ঢাকা ১১:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo সার পাচারের অভিযোগে লাখাইয়ের কৃষি কর্মকর্তা জ্যোতিলাল গোপের পদাবনতি Logo নিশানের চেয়ারম্যান বেলালসহ কর্মকর্তা গোবিন্দ গ্রেপ্তার Logo মাধবপুরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণীর অনশন Logo বাহুবলে কূপে গ্যাসের সন্ধান, সম্ভাব্য মূল্য ৪৭০০ কোটি টাকা Logo নবীগঞ্জে অবৈধ ব্যাটারি কারখানায় অভিযান, দুই জনকে অর্থদণ্ড Logo লাখাইয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু Logo নবীগঞ্জে ভুয়া ডাক্তার কাজল নাথকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩ মাসের কারাদণ্ড Logo নবীগঞ্জে নিখোঁজের দু’ দিন পর যুবকের লাশ উদ্ধার, মূলহোতা আউয়াল গ্রেফতার Logo সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ Logo মাধবপুরে নিশানের টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ

গোপনে ঢাকামুখী হচ্ছেন আ. লীগের নেতাকর্মীরা, ফের অস্থিরতার আশঙ্কা!

ছবি: সংগৃহীত।

সরকার পরিবর্তনের পর সারাদেশে সহিংসতা, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও হামলার মতো অপরাধ বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে এসব অপরাধের মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকায় জেলার প্রতিটি থানাকে বিশেষ নজরদারির আওতায় এনেছে পুলিশ। এরই মধ্যে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, একটি গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা গোপনে দলবদ্ধভাবে ঢাকামুখী হচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা রাজধানীতে অস্থিরতা তৈরির পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামে সহিংসতা, দখল, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ার সুযোগে সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গণমাধ্যম সূত্র বলছে, এই প্রেক্ষাপটে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিএসবি) থেকে জেলার সব থানায় একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এতে পুলিশ সদস্যদের জন্য আটটি সতর্কতামূলক নির্দেশনা দেওয়া হয়, যার মধ্যে রয়েছে—সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, যাদের নামে মামলা রয়েছে তাদের মোবাইল ট্র্যাক করে অবস্থান শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো এবং নৌঘাট, রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে বাড়তি নজরদারি করা।

এছাড়াও ঢাকামুখী যাত্রা প্রতিহত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি করে উসকানিদাতাদের শনাক্ত করা, অর্থদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভাড়ায় চালিত যানবাহন ও স্ট্যান্ডগুলোতে পর্যবেক্ষণ জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গোয়েন্দা পুলিশের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকায় সমবেত হওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে রাজধানীতে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মোহাম্মদ রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, “সরকার পরিবর্তনের সময় কিছুটা ধাক্কা খেলেও পুলিশের মনোবল এখন পুনরুদ্ধার হয়েছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অপরাধে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।”

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম বলেন, “নগরীতে পুট ও নাইট পেট্রোল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন চেকপোস্ট স্থাপন এবং মিনি টিম গঠন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। যেসব এলাকা অস্থিরতার ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।”

চট্টগ্রাম জেলা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জুনায়েত কাউছার বলেন, “নির্দিষ্ট কোনো চিঠির বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে আমরা নিয়মমাফিক যেকোনো হুমকি বা গুজব পেলে তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিই। পুলিশ সবসময় সতর্ক ও সচেতন রয়েছে।”

রাজনৈতিক অস্থিরতার এই পটভূমিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্ভাব্য সংঘাত মোকাবিলায় নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এখন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

বাংলার খবর
জনপ্রিয় সংবাদ

সার পাচারের অভিযোগে লাখাইয়ের কৃষি কর্মকর্তা জ্যোতিলাল গোপের পদাবনতি

error:

গোপনে ঢাকামুখী হচ্ছেন আ. লীগের নেতাকর্মীরা, ফের অস্থিরতার আশঙ্কা!

আপডেট সময় ০৮:৪০:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

সরকার পরিবর্তনের পর সারাদেশে সহিংসতা, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও হামলার মতো অপরাধ বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে এসব অপরাধের মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকায় জেলার প্রতিটি থানাকে বিশেষ নজরদারির আওতায় এনেছে পুলিশ। এরই মধ্যে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, একটি গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা গোপনে দলবদ্ধভাবে ঢাকামুখী হচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা রাজধানীতে অস্থিরতা তৈরির পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামে সহিংসতা, দখল, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ার সুযোগে সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গণমাধ্যম সূত্র বলছে, এই প্রেক্ষাপটে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিএসবি) থেকে জেলার সব থানায় একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এতে পুলিশ সদস্যদের জন্য আটটি সতর্কতামূলক নির্দেশনা দেওয়া হয়, যার মধ্যে রয়েছে—সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, যাদের নামে মামলা রয়েছে তাদের মোবাইল ট্র্যাক করে অবস্থান শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো এবং নৌঘাট, রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে বাড়তি নজরদারি করা।

এছাড়াও ঢাকামুখী যাত্রা প্রতিহত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি করে উসকানিদাতাদের শনাক্ত করা, অর্থদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভাড়ায় চালিত যানবাহন ও স্ট্যান্ডগুলোতে পর্যবেক্ষণ জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গোয়েন্দা পুলিশের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকায় সমবেত হওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে রাজধানীতে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মোহাম্মদ রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, “সরকার পরিবর্তনের সময় কিছুটা ধাক্কা খেলেও পুলিশের মনোবল এখন পুনরুদ্ধার হয়েছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অপরাধে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।”

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম বলেন, “নগরীতে পুট ও নাইট পেট্রোল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন চেকপোস্ট স্থাপন এবং মিনি টিম গঠন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। যেসব এলাকা অস্থিরতার ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।”

চট্টগ্রাম জেলা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জুনায়েত কাউছার বলেন, “নির্দিষ্ট কোনো চিঠির বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে আমরা নিয়মমাফিক যেকোনো হুমকি বা গুজব পেলে তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিই। পুলিশ সবসময় সতর্ক ও সচেতন রয়েছে।”

রাজনৈতিক অস্থিরতার এই পটভূমিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্ভাব্য সংঘাত মোকাবিলায় নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এখন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।