ঢাকা ০৫:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo এনসিপি ছাড়লেন শহীদ সাংবাদিক তুরাবের ভাই Logo বিজিবির বিশেষ অভিযানে হবিগঞ্জ সীমান্তে ১০ লাখ টাকার চোরাচালানি পণ্য জব্দ Logo শেরপুরে বাস পুকুরে উল্টে ৩ মাসের শিশুর মৃত্যু, আহত ১৫ Logo জামায়াতকে ’৭১ সালের ভুল স্বীকার করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান শামসুজ্জামান দুদুর Logo আজ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ শুরু: সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা Logo ট্রাম্পের শুল্কের পর মোদি বললেন, ‘চড়া মূল্য দিলেও আপস করব না’ Logo তিন ইউনিয়ন অন্য আসনে, প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়ক অবরোধ Logo মাধবপুরে বাসচাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু Logo মাধবপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৪ Logo তারেক রহমানের নেতৃত্বে বড় বিজয়: বরিশালে সেলিমা রহমানের বক্তব্য

আজ নবীগঞ্জে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন দিবস

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি সাগর আহমেদ: আজ ২২ মার্চ শনিবার নবীগঞ্জে মহান স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস। একাত্তরের আজকের এই দিনে নবীগঞ্জে প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। আব্দুর রউফ তৎকালীন তিতুমীর কলেজের ছাত্রনেতা মহাখালী আঞ্চলিক ছাত্রলীগের সভাপতি এবং স্বাধীন বাংলা ছাত্র পরিষদ মহাখালী আঞ্চলিক শাখার আহবায়ক ছিলেন।

জানা যায়- ১৯৭১ সালের এই দিনে সকাল ১০ টায় নবীগঞ্জের ডাকবাংলো প্রাঙ্গনে তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও মহাখালী আঞ্চলিক ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রউফ সঙ্গীয় সহযোদ্ধা ছাত্রনেতা শাহাবুদ্দিন ও কামাল আহমেদকে সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন।

লোগোর উপরে চাপ দিলেই চলে আসবেন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে,*

ছাত্রনেতা শরিফ নুরুল আম্বিয়ার পরামর্শে গেরিলা যুদ্ধের প্রস্ততি পূর্বে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ নবীগঞ্জে আসেন। তাকে সঙ্গ দেন পরবর্তীতে তিতুমীর কলেজের ভিপি নির্বাচিত হওয়া কামাল আহমেদ ও ছাত্রনেতা মো. শাহাবুদ্দিন। তারা ২০শে মার্চ রাতে নবীগঞ্জ এসে তৎকালীন নব নির্বাচিত এমপি আব্দুল আজিজ চৌধুরীর বাস ভবনে উঠেন। পরদিন ২১শে মার্চ সকালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছাত্রনেতা আব্দুর রউফ পতাকা উত্তোলনের পরিকল্পনার কথা আব্দুল হক চৌধুরীকে অবহিত করলে তিনি তাতে একাত্বতা পোষণ করেন এবং দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ২২শে মার্চ সকাল ১০.০০ ঘঠিকায় নবীগঞ্জ ডাক বাংলো প্রাঙ্গনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।ছাত্রনেতা আব্দুর রউফ পতাকা উত্তোলন কর্মসূচিকে সফল করার লক্ষ্যে মো. বদরুজ্জামান (রাজাবাদ), আব্দুল হান্নান (জিয়াপুর), ছানু মিয়া (নাদামপুর), মোহাম্মদ আলী (বাউসা), আবিদুর রহমান চৌধুরী (চরগাঁও), বশির আহমেদ (বাউসা), মহিবুর রহমান মাশুক(রায়ঘর) ছাত্রদের নিয়ে দিনব্যাপী নবীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন।

২২শে মার্চ ১৯৭১ইং সকালে ডাক্তার মিম্বারুর রহমান চৌধুরী, আলহাজ হীরা মিয়া, আব্দুল হক চৌধুরী, আব্দুস সোবহান মাষ্টার, আব্দুস সালাম, আজিজুর রহমান চৌধুরী ছুরুক মিয়া, চারুচন্দ্র দাশ, এনাম উদ্দিন (ডিলার), রামদয়াল ভট্টাচার্য্য, আব্দুল মতিন চৌধুরী, মিহির কান্তি রায়, আবু সালেহ চৌধুরীসহ নবীগঞ্জের সকল বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। নবীগঞ্জের ছাত্র জনতা, বিশিষ্ট মুরুব্বিয়ানসহ কয়েকশ জনতার উপস্থিতিতে সেদিন ডাক বাংলো প্রাঙ্গণে উড়ন্ত পাকিস্তানি পতাকা ছাত্রনেতা ভিপি কামাল আহমেদ নামিয়ে এনে আগুন ধরিয়ে দেন। ছাত্রনেতা আব্দুর রউফ সংগীয় ছাত্রনেতা শাহাবুদ্দিনকে নিয়ে তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। তখন গণবিদারী জয় বাংলা স্লোগানে চারদিক প্রকম্পিত হয়ে উঠে। নবীগঞ্জ যুগল-কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকবৃৃন্দসহ সাধারণ জনতা এই পতাকা স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। প্রতি বছরই এই দিনটি অনেকটা নীরবে অতিবাহিত হয়। মাঝে মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী তৎকালীন ছাত্রনেতা আব্দুর রউফ উক্ত দিবসটি পালন করে আসছিলেন। উল্লেখ্য- ২০২৪ সালের ১৩ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলার খবর

বাংলার খবর

এনসিপি ছাড়লেন শহীদ সাংবাদিক তুরাবের ভাই

error:

আজ নবীগঞ্জে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন দিবস

আপডেট সময় ০৬:৪৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি সাগর আহমেদ: আজ ২২ মার্চ শনিবার নবীগঞ্জে মহান স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস। একাত্তরের আজকের এই দিনে নবীগঞ্জে প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। আব্দুর রউফ তৎকালীন তিতুমীর কলেজের ছাত্রনেতা মহাখালী আঞ্চলিক ছাত্রলীগের সভাপতি এবং স্বাধীন বাংলা ছাত্র পরিষদ মহাখালী আঞ্চলিক শাখার আহবায়ক ছিলেন।

জানা যায়- ১৯৭১ সালের এই দিনে সকাল ১০ টায় নবীগঞ্জের ডাকবাংলো প্রাঙ্গনে তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও মহাখালী আঞ্চলিক ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রউফ সঙ্গীয় সহযোদ্ধা ছাত্রনেতা শাহাবুদ্দিন ও কামাল আহমেদকে সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন।

লোগোর উপরে চাপ দিলেই চলে আসবেন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে,*

ছাত্রনেতা শরিফ নুরুল আম্বিয়ার পরামর্শে গেরিলা যুদ্ধের প্রস্ততি পূর্বে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ নবীগঞ্জে আসেন। তাকে সঙ্গ দেন পরবর্তীতে তিতুমীর কলেজের ভিপি নির্বাচিত হওয়া কামাল আহমেদ ও ছাত্রনেতা মো. শাহাবুদ্দিন। তারা ২০শে মার্চ রাতে নবীগঞ্জ এসে তৎকালীন নব নির্বাচিত এমপি আব্দুল আজিজ চৌধুরীর বাস ভবনে উঠেন। পরদিন ২১শে মার্চ সকালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছাত্রনেতা আব্দুর রউফ পতাকা উত্তোলনের পরিকল্পনার কথা আব্দুল হক চৌধুরীকে অবহিত করলে তিনি তাতে একাত্বতা পোষণ করেন এবং দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ২২শে মার্চ সকাল ১০.০০ ঘঠিকায় নবীগঞ্জ ডাক বাংলো প্রাঙ্গনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।ছাত্রনেতা আব্দুর রউফ পতাকা উত্তোলন কর্মসূচিকে সফল করার লক্ষ্যে মো. বদরুজ্জামান (রাজাবাদ), আব্দুল হান্নান (জিয়াপুর), ছানু মিয়া (নাদামপুর), মোহাম্মদ আলী (বাউসা), আবিদুর রহমান চৌধুরী (চরগাঁও), বশির আহমেদ (বাউসা), মহিবুর রহমান মাশুক(রায়ঘর) ছাত্রদের নিয়ে দিনব্যাপী নবীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন।

২২শে মার্চ ১৯৭১ইং সকালে ডাক্তার মিম্বারুর রহমান চৌধুরী, আলহাজ হীরা মিয়া, আব্দুল হক চৌধুরী, আব্দুস সোবহান মাষ্টার, আব্দুস সালাম, আজিজুর রহমান চৌধুরী ছুরুক মিয়া, চারুচন্দ্র দাশ, এনাম উদ্দিন (ডিলার), রামদয়াল ভট্টাচার্য্য, আব্দুল মতিন চৌধুরী, মিহির কান্তি রায়, আবু সালেহ চৌধুরীসহ নবীগঞ্জের সকল বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। নবীগঞ্জের ছাত্র জনতা, বিশিষ্ট মুরুব্বিয়ানসহ কয়েকশ জনতার উপস্থিতিতে সেদিন ডাক বাংলো প্রাঙ্গণে উড়ন্ত পাকিস্তানি পতাকা ছাত্রনেতা ভিপি কামাল আহমেদ নামিয়ে এনে আগুন ধরিয়ে দেন। ছাত্রনেতা আব্দুর রউফ সংগীয় ছাত্রনেতা শাহাবুদ্দিনকে নিয়ে তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। তখন গণবিদারী জয় বাংলা স্লোগানে চারদিক প্রকম্পিত হয়ে উঠে। নবীগঞ্জ যুগল-কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকবৃৃন্দসহ সাধারণ জনতা এই পতাকা স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। প্রতি বছরই এই দিনটি অনেকটা নীরবে অতিবাহিত হয়। মাঝে মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী তৎকালীন ছাত্রনেতা আব্দুর রউফ উক্ত দিবসটি পালন করে আসছিলেন। উল্লেখ্য- ২০২৪ সালের ১৩ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ।