
বাংলার খবর ডেস্ক আইপিএল শিরোপা জয় উদযাপনের সময় চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনে পদদলিত হয়ে ১১ জন মানুষ প্রাণ হারানোর ঘটনায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) বিরুদ্ধে গুরুতর দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের (ক্যাট) দেওয়া প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মর্মান্তিক ঘটনার দায় কোহলিদের দলেরই।
তদন্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ৩ জুন আইপিএল শিরোপা জয়ের একদিন পর বেঙ্গালুরু শহরে একটি উন্মুক্ত উদযাপনের আয়োজন করে আরসিবি। তবে এই আয়োজনের জন্য তারা প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো ধরনের পূর্বানুমতি নেয়নি এবং পুলিশের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয়ও করেনি। হঠাৎ করে সামাজিক মাধ্যমে উৎসবের ঘোষণা দেওয়া হলে জনসমাগম হঠাৎ করে বেড়ে যায়, যা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আয়োজনে তিন থেকে পাঁচ লাখ মানুষের জমায়েত হয়েছিল, যা আরসিবির অব্যবস্থাপনার ফল। পুলিশের পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই এই আয়োজনে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, ১২ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে এত বিশাল জনসমাগম সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। ট্রাইব্যুনাল আরও বলেছে, এত অল্প সময়ে পুলিশের পক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাস্তবসম্মত ছিল না।
এ ঘটনায় আরসিবি, কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা এবং রাজ্য সরকার একে অপরকে দায়ী করতে থাকে। পুলিশ বিভাগ থেকে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়। সেই বরখাস্তের বিরুদ্ধে পুলিশের এক সদস্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করলে পুরো বিষয়টি তদন্তের আওতায় আসে।
ট্রাইব্যুনাল তাদের পর্যবেক্ষণে আরও মন্তব্য করে, “পুলিশ কর্মকর্তারাও মানুষ। তারা জাদুকর নন যে অল্প সময়ের মধ্যে সব পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন।” সকাল থেকে বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে বিধান সৌধ ও চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। ভিড়ের চাপে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে এবং পদপিষ্ট হয়ে ১১ জন প্রাণ হারান।
ঘটনার জেরে আরসিবির কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা গ্রেফতার হন এবং বিষয়টি নিয়ে বিসিসিআইও পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের উদযাপন যেন অনুমতি ছাড়া না হয়, সে জন্য নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।