ঢাকা ০২:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo লাখাইয়ে ৩ টি চোরাই গরু সহ এক চোর আটক Logo পুলিশ হত্যাকারী ফোর্স হতে পারে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম Logo চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবাদলিপি Logo নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা: জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার Logo আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৪০ Logo নবীগঞ্জে মাদকসেবী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন Logo নবীগঞ্জে বিষপানে গৃহবধূর আত্মহত্যা Logo সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর Logo ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করব না- অর্থ উপদেষ্টা Logo জুলাইয়ে বাংলাদেশে হত‍্যাযজ্ঞ হয়েছে, জেনোসাইড হয়নি’-আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম

গোপনে ঢাকামুখী হচ্ছেন আ. লীগের নেতাকর্মীরা, ফের অস্থিরতার আশঙ্কা!

ছবি: সংগৃহীত।

সরকার পরিবর্তনের পর সারাদেশে সহিংসতা, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও হামলার মতো অপরাধ বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে এসব অপরাধের মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকায় জেলার প্রতিটি থানাকে বিশেষ নজরদারির আওতায় এনেছে পুলিশ। এরই মধ্যে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, একটি গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা গোপনে দলবদ্ধভাবে ঢাকামুখী হচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা রাজধানীতে অস্থিরতা তৈরির পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামে সহিংসতা, দখল, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ার সুযোগে সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গণমাধ্যম সূত্র বলছে, এই প্রেক্ষাপটে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিএসবি) থেকে জেলার সব থানায় একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এতে পুলিশ সদস্যদের জন্য আটটি সতর্কতামূলক নির্দেশনা দেওয়া হয়, যার মধ্যে রয়েছে—সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, যাদের নামে মামলা রয়েছে তাদের মোবাইল ট্র্যাক করে অবস্থান শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো এবং নৌঘাট, রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে বাড়তি নজরদারি করা।

এছাড়াও ঢাকামুখী যাত্রা প্রতিহত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি করে উসকানিদাতাদের শনাক্ত করা, অর্থদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভাড়ায় চালিত যানবাহন ও স্ট্যান্ডগুলোতে পর্যবেক্ষণ জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গোয়েন্দা পুলিশের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকায় সমবেত হওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে রাজধানীতে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মোহাম্মদ রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, “সরকার পরিবর্তনের সময় কিছুটা ধাক্কা খেলেও পুলিশের মনোবল এখন পুনরুদ্ধার হয়েছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অপরাধে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।”

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম বলেন, “নগরীতে পুট ও নাইট পেট্রোল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন চেকপোস্ট স্থাপন এবং মিনি টিম গঠন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। যেসব এলাকা অস্থিরতার ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।”

চট্টগ্রাম জেলা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জুনায়েত কাউছার বলেন, “নির্দিষ্ট কোনো চিঠির বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে আমরা নিয়মমাফিক যেকোনো হুমকি বা গুজব পেলে তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিই। পুলিশ সবসময় সতর্ক ও সচেতন রয়েছে।”

রাজনৈতিক অস্থিরতার এই পটভূমিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্ভাব্য সংঘাত মোকাবিলায় নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এখন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আপলোডকারীর তথ্য

Liton Bin Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

লাখাইয়ে ৩ টি চোরাই গরু সহ এক চোর আটক

গোপনে ঢাকামুখী হচ্ছেন আ. লীগের নেতাকর্মীরা, ফের অস্থিরতার আশঙ্কা!

আপডেট সময় ০৮:৪০:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

সরকার পরিবর্তনের পর সারাদেশে সহিংসতা, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও হামলার মতো অপরাধ বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে এসব অপরাধের মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকায় জেলার প্রতিটি থানাকে বিশেষ নজরদারির আওতায় এনেছে পুলিশ। এরই মধ্যে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, একটি গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা গোপনে দলবদ্ধভাবে ঢাকামুখী হচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা রাজধানীতে অস্থিরতা তৈরির পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামে সহিংসতা, দখল, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ার সুযোগে সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গণমাধ্যম সূত্র বলছে, এই প্রেক্ষাপটে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিএসবি) থেকে জেলার সব থানায় একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এতে পুলিশ সদস্যদের জন্য আটটি সতর্কতামূলক নির্দেশনা দেওয়া হয়, যার মধ্যে রয়েছে—সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, যাদের নামে মামলা রয়েছে তাদের মোবাইল ট্র্যাক করে অবস্থান শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো এবং নৌঘাট, রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে বাড়তি নজরদারি করা।

এছাড়াও ঢাকামুখী যাত্রা প্রতিহত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি করে উসকানিদাতাদের শনাক্ত করা, অর্থদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভাড়ায় চালিত যানবাহন ও স্ট্যান্ডগুলোতে পর্যবেক্ষণ জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গোয়েন্দা পুলিশের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকায় সমবেত হওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে রাজধানীতে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মোহাম্মদ রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, “সরকার পরিবর্তনের সময় কিছুটা ধাক্কা খেলেও পুলিশের মনোবল এখন পুনরুদ্ধার হয়েছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং অপরাধে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।”

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম বলেন, “নগরীতে পুট ও নাইট পেট্রোল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন চেকপোস্ট স্থাপন এবং মিনি টিম গঠন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। যেসব এলাকা অস্থিরতার ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।”

চট্টগ্রাম জেলা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জুনায়েত কাউছার বলেন, “নির্দিষ্ট কোনো চিঠির বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে আমরা নিয়মমাফিক যেকোনো হুমকি বা গুজব পেলে তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিই। পুলিশ সবসময় সতর্ক ও সচেতন রয়েছে।”

রাজনৈতিক অস্থিরতার এই পটভূমিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্ভাব্য সংঘাত মোকাবিলায় নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এখন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।