।