
মোঃ শরিফ উদ্দিন বাবু, শেরপুর প্রতিনিধি,জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, কোটা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গড়ে ওঠা গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনা বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন এবং ভারত সরকার আওয়ামী লীগের সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে আশ্রয় দিয়েছে। অথচ সীমান্তে একের পর এক পুশইনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে ভারত সরকারকে জানিয়েছি, সীমান্তে কোনো হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না, কোনো রকম পুশইন মেনে নেওয়া হবে না। যদি পুশইন করতেই হয়, তবে তা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের করুন, শেখ হাসিনাকে করুন। আমরা এদের বিচার চাই, আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাই।”
শেরপুর শহরের থানার মোড়ে এনসিপি আয়োজিত পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও এখনো বিচার হয়নি। আওয়ামী দোসররা প্রশাসনে, পুলিশে সক্রিয় রয়েছে। আমরা গোপালগঞ্জে যেভাবে হামলা হয়েছিল তা ভুলিনি। সারা বাংলাদেশে মুজিববাদের অবশিষ্টকে রুখে দিতে হবে।”
তিনি বলেন, “শেরপুরে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা, নেই মানসম্মত শিক্ষা বা কর্মসংস্থান। আওয়ামী শাসনের নামে লুটপাট হয়েছে, উন্নয়ন হয়েছে কেবল দোসর আর দুর্নীতিবাজদের।”
সভায় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “আগের সরকারের সময়ে সিস্টেম দখল করে ধান্দাবাজরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেছে। অভ্যুত্থানের পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, ফলে তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে।”
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “সংকটকালেই প্রকৃত কর্মীর পরিচয় মেলে। সেলফি তুলে নেতা হওয়া নয়, মাঠে থেকে প্রমাণ দিতে হবে। চাঁদাবাজি করলে যেই হোক, তাকে থানােই দিন—আমাদের দলের হলেও আগে আপ্যায়ন করুন, পরে আইনের হাতে দিন।”
সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন বলেন, “মাইলস্টোন কলেজে আগুনে পুড়ে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনায় এখনো কোনো অগ্রগতি নেই। আমরা জানতে চাই—এই ঘটনার পেছনে কারা জড়িত?”
সভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের নেতাকর্মীসহ জেলা-উপজেলার সক্রিয় সদস্যরা।
পথসভা শুরুর আগে শহীদ মাহবুব চত্বর থেকে পদযাত্রা শুরু হয়, যাতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।