ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আমার লাইসেন্সকৃত বৈধ অস্ত্র আছে” — আসিফ মাহমুদ সজীব Logo নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে, অযথা প্রশ্ন তোলা ঠিক না : আমীর খসরু Logo ৩ আগস্ট ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ইশতেহার পাঠের কর্মসূচি ঘোষণা Logo সব প্রস্তাবে একমত হতে বললে আলোচনায় ডাকা হলো কেন? — প্রশ্ন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের Logo দ্বিকক্ষ সংসদে একমত, তবে ভোটপদ্ধতি নিয়ে মতভেদ Logo বিপিএলের জন্য ছয় বিদেশিকে দলে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল Logo কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১৩ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত Logo পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই: সেনাবাহিনী-র‌্যাব-পুলিশের চিরুনি অভিযানে আটক ১৩ Logo মাধবপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা Logo শেরপুরে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানের বিরুদ্ধে হামলা ও চাঁদা দাবির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ

লাখাইয়ে কৃষি অধিদপ্তরের নির্দেশনা মানছে না হারভেস্টারের মালিকরা

  • পারভেজ হাসান
  • আপডেট সময় ০২:১১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • ৫৯৫ Time View

পারভেজ হাসান লাখাই থেকেঃ 
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন হাওরজুড়েই শুরু হয়েছে বুরো ইরি ধান কাটা। একই সঙ্গে সকল জাতের ধান পাকায় শ্রমিক ও হারভেস্টার যন্ত্রের চাহিদা বেড়ে গেছে।

লাখাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর প্রতি বিঘা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও, সেই নির্দেশনা অমান্য করে স্ব স্ব হারভেস্টার যন্ত্রের মালিকরা অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে কৃষকদের কাছ থেকে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক।

গত দুই দিন,শুক্রবার ও শনিবার,উপজেলার বুল্লার,সিংহ গ্রাম,গোপালপুরের, বিভিন্ন হাওরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হারভেস্টার মালিক পূর্ব বুল্লা গ্রামের জামাল মিয়া, বিঘা প্রতি কৃষকদের নিকট থাকে ২৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা নিচ্ছে। তবে শুধু তিনিই নয় উপজেলার অনেক হারভেষ্টার মালিকগণ অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আবার কিছু হার্ভেস্টের মালিক সরকারি নির্ধারিত মূল্যের ভিতরেই প্রতি বিঘা জমিতে ধান কর্তন করছেন। এ বছর ঠিক মতো বৃষ্টিপাত না হওয়াতে এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।পানির অভাবে হয়নি ঠিক মতো ফসল।তার উপর আবার হারভেস্টার অতিরিক্ত টাকা নেওয়া। দিশেহারা হয়ে পড়ছে কৃষকগন।

উপজেলার ৬নং বুল্লা ইউপির ৮নং ওয়ার্ডের  সাতবিলার হাওরের কৃষক রুস্তম আলী,জনি মিয়া,আজগর আলী,লাখাই  উপজেলার করাব ইউনিয়নের পুর্ব সিংহগ্রামের জমির আলী, হারিছ মিয়াসহ, অনেক কৃষক জানান, এবছর গত বছরের তুলনায় প্রতি বিঘাতে হারভেস্টারের মালিকরা অতিরিক্ত ৪০০থেকে৫০০ টাকা করে বেশি নিচ্ছে। এমনিতেই সঠিক সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ফসল ভালো হয়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান,পূর্ব বুল্লা গ্রামের মৃত আছকির মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া,শামীম মিয়া নামের দুজন ব্যক্তি হারভেষ্টারে ধান কর্তনে বিগাপ্রতি ২ হাজার ৩ শত টাকা করে নিচ্ছে।জামাল মিয়া ও শামীম মিয়া জানান তারা সরকারের নির্ধারিত মূল্য প্রতি বিঘা ১৮০০ টাকা করে ধান কাটতে পারবে না। কৃষক বলেন নিরুপায় হয়ে অনেক অনুনয় বিনয় করে ৬ বিঘা জমি ২২০০ টাকা প্রতি বিঘায় কাটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলো উনারা রাজি হয়নি। 

আরেক কৃষক বলেন,একটি হারভেস্টার যন্ত্র দিনে ৩০ থেকে ৪০ বিঘা জমির ধান কাটতে পারে, বিঘা প্রতি ৭/৮শত টাকার বেশি খরচ হয় না। এই অবস্থায় ১৮শত টাকা নিলেই বহু লাভ হয় তাদের। আর এ ধান উৎপাদনে খরচ বেশি, ২৩০০ থেকে ২৫০০ শত টাকা নিলে , এটি জুলুম হয়ে যায়।

আরেক কৃষক আব্দুল কাদির বলেন,আমি ২৩০০ টাকা প্রতি বিঘা জমির ধান কর্তন করেছি। 

দীর্ঘদিন যাবত হার্ভেস্টার মালিকের দোহাই দিয়ে একটি মহল ইচ্ছে মতো মনগড়া ভাবে অর্থ আদায় করে চলছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকেরা।

উপজেলার অনেক কৃষকেরা জানান, উপজেলা কৃষি অধিদফতর যদি বিষয়টি তদারকি করে, ধান কর্তনে হারভেষ্টার মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাবে, কৃষি অধিদফতরের নির্ধারিত টাকায় ধান কর্তন করতে পারব আমরা।

মুঠোফোনে কথা হলে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্ত হারভেস্টার মালিক পূর্ব বুল্লা গ্রামের জামাল মিয়া ও শামীম মিয়া বলেন, আমরা সরকারি নির্ধারিত মূল্য প্রতি বিঘায় ১৮০০ করে ধান কাটতে পারব না।১ হাজার ৮০০ টাকা সর্বোচ্চ প্রতি বিঘায় সরকার কর্তৃক নির্ধারণ হয়েছে, আপনি ২ হাজার৩০০ টাকা নিচ্ছেন কেন?প্রশ্ন করলে, এমন প্রশ্নের উত্তরে জামাল মিয়া ও শামীম মিয়া  বলেন,আমরা প্রতি বিঘায় ২১০০ টাকা দরে হার্ভেস্টের মালিকের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছি। মালিকের ঠিকানা জানতে চাইলে ওনারা দেননি। শামীম মিয়া বলেন আমাদের হারভেস্ট ফোল পিস, তাই খরচ বেশি হয়।

এ ব্যাপারে লাখাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মিজান বলেন,কম্বাইন্ড হারভেস্টার মালিকদের ধান কর্তনে বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ ১৮ শত টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেটাই চলমান থাকবে। যদি কেউ অতিরিক্ত টাকা আদায় করে প্রমাণ পেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন বিষয়টি কৃষি অফিসার কে অবগত করেন। এবং সেটা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

বাংলার খবর
জনপ্রিয় সংবাদ

আমার লাইসেন্সকৃত বৈধ অস্ত্র আছে” — আসিফ মাহমুদ সজীব

error:

অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ

লাখাইয়ে কৃষি অধিদপ্তরের নির্দেশনা মানছে না হারভেস্টারের মালিকরা

আপডেট সময় ০২:১১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

পারভেজ হাসান লাখাই থেকেঃ 
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন হাওরজুড়েই শুরু হয়েছে বুরো ইরি ধান কাটা। একই সঙ্গে সকল জাতের ধান পাকায় শ্রমিক ও হারভেস্টার যন্ত্রের চাহিদা বেড়ে গেছে।

লাখাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর প্রতি বিঘা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও, সেই নির্দেশনা অমান্য করে স্ব স্ব হারভেস্টার যন্ত্রের মালিকরা অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে কৃষকদের কাছ থেকে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক।

গত দুই দিন,শুক্রবার ও শনিবার,উপজেলার বুল্লার,সিংহ গ্রাম,গোপালপুরের, বিভিন্ন হাওরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হারভেস্টার মালিক পূর্ব বুল্লা গ্রামের জামাল মিয়া, বিঘা প্রতি কৃষকদের নিকট থাকে ২৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা নিচ্ছে। তবে শুধু তিনিই নয় উপজেলার অনেক হারভেষ্টার মালিকগণ অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আবার কিছু হার্ভেস্টের মালিক সরকারি নির্ধারিত মূল্যের ভিতরেই প্রতি বিঘা জমিতে ধান কর্তন করছেন। এ বছর ঠিক মতো বৃষ্টিপাত না হওয়াতে এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।পানির অভাবে হয়নি ঠিক মতো ফসল।তার উপর আবার হারভেস্টার অতিরিক্ত টাকা নেওয়া। দিশেহারা হয়ে পড়ছে কৃষকগন।

উপজেলার ৬নং বুল্লা ইউপির ৮নং ওয়ার্ডের  সাতবিলার হাওরের কৃষক রুস্তম আলী,জনি মিয়া,আজগর আলী,লাখাই  উপজেলার করাব ইউনিয়নের পুর্ব সিংহগ্রামের জমির আলী, হারিছ মিয়াসহ, অনেক কৃষক জানান, এবছর গত বছরের তুলনায় প্রতি বিঘাতে হারভেস্টারের মালিকরা অতিরিক্ত ৪০০থেকে৫০০ টাকা করে বেশি নিচ্ছে। এমনিতেই সঠিক সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ফসল ভালো হয়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান,পূর্ব বুল্লা গ্রামের মৃত আছকির মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া,শামীম মিয়া নামের দুজন ব্যক্তি হারভেষ্টারে ধান কর্তনে বিগাপ্রতি ২ হাজার ৩ শত টাকা করে নিচ্ছে।জামাল মিয়া ও শামীম মিয়া জানান তারা সরকারের নির্ধারিত মূল্য প্রতি বিঘা ১৮০০ টাকা করে ধান কাটতে পারবে না। কৃষক বলেন নিরুপায় হয়ে অনেক অনুনয় বিনয় করে ৬ বিঘা জমি ২২০০ টাকা প্রতি বিঘায় কাটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলো উনারা রাজি হয়নি। 

আরেক কৃষক বলেন,একটি হারভেস্টার যন্ত্র দিনে ৩০ থেকে ৪০ বিঘা জমির ধান কাটতে পারে, বিঘা প্রতি ৭/৮শত টাকার বেশি খরচ হয় না। এই অবস্থায় ১৮শত টাকা নিলেই বহু লাভ হয় তাদের। আর এ ধান উৎপাদনে খরচ বেশি, ২৩০০ থেকে ২৫০০ শত টাকা নিলে , এটি জুলুম হয়ে যায়।

আরেক কৃষক আব্দুল কাদির বলেন,আমি ২৩০০ টাকা প্রতি বিঘা জমির ধান কর্তন করেছি। 

দীর্ঘদিন যাবত হার্ভেস্টার মালিকের দোহাই দিয়ে একটি মহল ইচ্ছে মতো মনগড়া ভাবে অর্থ আদায় করে চলছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকেরা।

উপজেলার অনেক কৃষকেরা জানান, উপজেলা কৃষি অধিদফতর যদি বিষয়টি তদারকি করে, ধান কর্তনে হারভেষ্টার মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাবে, কৃষি অধিদফতরের নির্ধারিত টাকায় ধান কর্তন করতে পারব আমরা।

মুঠোফোনে কথা হলে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্ত হারভেস্টার মালিক পূর্ব বুল্লা গ্রামের জামাল মিয়া ও শামীম মিয়া বলেন, আমরা সরকারি নির্ধারিত মূল্য প্রতি বিঘায় ১৮০০ করে ধান কাটতে পারব না।১ হাজার ৮০০ টাকা সর্বোচ্চ প্রতি বিঘায় সরকার কর্তৃক নির্ধারণ হয়েছে, আপনি ২ হাজার৩০০ টাকা নিচ্ছেন কেন?প্রশ্ন করলে, এমন প্রশ্নের উত্তরে জামাল মিয়া ও শামীম মিয়া  বলেন,আমরা প্রতি বিঘায় ২১০০ টাকা দরে হার্ভেস্টের মালিকের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছি। মালিকের ঠিকানা জানতে চাইলে ওনারা দেননি। শামীম মিয়া বলেন আমাদের হারভেস্ট ফোল পিস, তাই খরচ বেশি হয়।

এ ব্যাপারে লাখাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মিজান বলেন,কম্বাইন্ড হারভেস্টার মালিকদের ধান কর্তনে বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ ১৮ শত টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেটাই চলমান থাকবে। যদি কেউ অতিরিক্ত টাকা আদায় করে প্রমাণ পেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন বিষয়টি কৃষি অফিসার কে অবগত করেন। এবং সেটা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।