বাংলার খবর ডেস্ক আলেম সমাজের মাঝে এমন কিছু মানুষ থাকেন, যাঁদের জীবনের আলো নিঃশব্দে ছড়িয়ে পড়ে শত শত হৃদয়ে। মাওলানা আব্দুল হক (রহ.) ছিলেন ঠিক তেমন একজন আল্লাহভীরু, নিষ্ঠাবান ও খেদমতপ্রিয় আলেম, যিনি পুরো জীবন উৎসর্গ করেছিলেন ইসলামী শিক্ষা, মসজিদ-মাদরাসা এবং উম্মাহর কল্যাণে।
জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি কাটিয়েছেন সবাহী মক্তব ও জামিয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া হলদারপুর মাদরাসায় শিক্ষাদানে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দরস ও তাদরীসের দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেননি। ক্লাস শেষ হওয়ার পরও ছাত্রদের ব্যক্তিগত সমস্যায় পাশে দাঁড়াতেন নিরলসভাবে।
শিক্ষাকে তিনি পেশা নয়, বরং ইবাদত হিসেবে দেখতেন। তাঁর কাছে ছাত্ররা ছিল আমানত, আর শিক্ষা ছিল দায়িত্ব। সহকর্মীদের সাথে আচরণ ছিল সদয়, ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও সহনশীল। মাদরাসার প্রতিটি কাজে—রং-চুন থেকে শুরু করে ছাত্রদের অসুস্থতায় খোঁজখবর পর্যন্ত—তিনি ছিলেন সক্রিয় ও নিবেদিতপ্রাণ।
ইবাদতেও ছিলেন একনিষ্ঠ। জীবনের শেষ দিনেও তিনি যোহরের নামাজ আদায় করেন, এরপরই তিনি পৃথিবী ছেড়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। এমন সুন্দর পরিণতি সেইসব মানুষের জন্যই সংরক্ষিত থাকে, যাঁরা নামাজকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বানিয়ে নিয়েছেন।
তাঁর সততা, বিনয়, ধৈর্য ও প্রজ্ঞা ছিল সমাজের কাছে অনুকরণীয়। স্থানীয়রা তাঁকে "আল্লাহওয়ালা" বলে সম্বোধন করতেন, আর ছাত্রদের কাছে তিনি ছিলেন অভিভাবকতুল্য আশ্রয়স্থল।
আজ মাওলানা আব্দুল হক (রহ.) আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর আদর্শ ও শিক্ষাদর্শ আমাদের পথ দেখায়। তাঁর জীবন প্রমাণ করে, সত্যিকারের সম্মান অর্জিত হয় ইখলাস, খেদমত ও তাকওয়ার মাধ্যমে।
আল্লাহ তাঁর ইবাদত ও খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। আমিন।