
নবীগঞ্জে প্রথমবারের মতো ঈদুল আযহা উপলক্ষে শুরু হয়েছে ‘তিনদিনব্যাপী উদ্যোক্তা মেলা ২০২৫’। মঙ্গলবার (২৭ মে) মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রুহুল আমিন।
মেলার ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে শহরের প্রাণকেন্দ্র মিম্বরে টাওয়ারের ৩য় তলায় অবস্থিত ‘বিবিয়ানা রেস্টুরেন্ট’। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে এই মেলা, যা শেষ হবে আগামী ২৯ মে।মেলার আয়োজন করেছে ‘তরুণ উদ্যোক্তা ফোরাম নবীগঞ্জ’। উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে উৎসাহিত করা, স্থানীয় পণ্যের প্রচার এবং আত্মনির্ভরশীলতা গড়াই এর উদ্দেশ্য।মেলায় রয়েছে মোট ১৭টি স্টল। হোমমেড খাবার, ফ্যাশন, মেহেদি ডিজাইন, কেক, গিফট আইটেম, এসব পণ্যে ভরপুর এই মেলা ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে দর্শনার্থীদের মাঝে।
হোমমেড খাবার, কেক ও আচার নিয়ে অংশ নেয়া উদ্যোক্তা মদিনা আক্তার জাকনা বলেন, “যারা মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়, ঘরোয়া পরিবেশে হোমমেড ফুড আইটেম দিয়ে ছোট উদ্যোগ নিতে চায় তাদের জন্য এ ধরনের মেলা খুব বড় সুযোগ। এমন প্ল্যাটফর্ম পেলে আমরাও সমাজে অবদান রাখতে পারি, নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে পারি।”
নকশী কাঁথা ও নারীদের শাড়ি, ড্রেস নিয়ে আসা উদ্যোক্তা শিল্পি তালুকদার বলেন, “নকশী কাঁথা আমাদের সংস্কৃতির একটি অমূল্য সম্পদ। আমি আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যকে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে চাই। এই মেলার মাধ্যমে মানুষের সরাসরি ভালোবাসা ও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে, যা একজন উদ্যোক্তার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।”
মেলায় আশা কলেজ ছাত্র রাজু বলেন, “নবীগঞ্জে এমন আয়োজন আগে কখনও দেখিনি। অনেক কিছু শেখার আছে, কেনাকাটাও সস্তায় করা যাচ্ছে। উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ।”
মেলার আয়োজক কমিটির সোহাগ বলেন, “তরুণরা যেন শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে পারে, সেই স্বপ্ন থেকেই আমাদের এই আয়োজন। সবাই পাশে থাকলে আমরা প্রতি বছর এই মেলার আয়োজন করতে পারবো।”
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছনি আহমেদ চৌধুরী, পজিপ কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ, আনন্দ নিকেতনের সভাপতি জাহাঙ্গির বখত চৌধুরী, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক অর্থ সম্পাদক মো. শওকত আলী, সাংবাদিক সাগর আহমেদ, স্বপন রবি দাশ ও জাবেদ তালুকদারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ইউএনও মোঃ রুহুল আমিন মেলার স্টল ঘুরে দেখেন, উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ দেন। তিনি উদ্যোক্তাদের তৈরি কেকও কিনে তাদের প্রতি উৎসাহ ও সমর্থন জানান।
মেলাশেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইউএনও মোঃ রুহুল আমিন বলেন, “মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের কাজের গুণগত মান চমৎকার। হোমমেড কেক ও নকশী কাঁথা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। উপজেলা প্রশাসন সবসময় তাদের পাশে থাকবে এবং বড় পরিসরে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে।”
এই উদ্যোক্তা মেলাটি নবীগঞ্জের তরুণ সমাজকে স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।