
ঢাকা, ১১ মে:
উপমহাদেশের দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক পূর্ণমাত্রার সংঘর্ষ কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের রূপ নিয়েছে। পেহেলগাম হামলার জেরে শুরু হওয়া এ উত্তেজনা পরিণত হয় সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায়। যদিও শনিবার বিকেল থেকে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এসেছে, তবে এই অল্প সময়ের সংঘাত দুই দেশের সামরিক ও বেসামরিক খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ডেকে এনেছে।
শুরুটা ‘পেহেলগাম হামলা’ থেকে
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ পর্যটকের মৃত্যুর পর ভারতের পক্ষ থেকে দায়ী করা হয় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনকে। ইসলামাবাদ সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও ভারত ৭ মে রাতেই পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে পাল্টা হামলা চালায়, যাকে তারা ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করে।
পুরোদস্তুর যুদ্ধ: হামলা-পাল্টাহামলা
ভারতের ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে পাকিস্তান ১০ মে ভোরে ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’ চালায়, যাতে অন্তত ২০টি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানা হয়। একইসঙ্গে পাকিস্তান থেকে অন্তত ৪০০ সামরিক ড্রোন ভারতে ঢোকে, যার অনেকগুলো বাস্তব ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে বলে দাবি ভারতের।
এই পাল্টাপাল্টি আক্রমণের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে সীমান্ত এলাকাতেও। লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) বরাবর চলতে থাকে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার হামলা, যাতে দুই দেশের সাধারণ মানুষ প্রাণ হারান।
পাকিস্তানের ক্ষতি
ভারতের হামলায় পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, লাহোর, কোয়েটা-সহ পাঁচটি শহরে ব্যাপক ধ্বংস হয়। নিহত হয় ৬৫ বেসামরিক নাগরিক, আহত ২০০’র বেশি। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ১৮ সদস্য নিহত হওয়ার কথা জানানো হয়। এছাড়া ড্রোন ঘাঁটি ও রাডার স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভারতের ক্ষতি
পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ভারতের সামরিক খাতে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। শ্রীনগর ও উধমপুর বিমানঘাঁটিতে ক্ষতি, S-400 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ধ্বংস, এবং কমপক্ষে ৫০ সেনাসদস্য নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া চণ্ডীগড়, পাঠানকোট ও বাথিন্ডা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণে বেসামরিক প্রাণহানিও হয়েছে।
সামরিক-কৌশলগত দিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
দুই পক্ষের সামরিক পরিকাঠামো, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ড্রোন প্রযুক্তি ও রাডার স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘর্ষ দুই দেশের সামরিক ব্যয় এবং নিরাপত্তা কৌশলে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।
যুদ্ধবিরতি এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে। দুই দেশের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের আলোচনার পর শনিবার বিকেল ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
পরিস্থিতি উত্তপ্তই রয়ে গেছে
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও সীমান্তে সেনা মোতায়েন এবং নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘর্ষ ভবিষ্যতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে গেল।
এই ধ্বংসযজ্ঞ ইতিহাসে এক স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা বাস্তবতায় নতুন মাত্রা যোগ করল।