বাংলার খবর ডেস্ক ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসের দ্বিতীয়ার্ধে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দলের বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সফরের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে দুই দেশের ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে।
দিল্লির সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে রাজনৈতিক পরিবেশকে অনুকূল মনে করছে না ভারত। এতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে যে শীতলতা বিরাজ করছে, সেটাও এই সফরের ক্ষেত্রে বড় একটি প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, “এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ভারতের ক্রিকেট দল সফরে গেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা যেতে পারে।”
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এই অবস্থায় সফর পেছানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তারা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করেছে এবং সফরটি ২০২৬ সালের আইপিএলের পর করার প্রস্তাব দিয়েছে। বিসিসিআইয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “বাংলাদেশ আর পাকিস্তান এক নয়, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। বিসিবির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এখন যদি কোনো কারণে সিরিজ না হয়, ভবিষ্যতে তা আয়োজন করা যাবে।”
এর আগেও ২০২৪ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভারত সফর করেছিল। তখন ভারতের কিছু উগ্র সংগঠন সিরিজ বাতিলের দাবি তুলেছিল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘#BoycottBangladeshCricket’ হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করেছিল। তবু তখন ভারতের সরকার সিরিজ বাতিল করেনি, কারণ ওই সফরে দুটি টেস্ট ছিল এবং তা না খেললে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এবারের সফরে টেস্ট ম্যাচ না থাকায় এমন চাপ নেই, তাই বিসিসিআই চাইছে সিরিজটি পিছিয়ে দিতে।
এদিকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে নতুন সভাপতি হিসেবে রাজীব শুক্লার নাম উঠে আসছে। তাকে একজন মধ্যপন্থী এবং বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনীতিতে পারদর্শী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বোর্ডের কর্মকর্তারা আশা করছেন, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেটীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
তবে সরকারিভাবে চূড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাবে। দুই দেশের বোর্ডের মধ্যে আলোচনা চলমান রয়েছে। কূটনৈতিক পরিবেশ স্বাভাবিক হলে, ভবিষ্যতে এই সিরিজ আবারও নতুনভাবে আয়োজিত হবে — এমনটাই আশা দুই দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের